ব্রিগেডিয়ার রহিমের আবির্ভাব
বিকেল বেলা বসে আছি ঘরের বাইরের রৌদ্রে। নভেম্বরের শেষ তীব্র শীত হঠাৎ গেটের সান্ত্রীরা খটখট শব্দ করে সামরিক কায়দায় একসাথে সাবধান, অস্ত্র উত্তোলন ও অভিবাদন করলাে। বুঝলাম কর্নেলের উপরস্থ পদবির কোনাে অফিসার এসেছেন। অভিবাদনের পরে গেট খুলে গেল পরনে বেসামরিক শীতবস্ত্র, মাথায় পাঠানি টুপি ও হাতে ছড়ি নিয়ে কেবল একজন লােক এগিয়ে আসতে লাগলেন আমার বাসার দিকে। কাছে এলে ভালাে করে তাকিয়ে দেখে চিনতে পারলাম, ব্রিগেডিয়ার মিয়া ফজলুল রহিম। এগিয়ে গেলাম তার দিকে মনে দুশ্চিন্তা থাকলেও মুখে হাসি ধরে রাখার প্রচেষ্টা রহিম কিছুটা দ্রুততার সাথে এগিয়ে এলেন, অত্যন্ত উষ্ণ ও সরব অভিবাদন—প্রথমে হাত মেলানাে, পরে আলিঙ্গন, প্রয়ােজনের চাইতে বেশিক্ষণ ধরে খলিল, ইয়ারা ক্যায়সে। হাে? ভাবি কিধার হ্যায়, বাল বাচ্চে ক্যায়সে হ্যায়?’ এতাে কথার উত্তর দেয়ার কোনাে চেষ্টাই করতে পারলাম না। ভাবছি কি ব্যাপার, ততােক্ষণ রহিম আমাকে ছেড়ে আমার বসার ঘরে ঢুকে পড়েছেন, মুখে হাঁকডাক ‘ভাবি, ভাবি। কিধার হ্যায় আপ বলাবাহুল্য, সেই উচ্চ ডাকে আমার স্ত্রী বেরিয়ে এলেন, রহিমকে দেখে বললেন, রহিম ভাই, আপনি কি করে? এখানে?’ উচ্চস্বরে হাসতে হাসতে বলতে লাগলেন, দেখুন না ভাবি, সবই ভাগ্যের ব্যাপার। তা। হলে, এই অকালকুণ্ড মন্ডি বাহাউদ্দিনে, যার নামও কোনােদিন শুনি নি, আপনারা তাে আরও শােনেন নি, সেখানে আমাদের এই অবস্থায় দেখা হবে? ওসব থাক, আপনি কি আমাকে এক পেয়ালা চাও খাওয়াবেন না?’ বলেই হঠাৎ মুখটা কিছু উদ্বিগ্ন হয়ে গেল রহিমের। চিন্তান্বিত স্বরেই প্রশ্ন করলেন, ‘চায়ের বন্দোবস্ত আছে তাে?’ তা আছে শুনে রহিম বসলেন আমাদের ওই চেয়ারগুলাের একটিতে মুখে বললেন, ‘সবই ভাগ্য (মুকাদ্দর), ভাবি।’ ক্ষণিকের তরে হলেও আমরা ভুলে গেলাম বর্তমান কোনাে অজানা মুহূর্তে চলে গেছি আমরা পূর্ববর্তী জীবনে। এই বাঙালি, এই পাঠান, এই পাঞ্জাবি, এই বালুচি, সবাই একসাথে ছিলাম, ভাইবােনও হয়তাে ছিলাম একদিন; কিন্তু এই পাকিস্তানিরাই হয়ে গেছে। এখন বর্বরতার প্রতীক, মানুষ নামের কলঙ্ক। রহিমের চা খাওয়া ও কুশল বিনিময়ের ফাকে একবার জিগ্যেস করলাম, তিনি এখানে কেন? উত্তরে বললেন, আমাদের খালি করা ক্যাম্পে একটি ব্রিগেড আসার পরিকল্পনা হয়েছে। সেই ব্রিগেডটির অধিনায়ক হয়ে এসেছেন রহিম। বাসস্থান নির্ধারণ ও অন্যান্য খুঁটিনাটি প্রাথমিক কাজগুলাে করার জন্য তিনি অগ্রগামী হিসেবে এসেছেন একটি ক্ষুদ্র দল নিয়ে উঠেছেন আমাদের ‘বি’ বিভাগের সর্ববৃহৎ বাড়িটিতে বাড়িটি অদূরে।
এসে জানতে পারলেন এখানে এখনও তিনটি পরিবার আছে। আমার নাম দেখে আর দেরি করেন নি। সাক্ষাতের জন্য তিনি ছুটে এসেছেন স্বভাবতই জানতে চাইলাম, আমাদের ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে কিছু জানেন কিনা। জানেন না তবে আশ্বাস দিলেন জেনে বলবেন। পরদিন রাতে তার বাসায় অর্থাৎ ফ্লাগ স্টাফ হাউসে আমার পরিবারসহ দাওয়াত। বলতে চাইলাম ও আকারে-ইঙ্গিতে বললামও যে, আমরা তাে বন্দি, বাড়ির আঙিনা ছেড়ে আমাদের এক পা বাইরে যাওয়ারও আদেশ নেই। উত্তরে একটি তীক্ষ দৃষ্টি ফেলে ও কয়েকটা অশ্রাব্য গালাগালি দিয়ে রহিম যা বললেন তার অর্থ হলাে যে, তিনি এই বেজন্মাদের (কর্তৃপক্ষ) খবর জানেন এবং জানতেও চান না। তিনি দাওয়াত দিচ্ছেন এবং আমাদের যেতে হবে অনেক কথা আছে যাওয়ার সময় আমার স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘ভাবি, জরুর আইয়ে গা, ঔর বাচ্চো কো লেতে আইয়ে গা রহিম চলে গেলেন আমার হুশ পুরােপুরি ফেরত আসার আগেই শুনি, ‘স্যার, কি ব্যাপার?’ ক্যাপ্টেন দু’জন ও তার পরিবারবর্গ স্বভাবত এতােক্ষণ দম বন্ধ করে অপেক্ষা করছিলেন দেয়ালের আড়ালে তাদের আলিঙ্গন করে আশ্বস্ত করলাম বললাম যে, আমাদের যাওয়ার ব্যাপারে কোনাে সুখবর নেই; কিন্তু যেটা সত্যিকারের সুখবর সেটা হলাে আমাদের দৈহিক নিরাপত্তা। এখনও আমরা বন্দি, কিন্তু অসহায়, নিরাপত্তাহীন বন্দি নই। এখন থেকে আমরা হিসাবের খাতায় উঠেছি। বলাবাহুল্য, অফিসারদের পরিবারবর্গ সে রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমােতে পেরেছিল। পরদিন বিকেলে বাক্স থেকে কিছু শীতবস্ত্র বের করে, ইস্ত্রি করে নিজেদের যতােটা সম্ভব গ্রহণযােগ্য করে তােলা হলাে। এ কাপড়গুলাে পাকিস্তানে থাকা অবস্থায় আমরা পরবাে ভাবি নি রহিম একা থাকেন তাঁর পরিবার এখনাে এখানে আসে নি। অনেক গল্পসল্প হলাে। রহিম জানালেন তার ভগ্নিপতি একজন মেজর, ই পি আরে চাকরি করতেন। তিনি এখন বন্দি। তাঁর বােন ও ভাগ্নে-ভাগ্নিরা অত্যন্ত চিন্তিত তার জন্য। তিনি কি অবস্থায় আছেন কে জানে, বলেই দীর্ঘ নিশ্বাস নিলেন রহিম। একটু পরে বললেন, ‘আচ্ছা খলিল, বন্দিজীবন কেমন?’ এর উত্তর দু’এক কথায় কি দেয়া যায়? একটু চিন্তা করে বললাম, সংক্ষেপে এর উত্তর দেয়া কঠিন।
মনে কর তুমি একজন ব্যক্তি ছিলে, তােমার একটি সত্তা ছিল। হঠাৎ একদিন তুমি সত্তাহীন, কেউ নও হয়ে গেলে (ইউ হ্যাভ বিন রিডিউস্ টু নাথিংনেস)। রাস্তার কুকুরটাকেও তােমার ঈর্ষা। করতে ইচ্ছে করে। অনেকটা সেই রকমই লাগে।’ কতােক্ষণ অধােমুখে বসে। থেকে রহিম অন্য প্রসঙ্গ তুললেন। আমাদের চাকরি জীবন। কি করে পাঁচশ অফিসারের প্রতিযােগিতার পরীক্ষায় প্রথম তিনজনের মধ্যে স্থান পেয়ে আমরা দু’জনে বিদেশি স্টাফ কলেজে অধ্যয়ন করার সুযােগ পাই, পূর্বতন পূর্ব পাকিস্তানে একসাথে চাকরি, সামরিক স্কুল পি এম এ-তে একসাথে প্রশিক্ষণ ইত্যাদি। উঠবার সময় টুপি ও ছড়িটা হাতে নিয়ে আমাদের সাথে দরজা পর্যন্ত। হেঁটে এসে শুভ রাত্রি কামনা করে বিদায় নিলেন। যাওয়ার সময় আমাকে বললেন, প্রতি বিকেলে যেন আমি তার বাসায় যাই এবং চা খাই। অনেক গল্প নাকি আছে। আমার সঙ্গে। প্রতিদিন না হলেও প্রায়শই যেতাম রহিমের বাংলােয় । গল্প হতাে নানা বিষয়ে। হঠাৎ একদিন বললেন, ‘পাকিস্তান তাে ভেঙে গেল। এখন তােমার কি মনে হয় আমাদের পাকিস্তান সম্বন্ধে? এই পাকিস্তান কি টিকবে?’ রহিম ছিলেন একজন চিন্তাশীল ব্যক্তি। ছাত্র হিসেবে ভালাে ছিলেন। আর পড়াশােনা করতেন প্রচুর। ওঁকে মনের কথা খুলে না বললে ওঁ সেটা বুঝতে পারবে এবং গল্প আর জমবে না। তাই আন্তরিকতার সঙ্গেই বললাম, “দেখ একটি অভিন্ন জাতিসত্তা গড়ে ওঠে নি এরকম একটি রাষ্ট্র তােমাদের এই পাকিস্তান। মােটামুটি চারটি জাতি নিয়ে গঠিত পাকিস্তান। ইসলাম ধর্মই একমাত্র যােগসূত্র। ভাষা ও সংস্কৃতির ফারাক অনেক। এই জনগােষ্ঠীকে অভিন্ন জাতিতে পরিণত করার একমাত্র রাস্তা অবাধ গণতন্ত্র, যেখানে ক্ষুদ্র বৃহৎ সকল জাতি নিজের স্বাধিকার নিয়ে বৃহৎ জনগােষ্ঠীতে একীভূত হতে পারবে। যেমনটির প্রচেষ্টা চলছে ভারতে। প্রায় পঁচিশাের্ধ্ব জাতিকে একমাত্র গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার শক্তি দিয়ে, ব্যক্তির মর্যাদাকে গােষ্ঠীর মর্যাদার ওপরে স্থান দিয়ে ভারতীয় নামে, একই সঙ্গে বায়বীয় এবং বাস্তব, একটি জনগােষ্ঠীতে, এক জাতিতে পরিণত করার চেষ্টা চলছে। সাত-আটটি সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে তার অগ্রগতিও হয়েছে দর্শনীয়।’ ‘পাকিস্তানে তাে গণতন্ত্র নেই। অদূর ভবিষ্যতে গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনাও এখানে ক্ষীণ। কারণ তােমাদের রয়েছে প্রয়ােজনাতিরিক্ত সামরিক বাহিনী। আবার এই সামরিক বাহিনী প্রধানত এসেছে একটি প্রদেশ থেকে এবং প্রদেশটি একক বৃহত্তম পাঞ্জাব।
পাঞ্জাবের সামরিক ও বেসামরিক এলিট শ্রেণী কিছুতেই ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণে সায় দেবে না। অতএব, আপাতত সামরিকতন্ত্র পাকিস্তানে অবধারিত। আর এই সামরিকতন্ত্র এখানে থাকলে এখানকার চার জাতি কখনাে এক হবে না। ধর্মের দোহাই যে এসব ব্যাপারে চলে না তা তাে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনেই প্রমাণিত হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে এটাও প্রমাণ হয়ে গেছে যে, সমগ্র জনগােষ্ঠীকে এক ধর্মের খােলসের মধ্যে ভরে তাকে মার্শাল ল’ নামের বাহ্যিক চাপে পিষ্ট করে পিটিয়ে-পাটিয়ে একীভূত করে এক অভিন্ন জাতি গঠনের প্রচেষ্টার পরিবর্তে, ধর্মনিরপেক্ষতার মুক্ত হাওয়ায় ব্যক্তিমর্যাদার কর্ষণ অভিন্ন সত্তা উৎপাদনে অনেক বেশি ফলপ্রসূ; কিন্তু এরূপ প্রয়াস তােমাদের পাকিস্তানে দূরঅস্ত । অতএব, আমি ব্যক্তিগতভাবে তােমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশান্বিত নই।’ মনে হলাে রহিম কথাগুলাে একটি একটি করে গিললেন। আমার ভয় ছিল হয়তাে তিনি সাধারণ ‘মনহীন সামরিক অফিসারের মতাে আমাকে ভাববেন পাকিস্তানের শত্রু এবং ইসলামের শত্রু কিন্তু না, চিন্তাশীল রহিম অনেকক্ষণ ভাবলেন, তারপর বললেন, ‘জান খলিল, আমারও সেই ভয় তবে দোয়া করাে আমরাও যেন তােমাদের মতাে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও লালন করতে পারি।’ হায় বিধি, তখন কি জানতাম আমাদের গণতন্ত্র কতােটা ভঙ্গুর ও কতােটা ক্ষণস্থায়ী। হতে যাচ্ছে! সত্যি বলতে কি তখন ভাবি নি এবং জানতামও না যে চাইলেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয় না। গণতন্ত্রের জন্য প্রয়ােজন গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি, গণতান্ত্রিক মানসিকতা, সহনশীলতা ও সত্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল উন্নত মন। ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতার পর এসব গুণের চর্চা আমাদের দেশে হয় নি, হওয়ার সুযােগও ছিল না। ১৯৭২ সালের রাষ্ট্রীয় কর্ণধাররাও যেমন গণতন্ত্রের প্রতি আশানুরূপ নিষ্ঠাবান ও তার বাস্তবায়নের জন্য সুদক্ষ ছিলেন না। ফলত, অদক্ষ শাসনের ফলে একদলীয় সরকার প্রতিষ্ঠিত হলাে। এদিকে দরজার বাইরে অপেক্ষা করছিল পরাজিত শক্তি তাদের কালাে হাত নিয়ে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ব্যক্তিমর্যাদা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হলে, তাদের অস্তিত্ব নিশ্চিতভাবে নিশ্চিহ্ন হবে, এ সত্য তারা পুরােপুরি উপলব্ধি করতাে।
অতএব, তারা তথাকথিত ধর্মরক্ষার যূপকাষ্ঠে ব্যক্তিমর্যাদার মহান সত্যকে বলিদান দিতে সচেষ্ট হলাে এবং সফলও হলাে ১৯৭৫ সালে, মাত্র সাড়ে তিন বছর পরেই। আমাদের দেশেও প্রতিষ্ঠিত হলাে সামরিকতন্ত্র যার একমাত্র, একনিষ্ঠ সহায়ক শক্তি ছিল সত্য হননকারী ও জ্ঞানপাপী, মধ্যযুগীয় ও মানবতাবিরােধী মৌলবাদী শক্তি। ফলত, পরের দীর্ঘ পনেরাে বছরের বাংলাদেশ, পাকিস্তানের চেয়ে কোনাে দিক দিয়ে ভিন্ন কিছু সত্তা ছিল না। এই প্রসঙ্গে মনে পড়ে (কথাটি পূর্ব অধ্যায়েও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে এই সুখবরটি শুনে প্রখ্যাত রাজনৈতিক নেতা সীমান্ত গান্ধী নামে পরিচিত ও আফগানিস্তানে আপাত নির্বাসিত গফফার খান বলেছিলেন যে, এই উপমহাদেশে বাংলাদেশই গণতন্ত্র অনুশীলনের সর্বশ্রেষ্ঠ নমুনা রাখবে। অতীত ও বর্তমানের গণতন্ত্র অনুশীলনের বাস্তবতা সত্ত্বেও আমি ব্যক্তিগতভাবে আশাবাদী যে, গফফার খানের ভবিষ্যদ্বাণী সার্থক হবে বাংলাদেশে। কিন্তু তার জন্য রাজনৈতিক নেতৃত্বের কোনাে অবদান থাকবে না, শতকরা একশ’ ভাগ অবদান থাকবে বাংলাদেশের চৌদ্দ কোটি মানুষের। কারণ এই মানুষই স্বাধীনতা এনেছে, এই মানুষই নিজের হাতে নিজের ভাগ্য নির্ধারণ করবে এবং এই মানুষই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্র সংরক্ষণ করবে। এর আলামত আজকে ২০০৪ সালেও প্রতিভাত হতে শুরু করেছে। রহিমের সাথে প্রায়শ আলােচনাতে এসব বিষয় বিশেষ স্থান পেত। আমাদের এখনও বন্দিশিবিরে আটকে রাখা হয়েছে কি উদ্দেশ্যে, তার সদুত্তর তাঁর কাছে আমি পাই নি। হয়তাে রহিম জানতে পেরেছিলেন, কিন্তু আমাকে বলেন নি। শুধু বলতেন, একটু ধৈর্য ধর, তােমরাও যাবে। নভেম্বরের শেষ থেকে আমরা তিনজন বন্দিশিবিরে। অবশেষে ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে আদেশ এলাে আমাদেরও মুক্তির। অন্তরের অন্তস্তল থেকে রহিমকে ধন্যবাদ। জানিয়ে আমরা রওনা হলাম রেল স্টেশনে। রহিম কি বুঝতে পেরেছিলেন যে, দীর্ঘ মাসেক সময় ধরে তিনি আমাদের তিনটি বাঙালি পরিবারের সদস্যদের কতােটা মানসিক স্বস্তি দিতে পেরেছিলেন।
সূত্র : পূর্বাপর ১৯৭১ – পাকিস্তানি সেনা-গহবর থেকে দেখা