You dont have javascript enabled! Please enable it! বৃটিশ এম. পি. ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের অবদান - সংগ্রামের নোটবুক

বৃটিশ এম. পি. ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের অবদান

পাকিস্তানের নির্বাচিত পার্লামেন্ট বাতিল, সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা শেখ রহমানকে গ্রেফতার এবং ২৫ মার্চ রাত থেকে বাংলাদেশে পাকিস্তান সামরিক না জঘন্যতম গণহত্যা পরিচালনার পর থেকে বৃটিশ এম, পি, ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ পাকিস ঘূন্য কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ এবং বাঙালীদের প্রতি সমর্থনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসেন মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বিলাতে বাংলাদেশ আন্দোলনে সমর্থন এবং বৃটিশ হাউজ অফ কমনসে (বৃটিশ পার্লামেন্টে) পার্লামেন্ট সদস্যদের ভূমিকা বাংলাদেশে মুক্তিযােদ্ধাদের কলেজে অনুপ্রাণিত এবং বিলাতে আন্দোলনরত বাঙালীদের করেছে উৎসাহিত । বৃটিশ পার্লামেন্টে বিরােধী দল-শ্রমিক দল (Labour Party) এর নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী হ্যারল্ড উইলসন এবং পার্টির চেয়ারম্যান ইয়ান মিকার্ডোসহ প্রায় সকল এম, পি, বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ সমর্থন করেন। লিবারেল পাটির সকল এম. পি. বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নেন। কিছুসংখ্যক সরকার দলীয় রক্ষণশীল দল (Conservative Party) এর এম. পি. বৃন্দও পাকিস্তান সামরিক সরকারের বর্বরতার সমালােচনা এবং বাঙালীদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের পক্ষে কথা বলেছেন। এছাড়া বিশিষ্ট বৃটিশ বুদ্ধিজীবী, অধ্যাপক ও বিশেষ করে সাংবাদিকদের বাংলাদেশকে সমর্থন করে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ, প্রচার কাজে অংশগ্রহণ এবং মূল্যবান লিখনীর মাধ্যমে বিশ্ব জনমত সৃষ্টিতে অবদান রেখেছেন। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর সময় থেকে প্রবাসী বাঙালীদের কাছে অতিপ্রিয় একটি নাম পূর্ব লন্ডনের ষ্টেপনি থেকে নির্বাচিত শ্রমিক দলীয় এম. পি. পিটার শাের। তিনি পার্লামেন্টে এবং পার্লামেন্টের বাইরে বাঙালীদের প্রতিনিধির মতাে বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করে প্রবাসীদের প্রশংসা অর্জন করেছিলেন। বাংলাদেশে পাকিস্তান সেনাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের উদ্দ্যোগে ২৮ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত ১০ নং জাহান স্ট্রীটের সামনে যে অনশন ধর্মঘট চলছিল সে স্থানে পিটার শাের অন্য একজন এম. পি. ব্রুস ডগলাস-ম্যান সহ উপস্থিত হয়ে অনশনকারী ছাত্রদের প্রতি সমবেদেনা প্রকাশ করেন। ধর্মঘটস্থলে এসে তিনি পূর্ববঙ্গে’ সংঘটিত গণহত্যার নিন্দা করেন এবং বাঙ্গালীদের ন্যায্য দাবির পক্ষে অবস্থান গ্রহণের কথা বলে তিনি বাঙালীদের সমর্থক একজন এম. পি. হিল। আত্মপ্রকাশ করেন। ৪ এপ্রিল ‘হ্যামস্টেড টাইন হলে’ পূর্ববঙ্গে গণহত্যার প্রতি গণসমাবেশে বক্তব্য রাখার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বৃটেনের বাঙালীদের আলো” আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পৃক্ত হন। এরপর থেকে লন্ডনে এমন কোন জনসমাবেশ ২৯ “”) যেখানে পিটার শাের এর সক্রিয় উপস্থিতি ছিল না। যত ব্যস্ততাই থাকুক না কেন বাংলাদেশ 

বিলাতের সংবাদপত্রগুলাে বরাবরই পূর্ববঙ্গের’ জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের পক্ষ সমর্থন করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধকে অনুপ্রাণিত করেছে। লন্ডন কে প্রকাশিত পত্র-পত্রিকার ইতিবাচক ভূমিকার জন্য বিলাতের এবং সারা বিশ্বের জনমত বাংলাদেশের পক্ষে প্রভাবান্বিত হয়েছে । এই সকল পত্রিকার সাংবাদিকবৃন্দ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পূর্ববঙ্গ থেকে বস্তুনিষ্ঠ খবর পরিবেশন করে বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে বিশাল অবদান রেখেছেন। বিশ্ব জনমত সৃষ্টিতে বৃটেনের পত্র-পত্রিকা এবং তাদের সাংবাদিকদের ভূমিকার কথা গ্রন্থের ১০টি অধ্যায়ে বিস্তারিতভাবে আলােচনা করা হয়েছে। তারপরও যে কয়েকজন স্বনামধন্য সাংবাদিকদের নাম উল্লেখ না করলে কৃপনতা করা হবে তাঁরা হলেন “দি সানডে টাইমস” এর এথেনী মাসকারেনহাস, ডেভিড হােল্ডেন, কলিন স্মীথ, নিকোলাস টমালিন, মুরে সায়েল; “দি ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকার সায়মন ড্রিংগ (পরবর্তিতে দি টাইমস), ডেভিড লােশাক, মিস ক্লেয়ার হােলিংওয়ার্থ, কেনেথ ক্লার্ক, ‘দি গার্ডিয়ান’ পত্রিকার পিটার প্রেসটন (সম্পাদক), মার্টিন এ্যাডনি, মার্টিন ওলাকোট, সায়মন উইনচেষ্টার, লরেন স্টার্ন; ‘দি টাইমস’ পত্রিকার পিটার হেজেল হাট; ‘এসেসিয়েটেড প্রেস’ এর ডেনিস নিৰ্ড ও ফটো সাংবাদিক মাইকেল লরেন্স; ‘দি অবজারভার’ পত্রিকার কলিন স্মীথ এবং বি,বি,সি বাংলা বিভাগের সিরাজুর রহমান, শ্যামল লােধ ও কমলবােস প্রমুখের নাম উল্লেখযােগ্য।