ফাইনানশিয়াল টাইমস, লন্ডন, ২৭ অক্টোবর ১৯৭১
নিরস্ত্র বাঙ্গালীদের উপর অত্যাচার অব্যাহত
ঢাকা থেকে পি প্রতিবেদন
সামরিক শাসন এর সত্ত্বেও অস্বীকার, পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং পুলিশ সাধারণ নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক বর্বরতা চালিয়ে যাচ্ছে। যেখানে মুক্তিবাহিনী থাকতে পারে সন্দেহ হচ্ছে এমনকি ঢাকা শহরের মাঝখানে নতুন বেসামরিক গভর্নরের বাসভবনে এসব চলছে। জানা যায় আমেরিকান সরকারও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে এটা বন্ধ করতে বলছে যাতে শরনার্থিরা ফিরে আসার ব্যাপারে আশা পায়। ২৫ মার্চ পাকসেনাদের অপারেশনের পড় থেকে এবং আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেফতার হবার সময় থেকে ৭৫ মিলিয়নের বাংলাদেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে থেকে দেয়।
সূত্র জানায় আমেরিকান কংগ্রেসম্যান পিটার এইচ বি ফ্রিলিং হুসেন (রিপাবলিক .. নিউ জার্সি) বলেন যখন তিনি পাকিস্তান সফর করতে চলতি মাসে রাওয়ালপিন্ডিতে যান তিনিত সামরিক নেতা প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান কে নিরস্ত্র ব্যাক্তিদের ওপর হামলা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন এবং থামাতে অনুরোধ করেন।
সূত্র জানায়, প্রেসিডেন্ট অস্বীকার করে বলেন গুলিবর্ষণে বন্ধ আছে এবং ঘটনাক্রমে কোথাও হতে পারে। প্রতিহিংসামূলকভাবে নারায়ণগঞ্জের দয়াগঞ্জে , নদীবন্দর থেকে ঢাকা রেল লাইনের সংযোগ পথ থেকে ১১ মাইল দূরে ২০০ বর্গ গজ এলাকা পুড়িয়ে দেয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীর মতে সেনা, পুলিশ এবং “রাজাকার” রা ঘরবাড়ি ও মানুষের কয়েক ডজন শট স্কোর জ্বালিয়ে দেয় এক সপ্তাহ আগে । এক ঘন্টা পরে মুক্তিবাহিনী সন্দেহে ধারণা করা দু’জন লোককে দিনের আলোতে ছয় সৈন্য গুলি করে হত্যা করে। যারা বেঁচে গেছেন তারা জানান প্রতিহিংসার শিকার হয়ে অন্তত ৫০ ব্যক্তি নিহত হয় এবং অনেকে আহত হয়। স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র নিয়ে এসব বাহিনী ঘোরে ঘোরে ঢুকে গুলি চালাচ্ছিল এবং ঘর থেকে বাইরে এসে জ্বালিয়ে দিচ্ছিল।
উঁচু এক সেতু থেকে কমপক্ষে ৬০ জনকে মাটিতে ফেলে দেয়া হয়েছে বলে জানান। বাসিন্দারা জানিয়েছেন দোকানদার, শ্রমিক, এবং ছোট ছোট সরকারি কর্মকর্তাদের ৩০০ ঘর পালিয়ে গেছে। ‘কোন মুক্তিবাহিনী ছিলনা যখন সেনাবাহিনী আসে “, এক সরকারি কর্মকর্তা জানান। ‘’আমি একজন সরকারী কর্মচারী এবং আমি আপনাকে বলছি কোন ব্যক্তি কাছে কোন অস্ত্র ছিলোনা’’ বাসিন্দারা নির্দ্ধিধায় হামলা সম্পর্কে এ পি কে বলেন। কাছের একটি রেল সেতু তে সশস্ত্র রক্ষিবাহিনী ছিল। তারা নদী পাড় হচ্ছিল – কিন্তু তাদের নাম তারা জানাতে রাজি হয়নি প্রকাশনার ভয়ে।
নতুন বাঙ্গালী সরকারী গভর্নর কর্মচারি ডাঃ এ এম মালিকের বাসা বাসা থেকে ৩ মাইন দূরে ঘর পোড়ার দৃশ্য, কোঁকড়ানো টিনের চাল দেখা যাচ্ছিল ২৫ মার্চ ঢাকা আক্রমণের সময়। ব্রিজ গার্ড জানায় মুক্তিবাহিনী অন্তত চার সেনা নিহত করে এবং ২ জন আহত হয়। আক্রমণকারীরা তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। ঘটনা সময় অনেক গুলি বিনিময় হয় এবং অধিবাসীদের একজন বলেন রাজধানী শহর জুড়ে রাত্রিকালীন প্রায় সব সময় এমন ঘটনা ঘটমান থাকে। দয়াগঞ্জের বাড়িতে এখনো রক্ত মাখা দেয়াল, মেঝে, এবং বেয়নেটের খোঁচায় তাদের বাঁশ দরজা এবং দেয়ালে চিনহ লেগেছিল। সেনা পক্ষের তাৎক্ষণিকভাবে কোন মন্তব্য ছিল না কিন্তু কর্মকর্তা বলেন যখন তাদের উপর ফায়ার হয় তখন তাদেরকে শুধু মাত্র গুলি করতে বলা হয়েছে।