You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.04.30 | পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি গেরিলা যুদ্ধ চালাচ্ছে | দর্পণ - সংগ্রামের নোটবুক

পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি
গেরিলা যুদ্ধ চালাচ্ছে

বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম সংগঠিত আকার নিচ্ছে। মুক্তিকামীরা আবেগের পরিবর্তে সংগঠিত শ্রমিক ও কৃষকের নেতৃত্ব এগিয়ে এসেছে এই সংগ্রামকে সঠিক রাজনীতির ভিত্তিতে গেরিলা যুদ্ধের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
এখানে বলা প্রয়ােজন যে, সংগঠিত শ্রমিক শ্রেণী চট্টগ্রাম বন্দরে সৈন্যবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নেমে পড়ে শেখ মুজিবরের নির্দেশ পালন করার জন্য। মুজিবরের নির্দেশ ছিল যে, বন্দরের শ্রমিকরা কোনাে মতেই সৈন্য ও যুদ্ধাস্ত্রবাহী জাহাজ খালাস করবে না।
নির্দেশ আসার সঙ্গে সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের পঞ্চাশ হাজার ডক শ্রমিকের এক বিরাট সভা হয়। সভাপতির আসন শূন্য থাকে। শ্রমিক নেতা বসরের সভাপতিত্ব করার কথা। পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির নেতা হিসেবে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরােয়ানা থাকায় তাঁর পক্ষে সভায় হাজির থাকা সম্ভব হয়নি। সভা সভাপতির আসন খালি রেখে এই কথা জানায় যে, তিনি সশরীরে উপস্থিত না থাকলেও তার সংগ্রামী নেতৃত্ব হাজির।
সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, সংঘর্ষ হলেও মুজিবরের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালিত হবে। যুদ্ধাস্ত্র ও সৈন্য নামাতে পারবে না। সঙ্গে সঙ্গে পাকি সৈন্যবাহিনীর আক্রমণ শুরু হয়। এইখানেই প্রথম বেঙ্গল রেজিমেন্ট বিদ্রোহ ঘােষণা করে। শ্রমিক ও এই রেজিমেন্টের সৈন্যদের যুক্ত প্রতিরােধে পাক সৈন্যেরা প্রথম অবস্থায় বিধ্বস্ত হয়ে যায়। তখন অপেক্ষমান জাহাজ থেকে গােলা ছোড়া শুরু হয়।
পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি পরিচালিত শ্রমিক ফেডারেশন এবং কৃষক সংগঠন বগুড়া, নােয়াখালি, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ ও পাবনায় গেরিলা যুদ্ধে নেমেছে। নেতৃত্বে আছেন আবদুল মতিন, আলাউদ্দীন আহমেদ, সমন্বয় কমিটির জাফর মেনন, আবদুল জব্বার খান, টিকু (টিপু) বিশ্বাস, তপন চৌধুরী, দেবেন সিকদার, আবুল বাসার, সিরাজুল ইসলাম, মােহন নবী ইত্যাদি।
এঁরা সকলেই চেষ্টা করছেন বাংলাদেশব্যাপী একটি সংগ্রামী জাতীয় নেতৃত্ব সংগঠনের। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাদের সঙ্গে আলােচনা চলছে কীভাবে সংগ্রামকে ব্যাপক ও সংগঠিত করা যায়।

সূত্র: দর্পণ
৩০.০৪.১৯৭১