বাংলাদেশের জাতীয় লিবারেশন ফ্রন্ট গঠিত
(দর্পণের সংবাদদাতা)
বাংলাদেশে মুক্তিফৌজের বিভিন্ন অংশের মধ্যে যােগাযােগ ব্যবস্থা স্থাপনের উদ্দেশে এবং গেরিলা যুদ্ধ কৌশল প্রবর্তনের জন্য হালেই জাতীয় লিবারেশন ফ্রন্ট গঠিত হয়েছে।
এই ফ্রন্টে বাংলাদেশের সমস্ত রাজনৈতিক দল এবং গােষ্ঠিকে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা হয়েছে। এই ফ্রন্ট গঠনে ও দেশের যুব শক্তি বেশ কিছু দিন ধরে চেষ্টা করছিল।
নিরস্ত্র জনসাধারণের উপর সৈন্য বাহিনীর নির্মম আক্রমণের মুখে বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতাদের পলায়ন এবং ঐ পার্টির শােচনীয় সাংগঠনিক অবস্থা দেশের যুবশক্তিকে নতুনভাবে চিন্তা করতে বাধ্য করে।
লিবারেশন ফ্রন্টে যে সমস্ত দল ইতিমধ্যেই অন্তর্ভুক্ত হয়েছে তাদের মধ্যে আছে আওয়ামী লীগের যুব সংগঠন, জাতীয় আওয়ামী পার্টির দুটি অংশ এবং দুটি কমিউনিস্ট পার্টি।
মহম্মদ তােহার নেতৃত্বে উগ্রপন্থীরা এই ফ্রন্টে সামিল হতে রাজি হয়নি। এই উগ্রপন্থীরা চীনের লাইন অনুসরণ করে বলে জানা গেছে। চীন কমিউনিস্ট পার্টি বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের সম্পূর্ণ বিরােধী।
পিকিং রেডিও রােজ রাতে বাংলা এবং ইংরেজিতে বাংলাদেশের আন্দোলন সম্পর্কে চীনা দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপিত করে। পিকিং রেডিও মুক্তিযুদ্ধ অথবা পাক সৈন্যবাহিনীর গণহত্যা, নির্বিচারে বােমা ও গুলিবর্ষণ বিস্তীর্ণ এলাকায় অগ্নিসংযোেগ ও ধ্বংসলীলা সম্পর্কে কোনাে কথাই বলে না।
পিকিং রেডিওর প্রচার অনুযায়ী, পূর্ববঙ্গে বর্তমানে যা কিছু ঘটছে তা নিছক পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। চীনের অভিযােগ যে, ভারতীয় প্রতিক্রিয়াশীলরা নিজেদের প্রভুত্ব প্রসারের প্রয়াসে পূর্ববঙ্গে বিভিন্ন অংশে ভারতীয় সৈন্যবাহিনীকে সীমান্ত অতিক্রম করার আদেশ দিয়েছে। ভারতীয় সেনারা যে সীমান্ত অতিক্রম করেছিল পূর্ব পাকিস্তানের দুটি ভারতীয় সৈন্য গ্রেপ্তারে প্রমাণিত হয়েছে।’
পিকিং রেডিওর মতে ভারতীয় প্রতিক্রিয়াশীলদের এই সম্প্রসারণ উদ্যোগের পেছনে মার্কিন ও সােভিয়েত সাম্রাজ্যবাদের প্ররােচনা ও সক্রিয় সহায়তা আছে।
সূত্র: দর্পণ
২৩.০৪.১৯৭১