You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.07.21 | বাংলাদেশ ও আসামের মুসলমান | আজাদ - সংগ্রামের নোটবুক

বাংলাদেশ ও আসামের মুসলমান

বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও আসামের মুসলমান সমাজ সম্পর্কে কোন কোন সংবাদপত্রে, আলােচনার মাঝেমাঝে বক্র ইঙ্গিত করা হইয়া থাকে।
ইদানিং কলিকাতার “কম্পাস” পত্রিকায় (২৬ শে জুন ৭১ ইং) ডা. শামসুর রহমান নামীয় এক ভদ্রলােকের লিখিত একখানা পত্রের প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকৃস্ট হইয়াছে। ডা. রহমান কোথাকার অধিবাসী তাহা আমাদের জানা নাই। তিনি তাহার লেখায় ইঙ্গিত করিয়াছেন -আসামের মুসলমানদের একাংশ বাংলাদেশের ব্যাপারে নীরব। প্রসঙ্গতঃ তিনি মন্তব্য করিয়াছেন “জমিয়তে ওলামা” এই দল বাংলাদেশের সম্পর্কে সম্পূর্ণ নীরবতা অবলম্বন করছেন। এই অভিযােগ আদৌ সত্য নহে। যদিও “জমিয়তে ওলামা” রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান নহে তবুও এই দল বা দলের কর্মকর্তারা সক্রিয়ভাবে বাংলাদেশের দাবীর ও মুক্তিফৌজের কাজের বিশেষ সমর্থক। প্রাদেশিক জমিয়তে ওলামার সভাপতি মৌলানা আহমদ আলী, সাধারণ সম্পাদক মৌলানা সিকান্দার আলী এবং বহু জমিয়তসেবি গত এপ্রিল মাসের প্রথম হইতেই ভারত সরকারের বাংলাদেশ নীতিতে ও কার্যকলাপে সক্রিয় সমর্থন করিতেছেন এবং সারা আসামে তারা কাজ করিতেছেন।
আসামের সকল রাজনৈতিক দলভুক্ত মুসলমান নেতা এবং কর্মীরা বাংলাদেশের সমর্থনে কাজ করিতেছেন। আসামবাসী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জনাব ফখরউদ্দিন আহমদ, ময়নুল হক চৌধূরী, আসামের মন্ত্রী জনাব আতাউর রহমান, আলতাফ হােসেন মজুমদার, সৈয়দ আহমদ আলী এবং অন্যান্য সকল প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বাংরাদেশের দাবীর সমর্থনে কাজ করিতেছেন। আসামে মুসলিম পরিচালিত সংবাদপত্র “আজাদ”, “বিশ্বদূত” “আলইসলাহ” আগাগােড়াই বাংলাদেশের সমর্থনে কাজ করিতেছে।
আমরা এমন কাহাকেও জানিনা যিনি বা যাহারা বাংলাদেশ বিরােধী বা ভারত সরকারের বাংলাদেশ সংক্রান্ত নীতি-বিরােধী তেমন কোন কাজ করিতেছেন।
আসামে “জামাতে ইসলামী” নামে একটি সংস্থা গৌহাটাতে আছে বলিয়া শােনা যায়। ইহার প্রকৃত কর্মকর্তা কাহারা আমরা জানিনা, ইহাদের কোন কার্যকলাপ সম্পর্কে আমরা সত্যই অজ্ঞ।
এক কথায় বলিতে গেলে আসামের পরিচিত সকল মুসলিম নেতা ও সত্যিকার সকল কর্মী অকুণ্ঠভাবে ভারত সরকারের বাংলাদেশ নীতির সমর্থনে কৰ্ম্মলিপ্ত বলিয়াই আমাদের বিশ্বাস।
যদি আমাদের মধ্যে কোন প্রতিক্রিয়াশীল বা ভিন্ন পথিক থাকেন তবে আমরাও তাহাদের ঘৃণা করি এবং তাহার বা তাহাদের অপরাধ অক্ষমনীয় বলিয়া মনে করি।।
আশা করি আসামের মুসলমানদের ক্রিয়াকলাপ বা আভ্যন্তরীণ অবস্থা না জানিয়া প্রতিকূল মন্তব্য করা বা বিরূপ মনােভাব পােষণ করা নিরপেক্ষ কাহারও উচিত হইবেনা।

সূত্র: আজাদ, ২১ জুলাই ১৯৭১