সমগ্র শ্রীহট্ট জেলা মুক্তিফৌজের অধীন
সমগ্র শ্রীহট্ট জেলাটী বর্তমানে পাকসৈন্যদের কবলমুক্ত। লড়াই-এর প্রথমভাগেই মুক্তিসেনারা মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ মহকুমা সম্পূর্ণভাবে দখল করে নিতে সক্ষম হয়। এই সকল মহকুমার অফিস, আদালত, ট্রেজারী প্রভৃতি সবই আওয়ামী লীগের পরিচালনাধীন।
এতদিন পশ্চিম পাক সেনারা শালুটিকর বিমানঘাটী ও খাদিমনগর অঞ্চলে নিরাপদ স্থানে ছাউনী গেড়েছিল। মুক্তিফৌজ বাহিনী চারদিক থেকে ঘিরে ওৎ পেতে বসেছিল। সিলেট শহরে পাক সেনাদের প্রবেশের সুবিধা দেয়ার জন্য মুক্তিফৌজ বাহিনী শহর ছেড়ে নদীর অপর তীরে ওৎ পেতে থাকে। অপরদিকে শালুটিকর ঘাটী ও খাদিমনগর অঞ্চলে মুক্তিফৌজরা প্রচণ্ড আক্রমণ চালায়। আক্রমণের প্রাবল্যে পাকসেনারা ছাউনী ছেড়ে বাইরে চলে আসতে বাধ্য হয় এবং সুরমা নদী পার হওয়ার চেষ্টা করে। মুক্তিফৌজকে বিধ্বস্ত করার চেষ্টায় পাকবাহিনী একসংগে স্থল ও আকাশ পথে তীব্র আক্রমণ চালায়। কিন্তু মুক্তিফৌজ বাহিনী গেরিলা পদ্ধতি অনুসরণ করার ফলে পাক সেনারা বে-কাবু হয়ে পড়ে।
শালুটিকর ঘাটীটী বর্তমানে মুক্তিফৌজের সম্পূর্ণ করায়ত্ত। পাক সেনারা সহরের একাংশে প্রবেশ করতে বাধ্য হয়েছে এবং ফলে মুক্তিফৌজের অনেকটা সুবিধা হয়েছে। সেখানে এখন প্রচণ্ড লড়াই চলছে।
করিমগঞ্জ সিলেট সড়কটীকে বিনষ্ট করে দেওয়ার জন্য পা বাহিনী বােমাবর্ষণ করে।
সমগ্র জেলায় আওয়ামীলীগ বর্তমানে শাসন ব্যবস্থা পরিচালনের ও যােগাযােগ স্থাপনের চেষ্টা করছেন। ইতিমধ্যে প্রায় ৪০ হাজার টাকা ব্যয়ে করিমগঞ্জ সিলেট রাস্তার পুল মেরামতের কাজে তারা হাত দিয়েছেন।
সূত্র: দৃষ্টিপাত, ২১ এপ্রিল ১৯৭১