বাংলাদেশ ফান্ড
বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার সাথে সাথেই বিলাতের প্রবাসীরা বিভিন্ন শহরে নিজস্ব উদ্যোগে সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রচারকার্য পরিচালনার পাশাপাশি অর্থ। সংগ্রহ শুরু করে। সময়ের অভাবে বা পেশাগত কারণে যারা সংগ্রাম পরিষদের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত হতে সমর্থ হয়নি তারা সংগ্রাম পরিষদ পরিচালনার জন্য অর্থ দিয়ে অংশগ্রহণ করাকে তাদের পবিত্র দায়িত্ব মনে করেছে। তাই শুরু থেকেই সংগ্রাম পরিষদসমূহকে কোন আর্থিক সমস্যার মােকাবিলা করতে হয়নি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে বিদেশে প্রচার ও সংগৃহীত অর্থ সুচারুভাবে পরিচালনা ও সমন্বয় সাধনের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় কমিটির সাথে সাথে একটি কেন্দ্রীয় ফান্ড সৃষ্টির প্রয়ােজনীয়তা দেখা দেয়। এই দায়িত্ব স্বাভাবিকভাবেই কেন্দ্রীয় স্টিয়ারিং উপর অর্পিত হয়। | এপ্রিল মাসে কভেন্ট্রিতে সম্মেলনের মাধ্যমে ষ্টিয়ারিং কমিটি গঠনের অব্যবহিত পরেই ষ্টিয়ারিং কমিটি এক সভায় “বাংলাদেশ ফান্ড” নামে একটি কেন্দ্রীয় ফান্ড গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সভায় উক্ত ফান্ড গঠনের দু’টি লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয় : (ক) ষ্টিয়ারিং কমিটির মাধ্যমে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের জন্য অর্থ সংগ্রহের সমুদয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সকল সংগ্রাম পরিষদ কর্তৃক সংগৃহীত অর্থের সমন্বয় সাধন করা। (খ) ফান্ডের অর্থ মুক্তিসংগ্রামের স্বার্থে একটি ট্রাষ্টি বাের্ডের মাধ্যমে ট্রাস্টি বাের্ড যেভাবে ভাল মনে করেন সেভাবে সময়ের চাহিদাকে লক্ষ্য রেখে খরচের ব্যবস্থা করা। উপরােক্ত দুটো উদ্দেশ্য সামনে নিয়ে প্রথমে হাজ ব্যাংকে এবং পরে ন্যাশনাল ওয়েষ্ট মিনিষ্টার ব্যাংকে “বাংলাদেশ ফাণ্ডের দুটো একাউন্ট খােলা হয় । এই মর্মে বিলাতে প্রবাসী বাঙালীদেরকে প্রচারপত্র ও পত্রিকা মাধ্যমে অবহিত করা হয়। বাংলাদেশ ফান্ডের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার জন্য বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী, জন ষ্টোন হাউজ এবং ডােনাল্ড চেসওয়ার্থকে সদস্য নিয়ােগ করে একটি ট্রাষ্টি বাের্ড গঠন। করা হয় । ট্রাষ্টি বাের্ডের তিন সদস্যের মধ্যে ষ্টিয়ারিং কমিটির উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ সরকারের বৈদেশিক প্রতিনিধি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী বাঙালীদের পক্ষ থেকে বাের্ডে প্রাতনিধিত্ব করেন। অপর দুই সদস্যের মধ্যে জন ষ্টোন হাউজ একজন লেবার দলীয় । প্রভাবশালী এম. পি ও প্রাক্তন মন্ত্রী ছিলেন এবং ইতােপূর্বে বাংলাদেশের পক্ষে পার্লামেন্টে ও বাহিরে ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। ডােনাল্ড চেসওয়ার্থ বৃটেনের প্রতিষ্ঠিত ‘ওয়ার অন্ ওয়ান্ট’। নামে একটি এন, জি ও, এর নেতৃত্বে ছিলেন এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ইতােমধ্যে
সূত্র : মুক্তিযুদ্ধে বিলাত প্রবাসীদের অবদান – ড খন্দকার মোশাররফ হোসেন