৭ মার্চের ভাষণের গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশাবলী
আজ থেকে আমার নির্দেশ:
(১) বাংলার মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত ট্যাক্স খাজনা বন্ধ রাখুন, (২) সমগ্র বাংলাদেশের সেক্রেটারিয়েট-সরকারী-আধাসরকারী অফিস, সুপ্রীমকোর্ট, হাইকোর্ট এবং অন্যান্য কোর্টে হরতাল করুন। (কোথাও শিথিল করা হইলে জাননো হইবে) (৩) রিক্সা, বেবী, বাস-ট্যাক্সী প্রভৃতি এবং রেলগাড়ী ও বন্দরসমূহ চালু রাখুন; কিন্তু জনগণের উপর জুলুম চালাইবার উদ্দেশ্যে সশস্ত্র বাহিনীর চলাচলের সঙ্গে রেলওয়ে ও বন্দর কর্মচারীগণ সহযোগিতা করিবেন না এবং এক্ষেত্রে তাহাদের চলাচলের ব্যাপারে কোনো কিছু ঘটিলে আমি দায়ী হইবো না।
(৪) বেতার, টেলিভিশন ও সংবাদপত্র সেবীরা আমাদের বিবৃতি-বক্তৃতার পূর্ণ বিবরণ প্রদান করিবেন এবং গণআন্দোলনের কোনো খবর গায়েব করিবেন না। যদি তাহাতে বাধা দেওয়া হয়, তাহা হইলে এইসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বাঙালিরা কাজে যোগ দিবেন না। (৫) শুধু লোকাল এবং আন্তঃজেলা ট্রাঙ্ক-টেলিফোন যোগাযোগ অব্যাহত রাখুন। (৬) স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখুন। (৭) সকল গৃহশীর্ষে প্রতিদিন কালো পতাকা উত্তীর্ণ রাখুন। (৮) ব্যাংকসমূহ প্রতিদিন দুই ঘণ্টা খোলা রাখুন; কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানে এক পয়সাও যেন পাচার না হয়। (৯) আংশিক বা সর্বাত্মক হরতাল ঘোষণা করা হইতে পারে, তজ্জন্য প্রস্তুত থাকুন।
(১০) স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বে অবিলম্বে বাংলার প্রত্যেকটি ইউনিয়ন, মহল্লা, থানা, মহকুমা ও জেলা পর্যায়ে সংগ্রাম কমিটি গঠন করুন। গতকাল (রোববার ৭ মার্চ) রমনা রেসকোর্সের উত্তাল জনসমুদ্রকে সাক্ষী রাখিয়া তুমুল করতালির মধ্যে আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমান বঙ্গবাসীর উদ্দেশ্যে উপরোক্ত ঘোষণা করেন।