You dont have javascript enabled! Please enable it!

বিলাতের পত্রপত্রিকার ভূমিকা জুন ৭১

বাংলাদেশ ইস্যুর আন্তর্জাতিক প্রচারের ক্ষেত্রে জুন মাস বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। বিলাতে পত্রপত্রিকায় বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের ফলে সৃষ্ট শরণার্থী সমস্যা সংবাদের শিরােনাম স করে। প্রায় সকল সংবাদপত্রের ব্যানার হেডলাইন ও সম্পাদকীয়তে স্থান পায় বাংলাদে  ইস্যু। ‘দি টাইমস্’ পত্রিকা ১ জুন “Bengal’s suffering millions” শিরােনামে এক সম্পাদকীয় নিবন্ধে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর বর্বর হত্যাযজ্ঞ থেকে ভারতে পালিয়ে আসা লত লক্ষ শরণার্থীর সীমাহীন দুর্ভোগের কথা আলােচনা করা হয়। শরণার্থীদের বাঁচানাের জন্য আন্তর্জাতিক সাহায্যের প্রয়ােজনীয়তা সম্পর্কেও সম্পাদকীয়তে তাগিদ দেয়া হয়। বাংলাদেশে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর কর্তৃত্ব ও শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে পাকিস্তান যে দাবি করেছে তা যে ভিত্তিহীন তার প্রমাণ ভারতে পালিয়ে আসা লক্ষ লক্ষ শরণার্থী  সম্পাদকীয় নিবন্ধে মন্তব্য করা হয় যে, “The evidence of refugees does not confirm the claim made by the army authorities in East Pakistan that order has been restored and that life is returning to normal.” ৪ জুন “দি টাইমস্ পত্রিকার প্রথম পাতার ব্যানার হেডলাইন ৬ কলামে “Drug supplies runing out as 5,000 refugees die of cholera.” সংবাদটি প্রেরণ করেন পিটার হেজেলহার্সট পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণনগর থেকে। এই প্রবন্ধে শরণার্থীদের বাসস্থানের অপ্রতুলতা, খাদ্যের অভাব ও রােগ ব্যাধির ভয়াবহতা সম্পর্কে বিশ্বের শান্তিকামী  মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। রক্ষণশীল পত্রিকা দি টেলিগ্রাফ’ ৫ জুন কলিকাতা থেকে | ইয়ান ওয়ার্ড কর্তৃক প্রেরিত একই ধরনের খবর “Cholera-out of control  শিরােনামে প্রকাশ করে।  ৮ জুন ‘দি গার্ডিয়ান’ পত্রিকায় বাংলাদেশ ইস্যু ও শরণার্থী সমস্যা নিয়ে কয়েকটি প্রবন্ধ | ও সম্পাদকীয় নিবন্ধ প্রকাশ করে। The better way to help” শিরােনামে সম্পাদকীয় নিবন্ধে বাংলাদেশ থেকে ভারতে আশ্রয় গ্রহণকারী শরণার্থীদের রক্ষা করতে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলাে যে ব্যর্থ হয়েছে তার সমালােচনা করা হয়। সম্পাদকীয়তে | প্রথমেই মন্তব্য করা হয় যে, “The world community should be ashamed at how slow it is to learn. “এই নিবন্ধে ইয়াহিয়া খানকে বাংলাদেশে তাম জিঘন্যতম হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করতে বাধ্য করার জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে হস্তক্ষেপ  করার   জন্য আহ্বান জানান হয়।

‘দি গার্ডিয়ান’ পত্রিকায় একই দিনে সাইমন উইনচেষ্টার coffro “Ferry to freedom or death”  “Aid demands beyond . শিরােনামে প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। এই সকল প্রবন্ধ থেকে এটাই স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়, লাদেশে মুক্তিযুদ্ধ তার আঞ্চলিক সীমানা অতিক্রম করে আন্তর্জাতিক সমস্যা হিসাবে। হ্নিত হয়েছে। শ্রমিক দলীয় সংসদ সদস্য জন ষ্টোনহাউজ ৮ জুন ‘দি টাইমস’ পত্রিকায় প্রকাশিত এক পত্রে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যা বন্ধের জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে হস্তক্ষেপ এবং বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানের জন্য আহ্বান জানান। ‘দি গার্ডিয়ান পত্রিকা ৯ জুন “Relief bottleneck threatens aid”; “Guerrillas raids add to border chaos” 998 “Armed police move to stop refugee clash” শিরােনামে তিনটি সংবাদ নিবন্ধ এবং “Refugees fear of Pakistan army” শিরােনামে একটি উপ-সম্পাদকীয় প্রকাশ করে। উপ-সম্পাদকীয়তে গত ৮ জুন পার্লামেন্টে বৃটিশ পরবাষ্ট্রমন্ত্রী স্যার আলেক ডগলাস হিউম এর সত্য ভাষণের জন্য প্রশংসা করা হয়। স্যার আলেক পার্লামেন্টে এক বিবৃতিতে শরণার্থী সমস্যা সম্পর্কে মন্তব্য করেন যে ‘They were afraid of untolerable suppressive action by the Pakistan army, and only a political settlement would get them back to their homes.” স্যার আলেক এর মন্তব্য থেকে এ কথা স্পষ্ট যে রক্ষণশীল বৃটিশ সরকারের মনােভাব পূর্বের অবস্থান থেকে পরিবর্তন হয়েছে। বৃটিশ পার্লামেন্টে ১০ জুন চারঘন্টাব্যাপী পাকিস্তান, বাংলাদেশ সংক্রান্ত বিতর্কে স্যার আলেক। ডগলাস হিউম বাংলাদেশ সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানের প্রয়ােজনীয়তার প্রতি যে গুরুত্ব। প্রদান করেছে তার সমর্থন করে ১১ জুন “দি ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় সম্পাদকীয় নিবন্ধ প্রকাশ করে। ‘দি টাইমস্’ পত্রিকায় ১২ জুন এক সংবাদ নিবন্ধে বাংলাদেশে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জঘন্যতম গণহত্যা এবং হিন্দুদেরকে নির্বিচারে হত্যার এক মর্মস্পর্শী বিবরণ ছাপানাে হয়। ১২ জুন ‘দি গার্ডিয়ান’ পত্রিকায় বৃটিশ এম. পি. টেড় লেড়বিটার পাকিস্তান হাইকমিশন কতৃক বাংলাদেশ আন্দোলন সম্পর্কে মিথ্যা, বানােয়াট ও অর্থহীন সংবাদ সম্বলিত প্রচারপত্র প্রকাশ করায় বিরক্ত হয়ে তার প্রতিবাদ করে পাকিস্তান হাই কমিশনার সালমান আলীকে যে পত্র দেন তা সংবাদ আকারে প্রকাশিত হয়। টেড় লেড়বিটার তার পত্রে লিখেন যে, পাকিস্তানের সামরিক সরকার পূর্ব বঙ্গে’ যেভাবে গণহত্যা, অগ্নিসংযােগ ও লকারের মতাে জঘন্য অপরাধ করছে তা শতাব্দির ঘৃনিত কাজ হিসাবে গণ্য হবে।

বাংলাদেশের ঘটনাবলী যে কিভাবে বৃটিশ এম, পি, সহ সুধী সমাজকে বিচলিত করেছিল তা মি. লেড়বিটারের পত্রে প্রতিফলিত হয়েছে। ১৩ জুন ‘দি সানডে টাইমস্ পত্রিকায় এনথােনী মাসকারেনহাস এর সাড়া জা দীর্ঘ প্রবন্ধ   ‘Genocide’ শিরােনামে প্রকাশিত হয়। মাসকারেনহাস এই প্রবন্ধ লিখে পরিচয় দিয়েছে তা প্রশংসনীয়। তিনি ভারত বিভাগের পূর্বে গােয়ার অধিবাসী একতে ভারত বিভাগের পর তিনি পাকিস্তানের স্থায়ী বাসিন্দা হন এবং পাকিস্তানী পাস নাগরিক ছিলেন। তিনি পাকিস্তান থেকে প্রকাশিত ‘মর্নিং নিউজ’ পত্রিকার সহকারী সত ও লন্ডনের “দি সানডে টাইমসের প্রতিনিধি ছিলেন। বাংলাদেশে গণহত্যা সংঘটিত হওয়া পর এপ্রিল মাসে তিনি বাংলাদেশ সফর করেন এবং পিরস্থতি সরজমিনে প্রত্যক্ষ করেন। পাকিস্তানে ফিরে এসে তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে তিনি তার রিপোের্ট পাকিস্তানের সরকারের ইচ্ছা মাফিক প্রকাশ করবেন না, যদি রিপাের্ট ছাপাতেই হয় তাহলে প্র পূর্ণ রিপাের্ট প্রকাশ করবেন। প্রকৃত রিপাের্ট পাকিস্তানে প্রকাশ করা সম্ভব হবে না বলে তিনি সম্পূর্ণ রিপাের্ট নিয়ে লন্ডনে উপস্থিত হন। তিনি জানতেন যে, এই রিপাের্ট প্রকাশের a তাকে আর পাকিস্তানে ফিরে যেতে দেয়া হবে না। তাই “দি সানডে টাইমসের’ কর্তপক্ষের সাথে কথা বলে তিনি পুনরায় পাকিস্তানে ফিরে গিয়ে তার স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে তার বাড়ীসহ সকল সম্পত্তি পরিত্যাগ করে লন্ডনে পালিয়ে আসেন। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে লন্ডনে ফিরে আসার পর এই প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। ‘Genocide’ রিপাের্ট প্রকাশের সূচনাতে “দি সানডে টাইমস্’ পত্রিকার প্রথম পাতায় মন্তব্য করা হয় যে, ‘West Pakistanis Army has been systematically massacaring thousands of civilians in East Pakistan since end of march. This is the horrifying reality behind the news blackout imposed by President Yahya Khan’s Government since end of march. This is the reason why more than five million refugees have streamed out of East Pakistan into India, risking cholera and famine. ম্যাসকারেনহাসের দীর্ঘ এই রিপাের্ট বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছিল এবং বাংলাদেশের। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশ্বজনমত সৃষ্টিতে বিরাট ভূমিকা রেখেছিল।

১৪ জুন ‘দি টাইমস্’ পত্রিকায় “Death of a Citizen” এবং “Dwindling flow of refugees suggests West Bangal border has been sealed off” শিরােনামে দু’টি সংবাদ নিবন্ধে বাংলাদেশে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বর্বরতা এবং শরণার্থী সমস্যা আলােচনা করা হয় এবং বিশ্ব বিবেকের কাছে তুলে ধরা হয়। একই দিনে দি গাডিয়ান’ পত্রিকায় এক সম্পাদকীয় নিবন্ধে বাংলাদেশে হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করার জন্য হয়াহিয়া খানের উপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টির প্রয়ােজনীয়তার উপর গুরুত্ব প্রদান করা হয়। সম্পাদকীয়তে মন্তব্য করা হয় যে, ”The chief weapon in the Internatic community’s hands is economic–not the descredited threat of sanctions, but rather the threat that credit will be withheld an istan’s means of exchange dry up. ১৬ জুন ‘দি গার্ডিয়ান পত্রিকায় A 360019 als “Soothing words scan Bangali refugees” মে যে খবর প্রকাশিত হয় তাতে প্রবাসী বাংলাদেশী জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি বথী সংক্রান্ত জাতিসংঘের হাই কমিশনার প্রিন্স সদরুদ্দিন খান বনগাঁও এলাকার র পরিদর্শনের পর মন্তব্য করেন যে he regarded the situation in East bekistan as optimistic and that he did not see why the refugees should not be able to return home in time. 1919 Ach for সদরুদ্দিনের এই ধরনের মনােবৃত্তির সমালােচনা করা হয়। একই দিনে ‘দি গার্ডিয়ান পত্রিকায় “Pakistan-guilty of genocide” শিরােনামে অপর একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। প্রিন্স সদরুদ্দিনের উপরােক্ত মন্তব্যে বিশ্বজনমতও স্তম্ভিত হয় এবং সমালােচনা মুখর। হয়। ১৭ জুন দি গার্ডিয়ান পত্রিকায় বাংলাদেশের শরণার্থী ও জাতিসংঘের ভূমিকা নিয়ে। একটি সম্পাদকীয় “The UN could be bolder” শিরােনামে প্রকাশিত হয়। সম্পাদকীয়তে মন্তব্য করা হয় যে “Prince Sadruddins words have added the burden of despair to the refugees trials of flight, disease and. hunger.” শরণার্থীদের সাহায্যে এগিয়ে আসার জন্য জাতিসংঘকে আরাে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সম্পাদকীয়তে মত প্রকাশ করা হয়। একই দিনে “দি গার্ডিয়ান’ পত্রিকার মার্টিন ওলাকোট প্রেরিত খবরে পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিমা গণতান্ত্রিক দেশগুলাের কঠিন মনােভাবের কথা প্রকাশিত হয়। ২২ জুন লন্ডন থেকে প্রকাশিত সকল পত্রিকা প্যারিসে অনুষ্ঠিত ১১ জাতি সমন্বয়ে গঠিত পাকিস্তান এইড কনসােরসিয়ামের সভায় পাকিস্তানকে নতুন সাহায্য বন্ধের সিদ্ধান্তের খবর ফলাওভাবে প্রচার করা হয়। ২১ জুনে অনুষ্ঠিত প্যারিস সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, বাংলাদেশ সমস্যার একটি রাজনৈতিক সমাধান না হলে পাকিস্তানকে আর কোন নতুন সাহায্য দেয়া হবে না। গার্ডিয়ান পত্রিকায় ২২ জুনে প্রকাশিত উক্ত খবরের সাথে লন্ডন এবং বার্মিংহাম থেকে প্রেরিত ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ও ‘এ্যাকশন বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন সংগ্রাম। পরিষদের সদস্যদের সভা স্থলের কাছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যে লবিং এবং বিক্ষোভ হয় তাও প্রচার করা হয়। ২২ জুন লন্ডনের পত্র পত্রিকায় বাংলাদেশের জন্য অপর একটি ইতিবাচক। আনন্দের খবর প্রকাশিত হয়।

২১ জুনে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরদার শরন সিং এবং বৃটিশ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্যার আলেক ডগলাস হিউম এর মধ্যে অনুষ্ঠিত সভার পর এক যুক্ত বিবৃতিতে এই প্রথম বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বৃটিশ সরকারের পরােক্ষ সমর্থন মনােভাব একশত হয়। যুক্তবিবৃতিতে বলা হয় যে, পাকিস্তানে সৃষ্ট সমস্যার এমন সমাধান হতে হবে যা পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের কাছে গ্রহণযােগ্য হবে। দীর্ঘদিনের লবিং, ধর্না, মিছিল শােভাযাত্রা অনুষ্ঠানের পর রক্ষণশীল বৃটিশ সরকারের এই পরিবর্তিত মনােভাব আন্দোলনরত সকল প্রবাসীদের মনে অনুপ্রেরণা ও আশাবাদ সৃষ্টি করে।  ২৩ জুন ‘দি গার্ডিয়ান পত্রিকায় শরণার্থী সংক্রান্ত জাতিসংঘের হাই কমিশনার সদরুদ্দিন আগাখান জাতিসংঘের মহাসচিব মিঃ উথানটের কাছে যে রিপাের্ট দেন তা, লাভ করে। এই রিপাের্ট একপেশে বলে সমালােচিত হয়। ২৪ জুন পত্রিকায় প্যাটিক ৪ এবং ক্রিষ্টিন ইয়েড যৌথভাবে “Big squeeze is on Yahya Khan” শিরােনামে একটি সংবাদ নিবন্ধে ‘পাকিস্তান সমস্যার’ একটি গ্রহণযােগ্য রাজনৈতিক সমাধান না, পর্যন্ত বৃটেন পাকিস্তানকে কোন সাহায্য দেবেন না বলে যে ঘােষণা বৃটিশ পররাই গতকল্য পার্লামেন্টে দিয়েছেন তা প্রকাশ করে। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার সাথে সাথে পাকিস্তানে অস্ত্র বিক্রয়ের ব্যাপারে আমেরিকা যে নিষেধাজ্ঞা আরােপ করেছিল তা উপেক্ষা করে ২টি জাহাজ ভতি অস্ত্র নিউইয়র্ক পােট থেকে ছেড়ে এসেছে বলে এক খবৰ ২৫ জুন ‘দি টাইমস্’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। | ২৯ জুন “দি গার্ডিয়ান পত্রিকায় মার্টিন ওলাকোট পাকিস্তানে বেসামরিক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের পরিকল্পনার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল ইস্যুকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের এই পরিকল্পনা বিদ্যমান পরিস্থিতির কোন উল্লেখযােগ্য পরিবর্তন যে হবে না তা উল্লেখ করে ‘দি গার্ডিয়ানে’ একই দিনে সম্পাদকীয় নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। ৩০ জুন ‘দি ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় মিস ক্লেয়ার হােলিংওয়ার্থ প্রেরিত প্রতিবেদনে বাংলাদেশের উপর ইয়াহিয়া খানের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার নতুন পরিকল্পনাকে নস্যাত করার জন্য মুক্তিযােদ্ধাদের ঢাকা শহরের কেন্দ্রবিন্দু আক্রমণের খবর প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে বৃটিশ সমর্থক “এ্যাকশন বাংলাদেশ” এর উদ্যোগে ৩০ জুন ‘দি টাইম্‌স’ পত্রিকায় বাংলাদেশে। অনুষ্ঠিত গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং বাংলাদেশকে স্বীকৃতির দাবি সম্বলিত এক পূর্ণ পৃষ্ঠা ব্যাপী বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়। বৃটিশ পার্লামেন্টে ১৫ জুন বাংলাদেশের সমর্থক সংসদ সদস্যগণ যে প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন, প্রায় ২০০ জনের বেশি এম, পি এর নাম সহ তার পূর্ণ বিবরণ উক্ত বিজ্ঞাপনে ছাপানাে হয়। 

সূত্র : মুক্তিযুদ্ধে বিলাত প্রবাসীদের অবদান – ড খন্দকার মোশাররফ হোসেন

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!