পাকসেনাদের দ্বারা শত শত মেয়ে অপহরণ ও ধর্ষণ
গত সােমবার হীরামিয়া নামে একটী ম্যাট্রিক পরীক্ষার্থী ছেলে সিলেটের শালুটিকর পাকসেনা শিবির থেকে পালিয়ে করিমগঞ্জে এসে হাজির হয়। তার কাছ থেকে একটা রােমাঞ্চকর ঘটনার বিবৃতি পাওয়া যায়।।
১৩ই মে বৃহস্পতিবার শহরের শিবগঞ্জ থেকে পাকসেনারা ছেলেটিকে ধরে মুসলিম লীগ গুণ্ডা তেরা মিয়ার বাসায় নিয়ে যায়। তেরা মিয়া তাকে খুবই গালাগাল দেয়। সেখান থেকে ছেলেটিকে শালুটিকর বিমান ঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার বয়সের আরাে বহু ছেলেকে সে দেখতে পায়। তাকে এবং অন্যান্য ছেলেদেরকে দিয়ে মােটর পাটর্স ও অন্যান্য কলকজা এরােপ্লেনে বােঝাই দেওয়া হয়।
স্থানীয় একটা আবাসিক স্কুলে সেনা নিবাসের সংগে তাকে রাখা হয়। সেখানে শতাধিক যুবতী মেয়ে ও বহু ছেলেকে সে দেখতে পায়। ছেলেদেরকে ও তাকে খুব মারধর করা হয়। মেয়েদের উপর প্রকাশ্যভাবেই অকথ্য অত্যাচার করা হয় বলে ছেলেটী বিবৃত করে। একজন অফিসার ছেলেটাকে মারধর করে বলে “হাম। কুত্তা মারেগা তুম হিসাব লিখাে।” কতক্ষণ পর এসে বলে ‘একঠো মারা হ্যায় লিখাে। আরাে কতক্ষণ পরে এসে আবার বলে। এই ভাবে ১৩টি লিখানাের পর ছেলেটি আর সহ্য করতে পারেনা। সে পালানাের পথ খুঁজতে থাকে। এবং পায়খানা করার ছলে প্রায় ৪ মাইল রাস্তা দৌড়ে পালিয়ে আসে। নদী পার হয়ে একটি বাসে করে রান্ধা পর্যন্ত আসে। এখানে উল্লেখযােগ্য যে সমগ্র সদর মহকুমায় পাক সেনারা মাত্র দুইখানি বাস চালাতে সক্ষম হয়েছে। রান্ধা থেকে ছেলেটা ফাড়ি পথ দিয়ে করিমগঞ্জ চলে আসে।
সূত্র: দৃষ্টিপাত, ১৯ মে ১৯৭১