প্রসঙ্গক্রমে
বাঙলাদেশ প্রশ্নে আন্তর্জাতিক গণ-আন্দোলন
বাঙলাদেশ সমস্যা নিয়ে এখন গােটা সােভিয়েত ইউনিয়নে এক ব্যাপক গণ-আন্দোলন গড়ে উঠেছে। পশ্চিম পাকিস্তানী সামরিক জুন্টা বাঙলাদেশের জনগণের ঘােষিত আকাঙ্খকে স্তব্ধ করার উদ্দেশ্যে যে পাইকারী গণহত্যা ও দমন পীড়ন চালিয়ে আসছে তার বিরুদ্ধে কেবল পত্র পত্রিকাগুলিই নয়, কলকারখানার শ্রমিক ও যৌথ খামারের কৃষকরা সােচ্চার হয়ে উঠেছেন। শুধু কি তাই?
আন্তর্জাতিক ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন, আন্তর্জাতিক মহিলা ফেডারেশন প্রমুখ প্রভাবশালী গণসংগঠনগুলি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বিনাশর্তে মুক্তি এবং পূর্ববঙ্গের জনগণের অবিচ্ছেদ্য অধিকার ও বিঘঘাষিত আকার ভিত্তিতে রচিত রাজনৈতিক সমাধানের দাবিতে দুনিয়া জোড়া গণদাবি গড়ে তােলার আহ্বান জানিয়েছে।
এ যেন গণ ভিয়েতনামের উপর মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের দস্যুসুলভ বিমান হানা অথবা পশ্চিম এশিয়াতে মার্কিন বশম্বদ ইস্রায়েলী সম্প্রসারণবাদীদের আগ্রাসী হামলার সময় তার বিরুদ্ধে সােভিয়েত প্রমুখ দেশগুলির গণপ্রতিবাদ প্রকাশের দিনগুলির কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়।
সােভিয়েত প্রমুখ সমাজতান্ত্রিক দেশগুলির জনগণ ও সরকারগুলি যে আর পূর্ববঙ্গের গতি-পরিনতিকে আদৌ পাকিস্তানের আভ্যন্তরিন ব্যাপার বলে মানতে নারাজ, পক্ষান্তরে তারা একটা নিপীড়িত জাতির সাম্রাজ্যবাদবিরােধী মুক্তিসংগ্রামের প্রশ্ন বলেই যে মনে করছেন, এসব ঘটনা তারই জীবন্ত ও জলন্ত সাক্ষ
তত্ত্বেও ভারতে যেসব দল মহল সােভিয়েত ভারত চুক্তি ও সাম্প্রতিক যুক্ত বিবৃতি এবং সােভিয়েতের ভূমিকাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে বদ্ধপরিকর তারা অবশ্য তারপরও সহজাত মক্ষিকাবৃত্তি ত্যাগ করবে না। বিশ্বাস না হয় জনসংঘের ‘অর্গানাইজার’, দেশী-বিদেশী প্রতিক্রিয়ার স্টেটম্যান’ এবং চরম সংকীর্ণতাবাদী সি পি এম এর সান্ধ্য বুলেটিন ‘গণশক্তি ও সাপ্তাহিক জয়ডাক দেশহিতৈষীর পাতা উল্টে দেখুন, চক্ষুকর্ণের বিবাদ ভঞ্জন হবেই হবে।
সূত্র: কালান্তর, ৯.১০.১৯৭১