বাংলাদেশ হইবে ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক দেশ
মুজিবনগর, ২৭ শে জুলাই- বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্বাধীন বাংলাদেশের নীতি ও আদর্শ সম্পর্কে বলেন এই দেশে সকল ধর্মাবলম্বী নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করিবে। ইহা গণতন্ত্রী
মাদশে পরিচালিত হইবে। কোন রাষ্ট্রের তাবেদার না থাকিয়া মিত্রভাবে চলিবে। এইদেশে প্রচুর উৎপন্ন দ্রব্যের ভবিষ্যৎ যেমন উজ্জ্বল তেমনি শিল্পিকরণের সম্ভাবনাও খুব বেশি।
আমদানী রপ্তানী ব্যাপারে কড়াকড়ি হ্রাস পাইবে। ভারত নেপাল বর্মা, সিংহল প্রভৃতি দেশের সঙ্গে লেনদেন কড়াকড়ি হ্রাস পাইবে। লােকজন চলাচলে পাশপোের্ট ভিসা এগুলির বিভীষিকা তেমন কিছু থাকিবেনা।
পশ্চিমবঙ্গ ত্রিপুরারাজ্য, আসাম ও মেঘালয়ের মধ্যে লােকজনের যাতায়াতের বা জিনিসপত্রের লেনদেনে বন্ধুভাব বজায় রাখিয়াই চলার ব্যবস্থা থাকিবে।
বাংলাদেশ অন্য কোন দেশের সঙ্গে যেমন মিলিয়া যাইবেনা তেমনি কোন দেশের সঙ্গে তিক্ততার পথে কাজ করিবেনা। বাংলাদেশবাসীদেরই ভােটে তাহাদের নিজস্ব সরকার গঠিত হইয়া দেশ শাসন করিবে। কৃষি, শিল্প, শিক্ষা সংস্কৃতি এবং উন্নয়নমূলক কাজে এই দেশের সরকার বিশেষ মনােযােগী থাকিবেন।
বাংলাদেশ কৃষি ও শিল্পের সহায়ক পরিবেশ বিশেষ আশাপ্রদ থাকায় পাঁচ বৎসরেই আমাদের এই দেশ। স্বয়ংসম্পূর্ণ হইতে পারিবে।
বাংলাদেশের প্রতিবেশী অঞ্চলগুলির জনগণের সহিত বাংলাদেশের জনগণের বিরােধের কোন কারণ যাহাতে সৃষ্টি না হয় তৎপ্রতি সৰ্ব্বদা লক্ষ্য রাখা হইবে। এই দেশের সকল অধিবাসী সমান সুযােগ সুবিধার অধিকারী থাকিবেন।
দুই বৎসর এর মধ্যেই সৰ্বশ্রেনীণেীর জনগণের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ গণতন্ত্রের সমাজবাদী শাসনতন্ত্র রচনা করতঃ তাহা কাৰ্য্যকরী করিবেন।
সূত্র: আজাদ, ৪ আগস্ট ১৯৭১