You dont have javascript enabled! Please enable it!

বাঙলাদেশ সমন্বয় কমিটী পনেরাে দফা কর্মসূচী গ্রহণ

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে একটা সুনির্দিষ্ট কর্মপদ্ধতির ভেতর দিয়ে সাফল্যের পথে এগিয়ে নেয়ার জন্যে সম্প্রতি এক অধিবেশনে মৌলানা ভাসানীর জাতীয় আওয়ামী দল এবং পূর্ব বাংলার ক্যুনিস্ট পার্টি (সিকদার গ্রুপ) সহ অন্যান্য আটটী বামপন্থী রাজনৈতিক দল সম্মিলিতভাবে বাংলাদেশ জাতীয় মুক্তি সংগ্রাম সমন্বয় কমিটী গঠন করেছেন। বাংলাদেশের কোন এক স্থানে অনুষ্ঠিত কমিটীর প্রথম ৫ দফা কর্মসূচী গ্রহণ করা হয় এবং এই কাৰ্যসূচী রূপায়ণ করতে সকল দলের কাছে আবেদন জানানাে হয়।
কমিটীর অন্তর্ভুক্ত দল সমূহ হচ্ছে কম্যুনিস্ট বিপ্লবীদের পূর্ব বাংলার সমন্বয় কমিটী, শ্রমিক কৃষক কর্মীসংঘ, বাংলাদেশের ক্যুনিস্ট পার্টি (হাতিয়ার গােষ্ঠী), পূর্ব বাংলা কৃষক সমিতি, পূর্ব বাংলা শ্রমিক ফেডারেশন, পূর্ব বাংলা বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়ন এবং বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশন।
জনগণের মধ্য থেকেই গণফৌজ গড়ে তুলতে হবে। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ কৃষকেরাই হবেন গণফৌজের প্রধানতম অংশ। মুক্তিফৌজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যােগাযােগ রেখেই এই গেরিলা যুদ্ধ পরিচালিত হবে।
কমিটীর কর্মসূচীতে আছে গ্রামের রাজনৈতিক, সামাজিক, প্রশাসনিক এবং অন্যান্য সমস্ত দায়িত্বভার গ্রহণের জন্য প্রত্যেক গ্রামে সর্বদলীয় গণমুক্তি পরিষদ গঠন, গ্রাম রক্ষী বাহিনী সংগঠন ও পরিচালনা এবং গণআদালত গঠন করে বিচারের কাজ পরিচালনা করা। অবৈধ সুদের কারবার বন্ধ করা, পাকিস্তানের শাসক চক্রের এজেন্টদের শাস্তি বিধান প্রভৃতিও এই পরিষদের কাৰ্যসূচিতে আছে।
গ্রামাঞ্চলে ছােট ছােট গেরিলা স্কোয়াড করা হবে। সুযােগ অনুসারে শত্রুপক্ষকে উচ্ছেদ ও বিচ্ছিন্ন করে তাদের অস্ত্রাগার দখল করতে হবে।
কর্মসূচীতে আরাে বলা হয়েছে যে, জনসাধারণের আস্থা ও সহানুভূতি লাভের উদ্দেশ্যে গেরিলাদের কর্তব্য হবে মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে জনগণের মধ্যে রাজনৈতিক প্রচার ও জনগণকে সাহায্য এবং রক্ষা করা।

সূত্র: দৃষ্টিপাত, ২১ জুলাই ১৯৭১

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!