You dont have javascript enabled! Please enable it!

ক্ষমতার পালাবদল মুজিবকে হত্যার পর হত্যাকারীদের একাংশ বেতার কেন্দ্র দখল করে মােশতাক ও সামরিকবাহিনীর নামে ক্ষমতা দখলের ঘােষণা দেয়। আনুষ্ঠানিকভাবে সামরিক আইন। জারি হয় ২০ আগস্ট। ১৫ আগস্টের ঘটনা কোনাে সামরিক অভ্যুত্থান’ ছিলনা। এর সঙ্গে যুক্ত ছিল মাত্র দুটি রেজিমেন্টের (১ম বেঙ্গল ল্যান্সার ও ২য় ফিল্ড আর্টিলারি) অল্পসংখ্যক জুনিয়র অফিসার ও সৈনিকসহ নগন্যসংখ্যক বহিষ্কৃত/অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তি। সামরিকবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকতা বা পুরাে বাহিনী এতে জড়িত ছিল না। অবস্থার চাপে পড়ে ও গৃহযুদ্ধের আশঙ্কায় তারা সেদিন আনুগত্য স্বীকারে বাধ্য হয়েছিলেন। তবে প্রথম সুযােগেই বিমানবাহিনী প্রধান বিবেকের তাড়নায় পদত্যাগ করেন। সেনাপ্রধান ঘাতকদের শাস্তিদানের উদ্যোগ নিয়ে ব্যর্থ হন। ইতােমধ্যে অভ্যুত্থানের সাথে জড়িত বহিষ্কৃত/অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সেনাবাহিনীতে নিয়মিত হিসেবে আত্মীকরণ করা হয় এবং বিভিন্ন ইউনিটে পােস্টিং দেওয়া হয়। কিন্তু নিয়ােগ গ্রহণ করলেও তারা কেউ-ই কোন পােস্টিং গ্রহণ করে নি। ফারুক ও রশিদ অবস্থান করতাে মােশতাকের সাথে বঙ্গভবনে এবং ডালিম, নূর, শাহরিয়ার ও অন্যরা বেতার ভবনে। বঙ্গভবনে ৮টি, সােহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৮টি ও ক্যান্টনমেন্টে ল্যান্সার লাইনে ১২টি ট্যাঙ্ক মােতায়েনকৃত ছিল। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি। সেনাসদর থেকে এক নির্দেশে বঙ্গভবনে তিনটি রেখে বাকী সব ট্যাঙ্ক অবিলম্বে ক্যান্টনমেন্টে ফিরিয়ে আনতে বলা হয়। কিন্তু ৭ দিনের মধ্যেও পালিত না হওয়ায় নির্দেশটি বাতিল করা হয়। এই ছিল শৃঙ্খলার অবস্থা। বিদ্রোহীরা বিশেষ করে ট্যাঙ্ক ও গােলন্দাজ বাহিনী ছিল যাবতীয় আইনের উর্ধ্বে। অধিকন্তু উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ ‘মেজরদের নির্দেশ শুনতে ও মানতে মানতে ক্লান্ত হয়ে পড়ছিল। জেনারেল জিয়াসহ সামরিক বাহিনীর একটা অংশ এ অবস্থা মেনে নেয়। ব্রিগেডিয়ার খালেদ মােশাররফ, ব্রিগেডিয়ার নূরুজ্জামান (রক্ষী বাহিনীর প্রধান), কর্নেল১. অক্টোবরের শেষার্ধে সেনাবাহিনীর প্রমােশন বাের্ড রশিদ, ফারুক ও ডালিমকে লে. কর্নেল র্যাঙ্কে পদোন্নতি দেয়। উল্লেখ্য, উক্ত প্রমােশন বাের্ডের সভায় কর্নেল শাফায়াত জামিল ‘প্রমােশনের পরিবর্তে তাদের বিচারের ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেন এবং মেজর জেনারেল কিউ জি দস্তগীর, ব্রিগেডিয়ার সি আর দত্ত ও কুমিল্লার ব্রিগেড কমান্ডার কর্নেল আমজাদ হােসেন চৌধুরী তা সমর্থন করেন। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য খুনীদের পদোন্নতির পক্ষে মত দেয়। বেতার ভবনে অবস্থানকারীরা বিভিন্ন ব্যক্তিকে ধরে এনে নির্যাতন ও চাঁদা আদায় করতাে।

বলে অভিযােগ পাওয়া যায় শাফায়াত জামিল প্রমুখ যারা তা মেনে নিতে পারেনি তারা ৩ নভেম্বর ১৯৭৫ একটি অভুত্থান ঘটান। অ্যুত্থানকারীদের অন্যতম কর্নেল শাফায়াত জামিলের মতে এর মূল লক্ষ্য ছিল : ক, সেনবাহিনীর চেইন অব কমান্ড পুনপ্ৰতিষ্ঠা করা; খ. ১৫ আগস্টের বিদ্রোহ এবং হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের ব্যবস্থা করা; গ, সংবিধান-বহির্ভূত অবৈধ সরকারের অপসারণ এবং ঘ, একজন নিরপেক্ষ ব্যক্তির অধীনে গঠিত একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাধ্যমে ৬ মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা জনগণের নির্বাচিত সরকারের কাছে হস্তান্তর করা। অভ্যুত্থান সূচনার ইঙ্গিত হিসেবে ২ নভেম্বর রাত তিনটায় বঙ্গভবনে মােতায়েনকৃত ১ম বেঙ্গলের কোম্পানী দুটো ক্যান্টনমেন্টে ফিরে আসে। ‘খুনী মােশতাক-রশিদ চক্রের কবল থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার উদ্দেশ্যে ক্যাপ্টেন হাফিজুল্লাহর নেতৃত্বে সেনাপ্রধান জিয়াকে বাসায় নিরাপত্তা-হেফাজতে রাখা হয়। রেডিও-টিভিতে অবস্থানকারী ২য় ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারির অফিসাররা শাফায়াত জামিলের নির্দেশে ফারুক-রশিদের আনুগত্য ত্যাগ করে রেডিও-টিভি বন্ধ করে দেয়। ৩ নভেম্বর ভােরে (ফাস্ট লাইটে) স্কোয়াড্রন লিডার লিয়াকতের নেতৃত্বে হেলিকপ্টার ও ফাইটার প্লেন আকাশে উড়ে সারাদিন পর্যায়ক্রমে মােতায়েনকৃত ট্যাঙ্কসমূহের উপর আক্রমনের মহড়া চালায়। একই সাথে শুরু হয় টেলিফোনে বঙ্গভবনে অবস্থানকারী রশিদ-ওসমানী-মােশতাকের সাথে খালেদ মােশাররফের বাক-যুদ্ধ। এক রকম বিনা প্রতিরােধে টেলিফোন-যুদ্ধেই খুনীরা পরাজয় মেনে নিয়ে দেশত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করে। তাদের পরাভূত করতে একটি গুলিও খরচ করতে হয়নি।’ ফারুকের ১ম বেঙ্গল ল্যান্সার ব্যতীত অন্য সকল ইউনিট খালেদ-নূরুজ্জামান-শাফায়াতের সাথে যােগ দেয়। ‘সম্ভাব্য গৃহযুদ্ধ, রক্তক্ষয়’ এড়ানাে ও প্রয়ােজনে পরে ইন্টারপােলের সাহায্যে ধরে আনা যাবে বিবেচনা করে খুনীদের দেশত্যাগের ‘সেইফ পেসেজ দেয়া হয়। আর্টিলারির মেজর মহিউদ্দিন ব্যতীত ঘাতকদের ১৭ জন বিমানবাহিনী প্রধান এম. জি. তাওয়াবের ব্যবস্থাপনায় রাত ১১টায় ব্যাঙ্কক অভিমুখে রওয়ানা হয়।৩ কর্নেল শাফায়াত জামিল (অব.) একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, রক্তাক্ত মধ্য আগস্ট ও ষড়যন্ত্রময় নভেম্বর, সাহিত্য প্রকাশ, ঢাকা, ১৯৯৮, পৃষ্ঠা ১২৬ ৩ নভেম্বর দুপুর দুটোর দিকে জিয়া নিজেকে রাজনীতিতে জড়াতে চান না কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন। ক্ষমতা সংহত করার পর জিয়াকে জাতিসংঘে স্থায়ী প্রতিনিধি করে পাঠিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল বলে শাফায়াত জামিল জানান।

জেলহত্যার ঘটনা তখনও জানা যায় নি বলেই খুনীদের দেশত্যাগের অনুমতি দেয়া হয়। কর্নেল শাফায়াতের ধারণা, ১৫ আগস্ট মুজিবকে হত্যার উদ্দেশ্যে আর্টিলারি গান থেকে ৩২ নম্বর রােডের বাড়িতে গােলা ছুঁড়কারী মহিউদ্দিনকে কৌশলগত কারণে দেশে রেখে যাওয়া হয়। উল্লেখ্য, ৭ নভেম্বর এই মহিউদ্দিনের নেতৃত্বে সৈনিকরা জিয়াকে মুক্ত করে ফিল্ড রেজিমেন্টে নিয়ে যায়। খালেদ মােশাররফ একজন নতুন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের আগ পর্যন্ত মােশতাককেই স্বপদে বহাল রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরদিন ৪ নভেম্বর সকালে বর্বর ও নিষ্ঠুরতম জেলহত্যার সংবাদ পাওয়ার পর তাকে অপসারণের জন্য বেলা ১১টার দিকে তিনি বঙ্গভবনে যান। ক্যান্টনমেন্টের ক্ষমতা খালেদ দখল করলেও বঙ্গভবন তখনও মােশতাকের নিয়ন্ত্রণে। চারদিকে নানা গুজব, আশঙ্কা আর উত্তেজনা! সারাদিন হেডকোয়ার্টারে অপেক্ষা করে কোন সংবাদ না পেয়ে সন্ধ্যায় তিনজন অফিসারসহ শাফায়াত জামিল বঙ্গভবনে যান। সেখানে তখন এক উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। শেষ পর্যন্ত জিয়ার পদত্যাগপত্র গ্রহণ ও খালেদকে পদোন্নতিসহ সেনাপ্রধান পদে নিয়োেগদান, সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের বিচারপতি আহসান উদ্দিন চৌধুরী, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি কেএম সােবহান ও বিচারপতি সৈয়দ মােহাম্মদ হােসেন সমন্বয়ে জেলহত্যা তদন্ত কমিশন গঠন এবং রাষ্ট্রপতির পদত্যাগপত্রে মােশতাকের স্বাক্ষরদান সম্পন্ন হয়। এরপর ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ড ও ৩ নভেম্বর জেল হত্যাকাণ্ডের সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযােগে মােশতাককে গৃহবন্দি করে প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুইটে এবং শাহ মােয়াজ্জেম, ওবায়দুর রহমান, তাহের উদ্দিন ঠাকুর ও নূরুল ইসলাম মঞ্জুরকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানাে হয়। জেলহত্যার ঘটনা জেনেও চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ হিসেবে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় ‘ডিসপ্রেসফুল আচরণের জন্য মেজর জেনারেল খলিলুর রহমানকেও গ্রেফতার করা হয়।  ৫ নভেম্বর সারাদিন সিনিয়র অফিসারদের নিয়ে বৈঠক ও নতুন রাষ্ট্রপতির ভাষণের খসড়া নিয়ে আলােচনা ও প্রধান বিচারপতি সায়েমকে রাষ্ট্রপতির পদ গ্রহণে রাজী করানােতেই কেটে যায়।

৬ নভেম্বর দুপুরে সায়েম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন ও জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণদান করেন। ভাষণের মূল বিষয় ছিল সেনাদের ব্যারাকে ফিরিয়ে নেয়া, আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, ১৫ আগস্ট ও ৩ নভেম্বর জেলে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার,৪. প্রধান যে গুজবটি সর্বত্র ছড়ানাে হয়, তা হলাে : খালেদ মােশাররফ ভারতের চর এবং যে কোন। মুহুর্তে ভারত বাংলাদেশ দখল করতে আসছে। গুজবটির ভিত্তি রচনা করেন মােশতাকের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ওসমানী। অক্টোবরের মাঝামাঝি বঙ্গভবনে আহুত সিনিয়র সেনা কর্মকর্তাদের এক কনফারেলে ওসমানী সবাইকে রাষ্ট্রপতি মােশতাক ও তার সরকারের প্রতি অনুগত থাকার নির্দেশ দেন এবং যে কোন রকম অবাধ্যতা সমূলে উৎখাত করা হবে বলে জানান। তিনি এরপর পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন রেজিমেন্টের সিনিয়র জেসিওদের ডেকে নিয়ে বলতে লাগলেন যে, যারা সরকারের বিরুদ্ধাচারণ করবে-তারা ভারতীয় প্ররােচনাতেই তা করবে, তারা সব ভারতীয় এজেন্ট। এসব কথা বলে ১৫ আগস্টের অ্যুত্থান ও হত্যাকাণ্ডের বিরােধীদের প্রতি ভারতের। দালাল লেবেল সেঁটে দেয়া হয় এবং জাসদ তা সর্বত্র প্রচার করে ধূম্রজাল সৃষ্টি করে। বার বার অনুরােধ করা সত্ত্বেও খালেদ রেডিও-টিভিতে ভাষণ দেন নি। তার এক কথা, নতুন প্রেসিডেন্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ভাষণ দেবেন। ৩ দিন ধরে একটানা রেডিও-টিভি বন্ধ থাকায় কী ঘটছে তা মানুষ জানতে পারেনি। এ সুযােগে একদিকে গুজব ‘সত্যে রূপান্তরিত হওয়ার সুযােগ পায় এবং অন্যদিকে বিরােধীরা সংগঠিত হয়৬ মাসের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা ও নিষ্কলুষ-নিরপেক্ষ প্রশাসন গড়ে তােলা প্রভৃতি। এদিন সন্ধ্যার মধ্যে বঙ্গভবন ও সােহরাওয়ার্দী উদ্যানের সব ট্যাঙ্ক ক্যান্টনমেন্টে তাদের ইউনিট লাইনে ফিরে আসে (গােলন্দাজ রেজিমেন্টের কামানগুলাে ৪ নভেম্বরেই লাইনে ফেরত এসেছিল)। রাত সাড়ে ১১টার দিকে বঙ্গভবনে খালেদ এবং নৌ ও বিমান। বাহিনী প্রধানদের এক সভা বসে। প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের পদটির অধিকারী। রাষ্ট্রপতি না সেনাপ্রধান হবেন এই ছিল সভার আলােচ্য বিষয়। নৌ ও বিমান বাহিনী প্রধানদ্বয়ের অভিমত হলাে রাষ্ট্রপতি পূর্বানুরূপ প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক এবং তিন বাহিনী প্রধানগণ উপ-প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হবেন। খালেদের অভিমত হলাে। যেহেতু সামরিক বাহিনীর কার্যকলাপের দায়-দায়িত্ব কার্যত সেনাপ্রধানের উপর বর্তায় সেহেতু এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুবিধার্থে সেনাপ্রধানেরই প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক। হওয়া উচিত।

সভা চলাকালে রাত ১২ টার দিকে ক্যান্টনমেন্ট থেকে ফোনে সিপাহি বিপ্লব শুরু হওয়ার কথা জানানাে হয়। ফলে পদ/ক্ষমতার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে বালখিল্য দর কষাকষি মূলতবী রেখে প্রধানত্রয় বঙ্গভবন ত্যাগ করেন। কর্নেল কে এন হুদা (রংপুরের ব্রিগেড কমান্ডার) ও লে. কর্নেল এটিএম হায়দারকে নিয়ে খালেদ রংপুর ব্রিগেড থেকে আগত ১০তম বেঙ্গলের অবস্থানস্থল শেরেবাংলা নগরে গমন ও রাত্রি যাপন করেন।| ৩ নভেম্বর খালেদের অভুত্থানের পর সেনানিবাসে ফারুকের ল্যান্সার ও রশিদের আর্টিলারিকে নিরস্ত্র করে ব্লক দিয়ে রাখা হয়েছিল। ফারুক-রশিদের দেশত্যাগ ও জিয়া-মােশতাক-ওসমানীর পদত্যাগের কারণে এসব সৈনিক অনিরাপদ বােধ করছিল। সিপাই বিদ্রোহ সংক্রান্ত বামপন্থী জাসদ ও ডানপন্থী মুসলিম লীগের লিফলেট তাদের সাহস সঞ্চারে সহায়ক হয়। প্রধানত পাকিস্তান-প্রত্যাগত সৈনিকরা এ বিদ্রোহে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। রাত ১টার মধ্যেই তারা পুরাে ক্যান্টনমেন্টে ছড়িয়ে পড়ে। নারায়ে তাকবির-আল্লাহু আকবার, সিপাই সিপাই ভাই ভাই-সুবেদারের উপর অফিসার নাই, সিপাই সিপাই ভাই ভাই-অফিসারদের রক্ত চাই, জেনারেল জিয়া জিন্দাবাদ-সিপাই৯. জাসদের গােপন সশস্ত্র শাখা বিপ্লবী সৈনিক সংস্থার পক্ষ থেকে ৫ ও ৬ নভেম্বর ঢাকাসহ বিভিন্ন সেনানিবাস ও শহরে (বিশেষ করে ঢাকা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফুটবল খেলার দর্শকদের মধ্যে) উস্কানিমূলক লিফলেট ছড়ানাে হয়। সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জনের লক্ষ্যে সেনাছাউনিকেন্দ্রিক ১২ দফা দাবি সংবলিত এই লিফলেটে ছড়ানাে হয় ঘৃণা, হিংসা, বিদ্বেষ আর উত্তেজনা। একই সাথে সেদিন মুসলিম লীগের একটি লিফলেটও ঢাকা সেনানিবাসে ছড়ানাে হয়। উল্লেখ্য, ৬ নভেম্বর রাত দশটার দিকে সিপাইদের বিদ্রোহ এবং খালেদ ও শাফায়াতকে মেরে ফেলার নির্দেশ সংক্রান্ত সংবাদ শাফায়াতকে জানানাে হয়। তিন-প্রধানের বৈঠকের এক পর্যায়ে তা খালেদকেও জানানাে হয়। কিন্তু খালেদ বিষয়টিকে গ্রাহ্য করেন নি এবং কোন ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়নি। অপরিণামদর্শীতার এ এক নিদর্শন বৈকি! ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ পাকিস্তানী বাহিনীর আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে জে, নিয়াজিকে এসকর্ট করে নিয়ে।

আসা বীর মুক্তিযোেদ্ধা হায়দার চট্টগ্রামের একটি ব্যাটালিয়নের কমান্ডার ছিলেন। এ সময় সম্ভবত তিনি ছুটিতে ছিলেন এবং ঘটনাচক্রে খালেদের সাথে তার দেখা হয় ও নির্মম হত্যার শিকার হন।বিপ্লব জিন্দাবাদ প্রভৃতি স্লোগান ও এলােপাথাড়ি গুলি ছুড়তে ছুড়তে ঘাতক মেজর মহিউদ্দনের (আর্টিলারি) নেতৃত্বে (মতান্তরে হাবিলদার সারােয়ারের নেতৃত্বে) ১ম  বেঙ্গল ল্যান্সারের একদল সৈন্য জিয়াকে মুক্ত করে ২য় ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারিতে নিয়ে আসে। সেখানে জিয়ার ভারত-বিরােধী উত্তেজনাপূর্ণ বক্তৃতা সিপাইদের আরাে উন্মত্ত করে তােলে। ৭ নভেম্বর সকালে ১ম বেঙ্গল ল্যান্সার ও ২য় ফিল্ড আর্টিলারির একদল সৈন্য এসে ১০ম বেঙ্গলকে বিদ্রোহে যােগ দিতে আহ্বান জানালে এখানেও গােলযােগ ছড়িয়ে পড়ে এবং এক পর্যায়ে ক্যাপ্টেন আসাদ ও ক্যাপ্টেন জলিলসহ কয়েকজন অফিসার ঠাণ্ডা মাথায় গুলি ও বেয়নেট চার্জ করে খালেদ, হুদা ও হায়দারকে হত্যা করে।” | ৭ নভেম্বর এই তিনজনকে হত্যা করা ব্যতীত আর কোন হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেনি। তবে পরদিন ৮ নভেম্বর শুরু হয় সিপাই কর্তৃক অফিসার নিধন যজ্ঞ। খালেদের অ্যুত্থানের সাথে কোন যােগসাজশ না থাকা সত্ত্বেও ক্যাপ্টেন আনােয়ার হােসেন, লে. মুস্তাফিজুর রহমান, মেজর আজিম, ডেন্টাল সার্জন করিম, ডা. চেরি প্রমুখ ১৩ জন অফিসার এবং লে. কর্নেল আবু ওসমান চৌধুরীর স্ত্রীকে খুন করা হয়। সৈনিকদের অরাজকতা এরূপ পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, মাত্র এক-তৃতীয়াংশ অফিসার কোন রকমে তাদের কমান্ড বজায় রাখতে সক্ষম হন এবং অবশিষ্টরা ক্যান্টনমেন্ট ছেড়ে সাধারণ মানুষের বেশে যে যেখানে পারে পালিয়ে প্রাণরক্ষা করেন। এমনকি জিয়া ও অন্যান্যরা ৭ দিন ধরে অফিসের ভেতরেই নাওয়া-খাওয়া-দ্রিার ব্যবস্থা করতে বাধ্য হন। অবশেষে জিয়া যশাের ক্যান্টনমেন্ট থেকে ৭ম, ৯ম, ১১শ ও ১২শ বেঙ্গল রেজিমেন্টের কমান্ডাে দল এনে অফিসারদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেন। বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়ে জিয়া পুনঃ সামরিক ক্ষমতা ফিরে পান। ক্রমে ডেপুটি থেকে ‘চিফ মার্শাল-ল এ্যাডমিনিস্ট্রেটর ও পরে প্রেসিডেন্টের পদ অলঙ্কৃত করেন। তিনি সামরিক আইনকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেন। জিয়া ক্ষমতা হাতে নিয়ে ১৫ আগস্ট ও ৩ নভেম্বরের জেল হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিদেশে বাংলাদেশী মিশনগুলােতে চাকরি দিয়ে পুনর্বাসিত করেন। খুনিচক্র সবসময়ই (চিফ হওয়ার পূর্বেও) জিয়ার আশ্রয়-প্রশ্রয় পেয়েছে। মােশতাক-জিয়া চাকরিচ্যুত ঘাতকদের চাকরিই কেবল ফিরিয়ে দেননি, রাতারাতি প্রমােশন দিয়ে ওদের পুরস্কৃতও করেছেন।

ফারুক-রশিদ দূতাবাসের চাকরি গ্রহণ করেনি বরং ১৯৭৬ সালে গােপনে ডালিমসহ দেশে ফিরে ফারুক সাভার ও বগুড়া এবং রশিদ-ডালিম ঢাকা সেনানিবাসে বিভিন্ন ইউনিটের কমান্ড-কট্রোল হাতে১১ খালেদের নির্দেশে রংপুর ব্রিগেড থেকে দুই ব্যাটালিয়ন সৈন্য ৬ নভেম্বর ঢাকায় আসে। এর একব্যাটালিয়ন শেরে বাংলা নগরে এবং অপরটির কিছু অংশ সাভারে ও বাকী অংশ নগরবাড়ি ঘাটে। অবস্থান নেয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় ওরা ‘কে’ ফোর্সের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করে। কিন্তু এই দশম বেঙ্গলের অফিসারদের হাতেই খালেদ প্রমুখের প্রাণহানি ঘটে।১২. ‘সিপাই বিপ্লব সংঘটন সম্পর্কে জাসদ অধ্যায়ে বিস্তারিত আলােচনা করা হয়েছে ১৩ জিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য পরিশিষ্ট ১২ পড়ুন।করে সাজা দেন, এমনকি খােদ বেঙ্গল লেন্সার ভেঙ্গে দেন। কিন্তু ‘ওই হােতাদের বিরুদ্ধে কোনাে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিয়ে তিনি তাদের আবার বিদেশে পাঠিয়ে দেন। এবংবিধ কারণে কৌসুলী সিরাজুল হক মুজিব হত্যাকাণ্ডে জিয়ার ভূমিকাকে ‘রহস্যজনক বলে মন্তব্য করেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, জে, এরশাদও ক্ষমতা দখল করে ঘাতকদের দ্বিতীয়বার পুনর্বাসন করেন এবং তাদের সাকুল্য বকেয়া বেতন পরিশােধ করেন। অন্য কথায়, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পূর্ব পর্যন্ত সকল সরকারের আমলেই ১৯৭৫-এর ঘাতকরা বিশেষ আনুকল্য পেয়ে এসেছে। যাহােক, সামরিকবাহিনীর অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ ও রাজনৈতিক-উচ্চাভিলাষীপনার সর্বশেষ ছােবল ১৯৮১ সালের ৩১মে’র জিয়া হত্যা। নানা কারণে মঞ্জুর-মতি-এরশাদ সেদিন ক্ষমতা দখল করতে পারেনি। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ দুর্নীতি, নারী-কেলেঙ্কারি, রাষ্ট্রক্ষমতায় সামরিকবাহিনীর হিস্যা দাবি প্রভৃতি কারণে প্রেসিডেন্ট সাত্তার এরশাদকে বরখাস্ত করে। মে. জে. শামসুজ্জামানকে সেনাবাহিনীর প্রধান নিযুক্ত করেন। কিন্তু তৎকালীন বিএনপি সরকারের তথ্যমন্ত্রী শামসুল হুদা চৌধুরি আদেশটি প্রচারের জন্য রেডিও-টেলিভিশনেপাঠিয়ে ‘বােধগম্য কারণে এরশাদের নিকট পাঠিয়ে দিলে এরশাদ ‘রক্তপাতহীন অ্যুত্থান ঘটিয়ে দ্বিতীয়বার সামরিক শাসন জারি ও ক্ষমতা দখল করেন। দুর্ভাগ্য গণতন্ত্র-প্রিয় বাঙালি-জাতির। স্বাধীনতা অর্জনের মাধ্যমে পাকিস্তানি সামরিক-বেসামরিক স্বৈরতন্ত্রের হাত থেকে মুক্তি পেতে না পেতেই শুরু হয়। বাংলাদেশী সামরিক নিষ্পেষণ।

১৯৭৫ ও ‘৮২ দু-বারই সামরিক শাসন জারি হয় বরখাস্তকৃত অফিসারদের (ডালিম ও এরশাদ) দ্বারা। প্রভু নয় বন্ধুর প্রভু আইয়ুব খানের ভাষায়, বৈদ্যুতিক বােতাম টিপলে যেমন হয়, সামরিক আইন ঠিক তেমনিভাবে আসলেও একে তাড়ানাে খুবই কঠিন ব্যাপার। বহু কাঠ-খড় পুড়িয়ে, রক্ত-অশ্রু বিসর্জন দিয়ে ১৯৯০ সালে সভ্য মানুষের (সিভিল) অভ্যুত্থান ঘটিয়ে সামরিক শাসন দূরীভূত করা হয়েছে। তবে এ ‘ভূত’ সত্যিই দূর হয়েছে-না কার্পেটের নিচে গা-ঢাকা দিয়ে আছে, তা নিশ্চয় করে বলা মুশকিল। জেল হত্যাকাণ্ড ক্ষমতা দখলের পর মােশতাক ‘হিসেব কষে দেখলেন যে, আসল হুমকি-সেনাবাহিনীকে বাদ দিলে, আসছে তারই পুরনাে পার্টি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে। তাই তিনি বিলম্ব না করে তার সকল সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বিকে সরিয়ে দেয়ার ধূর্ত ও ভয়ঙ্কর পদক্ষেপ’র সূচনায় মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রী চতুষ্ঠয় নজরুল, তাজউদ্দিন, মনসুর ও কামারুজ্জামানকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠিয়ে দেন। এঁদের খুন করার কারণ। ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফারুক বলে যে, শেখ মুজিবকে ওরা যেভাবে উৎখাত করেছে,১৫. সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে জারি করা এক ফরমানে বলা হয়, যদি কোন ব্যক্তি দুর্নীতি করে, এমনকি তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোেগও ওঠে (রিপুটেড টু বি করাপ্ট) তাহলে তাকে বিচারপূর্বক মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে। সম্ভবত এজন্যই শেষ সাক্ষাৎকারে স্ত্রী জহুরাকে তাজউদ্দিন। বলেছিলেন, ‘পরিস্থিতি খুবই খারাপ। আমার মনে হয় না যে, জীবিত অবস্থায় আমরা কোনদিন জেল থেকে বের হতে পারবসেভাবে খােন্দকার মােশতাকওতাে উৎখাত হতে পারে। ঐ অবস্থায় ভারতের সহায়তায় কোন পাল্টা অভ্যুত্থান ঘটে গেলে, জেলের চার নেতার যে কোন একজনকে টেনে এনে পাল্টা সরকার গঠনের ব্যবস্থা করা হবে। সুতরাং তাদেরকে সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করাটাই নিরাপদ। তাই তারা সিদ্ধান্ত নেয়, মােশতাককে হত্যা করা হলে বা কোন পাল্টা অভ্যুত্থান ঘটলে অবিলম্বে শূন্যতা পূরণের জন্য প্রধান বিচারপতিকে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়াতে হবে এবং জেলে অবস্থানরত চার নেতাকে হত্যা করতে হবে। হত্যা করার দায়িত্ব দেয়া হয় রিসালদার মুসলেহ্ উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন ফাস্ট বেঙ্গল ল্যান্সারের একটি বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জল্লাদ বাহিনীর (হাস্টর কিলার টিম) উপর। পরিকল্পনাটি সময়মত তাৎক্ষণিক ও স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকরী হওয়ার উপযােগী করে তৈরি করা হয়।

বাস্তবে হয়েছিল তাই। খালেদের অভ্যুত্থান শুরু হতেই জল্লাদ বাহিনী জেলগেটে পৌছে যায়।| মােশতাক, ওসমানী, খলিল, ফারুক ও রশিদের ‘পঞ্চায়েত’ অক্টোবরের শেষ দিকে একটি আসন্ন অ্যুত্থান সম্পর্কে মােটামুটি নিশ্চিত হয়। সেটা জিয়া না খালেদের পক্ষ থেকে-তা নিয়ে মােশতাক ও রশিদ ২ নভেম্বর গভীর রাত পর্যন্ত পর্যালােচনা করেন। কিন্তু ততক্ষণে খালেদের নেতৃত্বে অভ্যুত্থান শুরু হয়ে যায় এবং এর প্রতিফলন স্বরূপ বঙ্গভবনে ‘একদিকে টেলিফোন বাজছে, অন্যদিকে নির্দেশের পর নির্দেশ জারি হচ্ছে। লােকজন খবর নিয়ে উভ্রান্তের ন্যায় ছুটাছুটি করছে। ভাের ৪টা বাজার একটু পর ঐ বিশৃঙ্খল অবস্থার মাঝেই বেজে উঠা ফোনের রিসিভার উঠিয়ে ভারী কণ্ঠে ‘আমি ডিআইজি-প্রিজন কথা বলছি, মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলাপ করতে চাই’ শুনতে পেয়ে রশিদ ফোনের রিসিভারটি মােশতাকের হাতে দেয়। মােশতাক কিছুক্ষণ ধরে কেবল হা, হা করতে থাকেন। তার কথা পরিষ্কার বুঝা না গেলেও যে-কোন ব্যাপারেই হােক তিনি সম্মতি জ্ঞাপন করছিলেন-এতে আর কোন সন্দেহ ছিল না। অন্য একটি সূত্রমতে, ফোনে তিনি জেলারকে বলেন, “আমি খােন্দকার মােশতাক বলছি, ওদের আমি পাঠিয়েছি। ওরা যা করতে বলছে- তাই করুন।” এরপর ডিআইজি জনাব আউয়াল ঘাতক মুসলেহ উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন চার কালাে পােশাকধারীদের জেলের ভেতর প্রবেশের অনুমতি দেন। তারা পাশের একটি সেল থেকে কামারুজ্জামান ও মনসুর আলীকে নজরুল-তাজউদ্দীনের সেলে এনে একত্র করে খুব কাছে থেকে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের গুলিতে নৃশংসভাবে খুন করে। তাদের কেউ কেউ। সাথে সাথেই মারা যান, কেউ কেউ কিছুক্ষণ অস্ফুট কণ্ঠে পানি পানি বলে মর্মভেদী। আর্তনাদ করে করে নিস্তেজ হয়ে অনন্ত তৃষ্ণা নিয়ে ধীরে ধীরে মারা যান।১৫. অ্যান্থনি ম্যাসাকারনহাস, বাংলাদেশ : রক্তের ঋণ, পূর্বোক্ত, পৃষ্ঠা ৯৪ ১৬. অ্যান্থনি ম্যাসকারনহাস, বাংলাদেশ : রক্তের ঋণ, পূর্বোক্ত, পৃষ্ঠা ১০৬ অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, জেল হত্যাকাণ্ড, জ্ঞানকোষ প্রকশানী, ঢাকা, ১৯৯১, পৃষ্ঠা ২৮ ক্ষমতার পালাবদল৩ নভেম্বর সকাল ১০টার দিকে পুলিশের আইজি বঙ্গভবনে ফোন করে জেনারেল খলিলকে জেলহত্যার সংবাদ জানালে সাথে সাথে তিনি প্রেসিডেন্টের সেক্রেটারি মাহবুবুল আলম চাষীকে ঘটনাটি প্রেসিডেন্টকে জানাতে বলেন। শুনামাত্রই চাষী। প্রেসিডেন্টের রুমে যান এবং এক মিনিটের মধ্যেই ফিরে এসে বলেন, তিনি তা জানেন।

সূত্র : বাংলাদেশের রাজনীতি ১৯৭২-১৯৭৫ – হালিমদাদ খান

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!