You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.07.30 | বাংলাদেশের হালচাল | আজাদ - সংগ্রামের নোটবুক

বাংলাদেশের হালচাল

সারা বাংলাদেশে অরাজকতা বিরাজ করিতেছে। অফিস আদালতের কাজকর্ম বন্ধ, সরকারী কর্মচারীদের শতকরা ৫ জন কার্যক্ষেত্রে নাই। রাস্তাঘাটে বাস, কার এসব চলাচল বন্ধ। মাঝে মাঝে কোন কোন জায়গায় মিলিটারী গাড়ী চলিতে দেখা যায়।
পােষ্ট অফিস, টেলিগ্রাফ অফিসে লােকজনের ভিড় নাই, চিঠিপত্র চলাচল নাই। নদী নালায় দিনে কোন নৌকা চলে না। হাটবাজারে খুব অল্প লােকই চলে। কেরােসিন, চিনি, মিঠা তৈল নাই। ৫ টাকা দিয়াও একসের লবণ মিলে না।। | চিঠিপত্র চলাচল না করায় শুধু মুখে মুখে খবর চলে, সকল খবর বিশ্বাস্য নহে। স্থানে স্থানে মুক্তিফৌজের গেরিলা তৎপরতা দেখা যায়। লােকজন রাস্তাঘাটহীন দূরবর্তী কোন কোন গ্রামে পিপড়ার মত বাস করিতেছে। যাহারা যেখানে আছে তাহারা অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাইতেছে। স্কুল কলেজগুলি বন্ধ। রেল চলাচল এখনও বন্ধ।
মুক্তিফৌজ স্থানে স্থানে নানাভাবে গেরিলাযুদ্ধের প্রস্তুতি চালাইতেছে। চট্টগ্রাম, ঢাকা ও চাঁদপুরে পাকফৌজ চলাফেরা করে।
সারা বাংলাদেশ অনিশ্চিয়তার মধ্য দিয়া চলিতেছে। সরকারী কর্মচারীদের বেতন বন্ধ।
পাকফৌজ স্থানে স্থানে বিমানের সাহায্যে কিছু কিছু আটা, ময়দা, চিনি, ডাল, লবণ কর্মচারীদেরে ও কামদেরে সময় সময় দেয়।
মুক্তিফৌজের ক্রিয়াকলাপ ও গরিলা তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় মুসলীম লীগের গুণ্ডারা আর আগের মত লাফালাফি করিতেছে না। ইতিমধ্যে বহু লীগ গুণ্ডাকে খতম করা হইয়াছে।
পাঠান সেনারা পশ্চিম পাকিস্তানে ফিরিয়া যাওয়ার জন্য বেশ ব্যগ্র হইয়া পড়িয়াছে।
সকলেরই মুখে একই কথা পাঠানরা বাংলাদেশ ছাড়িয়া যাইবেই। যােগাযােগের অভাবে সকল স্থানের সঠিক অবস্থা ও খবর মিলিতেছে না।

সূত্র: আজাদ, ৩০ জুন ১৯৭১