You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.11.13 | বাঙলাদেশ, ভারত-সােভিয়েত চুক্তির স্বপক্ষে মার্কিন নীতির প্রতিবাদ | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

বাঙলাদেশ, ভারত-সােভিয়েত চুক্তির স্বপক্ষে মার্কিন নীতির প্রতিবাদ
২৭ নভেম্বর যুব সঙ্-যুব কংগ্রেসের যুক্ত মিছিল
(স্টাফ রিপাের্টার)

কলকাতা, ১২ নভেম্বর বাঙলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও ভারত-সােভিয়েত মৈত্রী চুক্তির সমর্থনে এবং বাঙলাদেশ প্রসঙ্গে মার্কিনী নীতিকে ধিক্কার জানাবার জন্য আগামী ২৭ নভেম্বর কলকাতার রাজপথে এই প্রথম পশ্চিমবঙ্গ যুব সঙ্ এবং পশ্চিমবঙ্গ যুব কংগ্রেসের কর্মীবৃন্দ যুক্তভাবে মিছিল বের করবেন। ঐদিন বেলা ১ টায় সুবােধ মল্লিক স্কোয়ারে সমবেত হওয়ার পর উভয় সংগঠনের যুবকবৃন্দ মিছিল সহকারে মার্কিন কলেট গিয়ে বিক্ষোভ জানাবেন এবং তারপর বাঙলাদেশ হাইকমিশনের সামনে মিছিলের সমাপ্তি-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
আজ এক সাংবাদিক সম্মেলনে পশ্চিমবঙ্গ যুব সঙ্রে সাধারণ সম্পাদক শ্রীগুরুদাস এবং ভারতীয় যুব কংগ্রেসের সভাপতি শ্রী প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সী একথা ঘােষণা করেন।
শ্রীদাসগুপ্ত জানান, “যুব কংগ্রেসের সঙ্গে বহু ব্যাপারে আমাদের মত পার্থক্য সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিক্ষেত্রে বামপন্থী মােড় সম্ভব করে তােলার উদ্দেশ্য আমরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে নামছি। ঐ মিছিল তারই প্রথম ধাপ। আমরা উভয় সংগঠন মনে করি বাঙলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে পাক বাহিনীর সবচেয়ে বড় দোসর হল মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ।
পরে বেকারী, মজুতদারির বিরুদ্ধে এবং কৃষকদের ন্যায্য দাবির সমর্থনে আমরা যুক্ত আন্দোলনে নামতে ইচ্ছুক। এটা পরিস্কারভাবে জানাতে চাই, আমাদের এই যুক্ত আন্দোলন কোন দল বিশেষের বিরুদ্ধে পরিচালিত নয়। আমরা চাই গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশন সহ অপর সকল যুব সংগঠন এসে আমাদের এই যুক্ত প্রয়াসে “যুথবদ্ধ হন।”
শ্রীদাসমুন্সীর মতে, “আমাদের ধারণা এই যুক্ত আন্দোলনের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে নতুন পরিবেশ সৃষ্ট করা যাবে এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলন শক্তিশালী হবে। কেরালায় যে ধরণের যুক্ত আন্দোলন গড়ে উঠেছে সে।
ঠেছে, সে ধরণের আন্দোলনই এখানে গড়তে হবে। আমরা মনে করি বাঙলাদেশ প্রসঙ্গে মার্কিনী নীতিকে যদি ধিক্কার জানান না হয়, তবে একদিকে যেমন গণতান্ত্রিক যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করায় অসুবিধা দেখা দেবে, তেমনি দক্ষিণপন্থী প্রতিক্রিয়া জনগণকে বিভ্রান্ত করার সুযােগ পাবে।”
গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা মনে করি না গ-যু-ফে গণতান্ত্রিক যুব আন্দোলনের শরিক হিসেবে কাজ করছে। তবে আশা করি আমাদের যুক্ত আন্দোলনের প্রভাব গ-যু-ফে গণতান্ত্রিক যুব আন্দোলনের পাশে বর্তমান নীতি পাল্টে দাঁড়াতে পারবে না।”
বাঙলাদেশ সম্পর্কে চীন যে নীতি নিয়েছে তাকে ‘দুঃখজনক’ আখ্যা দিয়ে গুরুদাশ দাশগুপ্ত বলেন, “আমরা চীনের কাছ থেকে ভিন্ন নীতি আশা করেছিলাম। তবু বলব, বাঙলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ দমনে ইয়াহিয়ার প্রধান দোসর মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ।” শ্রীদাসমুন্সী এই বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন নি। তবে যুব সঙ্ঘের অবিলম্বে বাঙলাদেশকে স্বীকৃতিদানের দাবির পাশে যুব কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রীর বর্তমান নীতির সঙ্গে একমত একথা তিনি ব্যক্ত করেন।

সূত্র: কালান্তর, ১৩.১১.১৯৭১