কোর্ট মার্শাল
শুনতে পেলাম ঢাকার ধ্বংসযজ্ঞের অধিনায়ক ব্রিগেডিয়ার জাহানযেব আরবাব (২৫ মার্চের ‘ঢাকার জল্লাদ’ হিসেবে কুখ্যাত) বগুড়ার স্টেট ব্যাংক ভেঙে অগুনতি টাকা আত্মসাৎ করেছে। এজন্য তার কোর্ট মার্শাল হচ্ছে। আরও কোট মার্শাল হচ্ছে এক লেফটেন্যান্ট কর্নেলের অনুরূপ কোনাে অপরাধের জন্য। সব প্রস্তুতি শেষ; কিন্তু অন্তিম মুহুর্তে কোর্ট মার্শাল আদেশ বাতিল হলাে। ইস্টার্ন কোর কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল নিয়াজি নাকি পাকিস্তান সেনাসদরকে বুঝিয়েছেন যে, যুদ্ধের সময় এ ধরনের কাজ হয়েই থাকে। আর পূর্ব পাকিস্তানে। কোনাে অফিসারকে কোনাে অপরাধের জন্য কোর্ট মার্শাল করলে বহির্বিশ্বের সাংবাদিকরা জানতে পারবে এবং তাতে পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও সাহসী। সেনাবাহিনীর সুনামের ক্ষতি হবে। হতে পারে পাকিস্তান সেনাসদর থেকে নিয়াজিকে অনুরূপ কারণে কোর্ট মার্শাল বন্ধ করতে বলা হয়েছিল। অতএব, পরবর্তীকালে ব্রিগেডিয়ার আরবাব বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ঠিক পূর্ববর্তী মুহূর্তে বীরের মতাে পাকিস্তানে ফেরত গিয়েছিল এবং সেখানে পরে তাকে লে, জেনারেল পদ পর্যন্ত পদোন্নতি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছিল। তবে এটাও জানি যে, এই ঘটনার পর চুরি, লুণ্ঠন ও নারীঘটিত কোনাে অপরাধের জন্য পূর্ব পাকিস্তানে যুদ্ধরত কোনাে সৈনিক কিংবা অফিসারকে শাস্তি পেতে হয় নি। বরং পরবর্তী সময়ে অক্টোবরে জেনারেল নিয়াজির একটি বক্তব্যে এই নির্দেশটি সন্দেহাতীতভাবে সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে যে, ‘অপরাধ যতাে ইচ্ছে করাে কিন্তু বাঙালিকে দমন করতে হবে এবং ভারতকে যুদ্ধে হারাতে হবে।
সূত্র : পূর্বাপর ১৯৭১ – পাকিস্তানি সেনা-গহবর থেকে দেখা