কমান্ডাে আক্রমণে পাকফৌজ রণক্লান্ত
মুক্তিফৌজের গেরিলারা পাক সৈন্যদের বিরুদ্ধে নতুন নতুন আক্রমণ পন্থা অবলম্বন করায় পাকসেনারা বিচলিত হয়ে পড়েছে বলে সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে। গেরিলারা তরুণী সেজে ৪/৫ জন এক সাথে কেউ বা ঘাটে জল আনতে যাচ্ছে কেউ বা হয়ত সৈন্যদের নজরে হেঁটে যাচ্ছে। পাঞ্জাবী সৈন্যরা অস্ত্র শস্ত্র রেখে তাদের ধরতে যাচ্ছে অমনি খতম। কেউবা হয়ত মাথায় তরকারী বা ঘাসের ঝুড়ির মধ্যে গ্রেনেড লুকিয়ে ফেরী করতে বেরিয়েছে পাকসেনা দেখতে পেলেই আক্রমণ করে বসছে কখনাে বা রাস্তার ধারের গাছের উপর থেকে গ্রেনেড ছুড়ে মারছে। ভীতসন্ত্রস্ত পাকফৌজ রাস্তার ধারের গাছগুলি কেটে সাফ করতে সুরু করেছে। করিমগঞ্জ সীমান্তে সুতারকান্দির ওপারে পাকসেনারা গ্রামবাসীদের বাধ্য করে বাঁশঝাড়, গাছ প্রভৃতি কাটাতে সুরু করেছে। | বাড়ী-ঘর, স্ত্রী-পুত্র ছেড়ে গত তিন মাস ধরে সুদূর বাংলায় এসে তারা যেভাবে মার খাচ্ছে তাতে তারা স্বভাবতঃই ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে উঠেছে। | অবাঙালী মুসলমান ও শান্তি কমিটীর লােকেরা টাকাকড়ি ও জিনিষপত্র লুঠ করেছিল পাকসরকার তাও বাজেয়াপ্ত করে দিয়েছে। এই সব জিনিষপত্র ১০ দিনের মধ্যে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অন্যথায় ১৪ বছর পর্যন্ত জেল হবে বলে আদেশ দেয়া হয়েছে।
পাকসৈন্যরা লুঠতরাজ করে যে টাকা জমিয়েছিল হঠাৎ ৫০০ টাকা ও ১০০ টাকার নােট বাতিল করে দেয়ায় তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। একজন পাঞ্জাবী মেজর ঢাকার কোন একটা ব্যাঙ্কে ১ লাখ টাকা জমা দিতে গেলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নবগঠিত অল পাকিস্তান রাইফেলস, রাজাকার ও ইষ্ট পাকিস্তান সিভিল আর্মড ফোর্সে বাধ্যতামূলক ভাবে অবাঙালীদের যােগ দেয়ার আদেশ দেয়া হয়েছে। যারা যােগ দিচ্ছে না তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। ফলে তাদের মধ্যে অসন্তোষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সূত্র: দৃষ্টিপাত, ৩০ জুন ১৯৭১