বাংলাদেশে সরকারী শাসন ব্যবস্থা নেই
কৃষ্ণনগর- জেনারেল টিক্কা খানকে সরিয়ে ডা. এ, এম, মালিককে অসামরিক গভর্ণর নিযুক্ত করে পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে বলে শরণার্থীরা বলেন। বাংলাদেশের স্বাধীন সরকার অবশ্য এটাকে একটা ভাওতা বলে মনে করেন তাদের মতে এটা একটা নিছক ধাপ্পা। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষও তাই ভাবছেন- এ সম্বন্ধে তাদের মধ্যে বিন্দুমাত্র কোন উৎসাহ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। এখানে সদ্য আগত শরণার্থীরা বলেন যে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশে প্রচার করছিলেন যে, খুব শীঘ্রই সামরিক সরকারের অবসান হবে। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে, ঢাকা, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, শ্রীহট্ট, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী এবং রংপুর থেকে যে সমস্ত খবর পাওয়া গেছে, তাতে দেখা যায় যে ঐ সমস্ত জেলার সরকারী অফিস, কাছারি এবং আদালতে শতকরা ২৫ ভাগের বেশী কর্মচারী এখনও কাজে যােগদান করেন নি। জনৈক শরণার্থী বলেন যে ফরিদপুর শহরের আদালতে একজন বিচারকও নেই শুধুমাত্র দুইজন সামরিক অফিসার আদালতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এদের কাছে এখনও বিচারের জন্য কোন মামলা আসে নি। এই অবস্থায় অসামরিক শাসন পুনরায় চালু করার কোন অর্থ নেই- বর্তমান শাসকদের অধীনে আর কখনও অসামরিক শাসন ফিরে আসবে না সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। রংপুর থেকে পাওয়া এক সংবাদে জানা যায় যে সেখানকার সমস্ত বাঙালী ম্যাজিষ্ট্রেট মুন্সেফ এবং জজ পালিয়ে গেছেন। কয়েকজন অবাঙালী অফিসার নিয়ােগ করা হয়েছে বটে, কিন্তু অসামরিক শাসন ব্যবস্থা একেবারেই চালু নেই।
ই,আই,এন,এ
সূত্র: দৃষ্টিপাত, ১৩ অক্টোবর ১৯৭১