সমগ্র পূর্ববাংলার জনপদ মুক্তিফৌজের দখলে
বােমাবর্ষণই পাক সৈন্যদের কাজ
(করিমগঞ্জস্থ নিজস্ব সংবাদ দাতার পত্র)
করিমগঞ্জ ১৮ই এপ্রিল মুজিবুর রহমানের মুক্তিফৌজ সারা পূর্ববাংলার পল্লীজনপদ দখল করিয়া লইয়াছে। পশ্চিম পাকিস্থানী সৈন্যরা আত্মরক্ষার জন্য ব্যাস্ত। পাক মিলিটারী কেন্টনমেন্ট গুলিতে পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যরা বন্দীজীবন যাপন করিতেছে। তাহাদের খাদ্যাদি নাই বলিলেই চলে। চট্টগ্রাম হইতে বিমান সাহায্যে তাহাদেরে রেশন সরবরাহ করা হইতেছে।
জনগণ পাকিস্তানী সৈন্যদেরে কোন রকমের সাহায্য দেওয়া দূরে থাকুক, সুযােগমত পাইলেই কাতল করিতেছে, খাসিয়া পাহাড়ে, গারাে পাহাড়ে, মিজোজিলায়, কাছাড়ে ও ত্রিপুরা রাজ্যে বহু পাঠান সৈন্য পলাইয়া গিয়া ভারত সরকারের আশ্রয়ে আছে। ভারত সরকার তাহাদের নিরাপত্তার সকল ব্যবস্থা করিতেছেন। -পাকিস্তানী বিমানবহর কর্তৃক গােলাবর্ষণ চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিমান ঘাটি হইতে প্রায়ই পাকিস্তানী জঙ্গী বিমান পূর্ববাংলার স্থানে স্থানে উড়িয়া গিয়া নিরাপরাধ নিরস্ত্র নাগরিকদের উপর বােমাবর্ষণ করিতে ক্রটি করিতেছে না। বিমান আক্রমণ ছাড়া পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যেরা স্থলপথে কোন রকম হামলা চালাইতেছে বলিয়া কোন খবর পাওয়া যায় না। আশ্রয় প্রার্থীদের আগমন। প্রত্যহ দলে দলে পূর্ব বাংলার নাগরিক ত্রিপুরারাজ্যে, খাসিয়া পাহাড়ে ও আইজলে প্রবেশ করিতেছেন। সরকার ও জনগণ তাহাদেরে আশ্রয় ও খাদ্য দিতেছেন।
করিমগঞ্জ সীমান্তে ৭টি আশ্রয় প্রার্থী শিবির খােলা হইয়াছে। স্থানীয় অধিবাসীরা মনে প্রাণে আশি [তদের সেবা সাহায্য করিতেছেন।
সূত্র: আজাদ, ২১ এপ্রিল ১৯৭১