You dont have javascript enabled! Please enable it!

বীর উত্তম লে. সামাদ যেভাবে শহীদ হয়েছিলেন

ক্যাপ্টেন (মুজাহিদ) আজিজুল হক, বীরপ্রতীক

মনে হচ্ছে এই তো সেদিন, আমরা স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করলাম। দেখতে দেখতে ২৯টি বৎসর কেটে গেল। স্বাধীন বাংলাদেশে চোখ দুটি একটু অন্ধ করলে ভেসে উঠে স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতিময় দিনগুলোর কথা। যুদ্ধের প্রতিটি দিন ছিল এক একটি স্মৃতিময় দিন। মনের স্মৃতিতে গাঁথা রয়েছে অনেক কথা, যা এখনও মাঝে মাঝে চোখের সামনে ভেসে উঠে। ১৯৭১ সালের ২০ নভেম্বরের যুদ্ধকালীন সময়ের এমনি একদিনের স্মৃতি—যা আমার মনে আজও দাগ কেটে চলছে। ১৯৭১ সালের অক্টোবর মাসের শেষের দিকে ৬নং সেক্টরের সাব-সেক্টর সাহেবগঞ্জে হেড কোয়ার্টার মুক্তিযোদ্ধা অফিসার ব্যাচের ট্রেনিং শেষ করে দু’জন সেকেন্ড লেফটেন্টে যোগ দেয়। তারা দু’জন বয়সে ছিল তরুণ যুবক। দু’জনের পরনে ছিল জিন্সের প্যান্ট, জিন্সের শার্ট। পায়ে ছিল জঙ্গল-সু। একজনের নাম আব্দুল্লাহ্ অপর জনের নাম ছিল সামাদ। লে, সামাদ দেখতে ছিল লালচে ধরনের ফর্সা। তার মুখমণ্ডলে ছিল খোঁচা খোঁচা দাড়ি আর লালচে গোফ। লে, আব্দুল্লাহ্ সাবহেডকোয়ার্টারে (সাহেবগঞ্জ) থেকে যায়। আর লে. সামাদ সরাসরি ডিফেলে চলে আসে। লে. সামাদ ছিলেন অত্যন্ত দূরন্তপনা ও সাহসী যুবক। যুদ্ধকালীন সময়ে আমাদের খাওয়া দাওয়ার ঠিক ঠিকানা ছিল না। হয়তো একই রকমের খাবার একাধিক দিন খেতে হচ্ছে। লে. সামাদের সঙ্গে খেতে বসে দেখেছি তিনি মাছ পছন্দ করতেন না। মাছ খেতে তার বড় কষ্ট হতো। কিন্তু কোনও উপায় ছিল না আমাদের। খেয়ে না খেয়ে এমনিভাবে কাটতে থাকে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলো। ১৯৭১ সালের অক্টোবর-নভেম্বর মাসে চলছে পুরোদমে মুক্তিযুদ্ধ। প্রতিদিনই আমরা কোনও না কোনও অপারেশনে অংশ নিচ্ছি। একটি মজার ব্যাপার হচ্ছে যুদ্ধের সময় প্রতি রাতে গোলার আওয়াজ না শুনলে সে রাত ভালো ভাবে কাটতে চাইতো না। আমাদের কানে গোলার আওয়াজ আসলেই লে, সামাদ ব্যাংকার থেকে উঠে দেখতো কোথায় গোলা পড়ছে। আমরা বার বার তাকে নিষেধ করতাম—এভাবে দেখা ঠিক নয়। এতে বড় ধরনের বিপদ হতে পারে। এ ধরনের নিষেধ প্রতি উত্তরে (সামাদ) বলতেন গোলা কোথায় পড়ছে ও শব্দ শুনতে খুব ভালো লাগে। আরো বলতেন যুদ্ধে এসে ভয় করলে চলে। যুদ্ধকালীন সময়ে একদিন সকালে আমাদের ব্যাংকারের ২০/২৫ গজ দূরে ৬ ইঞ্চি মর্টারের একটি গোলা এসে পড়েছিল। সে সময় আমাদের সবার কান একেবারে স্তব্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। ১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসের ১২ কিংবা ১৩ তারিখে আমাকে পাঠানো হয় ভারত বাংলাদেশের সীমান্ত সংলগ্ন কুড়িগ্রাম জেলাধীন ভুরুঙ্গামারী উপজেলার চৌধুরীর হাটের কাছে সন্তোষপুর নামক জায়গায়। এ এলাকায় অপারেশনের জন্য আমাকে দায়িত্ব দেয়া হয়। আমাকে মোটর সাইকেল করে পৌছে দেন সাব-সেক্টরের ডা. মেজর এম. এম হোসেন (পরবর্তীতে মেজর জেনারেল) সাহেবের শ্যালক মুক্তিযোদ্ধা বাবু। ৭১’র নভেম্বর মাস ছিল পবিত্র রজমান মাস। ফলে অনেক মুক্তিযোদ্ধাই রোজা রেখে যুদ্ধ করছিলেন। অনেকে রোজা রাখতে পারে নাই, এ দলের মধ্যে আমিও একজন ছিলাম। যুদ্ধের মধ্যেই রোজা শেষ হয়ে গেল। ১৯৭১ সালের ২০ নভেম্বর ছিল পবিত্র ঈদুল ফিতর। পবিত্র ঈদের দিনটিতে সকল মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে ঈদের নামাজ পড়ব—এ ইচ্ছা নিয়ে আমি ভারতের সাহেবগঞ্জে আমাদের ক্যাম্পে চলে আসি। কুচবিহার জেলার দিনহাটা মহকুমার সাহেবগঞ্জ ছিল ৬ নং সেক্টরের একটি সাবসেক্টর। ৬নং সেক্টরের হেডকোয়ার্টার ছিল লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে। ঈদের নামাজ পড়ার জন্য আমি সাহেবগঞ্জ এসে জানতে পারি ২০ নভেম্বর ভোরে (ঈদের দিন) সাহেবগঞ্জ সাব-হেডকোয়ার্টারের অদূরে রায়গঞ্জে পাকসেনাদের সঙ্গে সম্মুখ লড়াই হয়েছে। সারা রাত ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে প্রবল গুলি বিনিময় হয়েছে। ঈদের নামাজের জন্য আমরা যখন চূড়ান্তভাবে তৈরি হচ্ছি, ঠিক এমন সময় খবর পেলাম আমাদের এক অফিসার লেফটেনেন্ট সামাদ যুদ্ধের ময়দানে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হয়েছেন। কিন্তু তার লাশ আনার জন্য কেউ তার লাশের নিকট যেতে পারছে না। পা সেনারা ক্যানেলের উপরে অবস্থান নিয়েছে এবং মাঝে মাঝে গুলি ছুড়ছে। এরই মধ্যে একজন সাহসী মুক্তিযোদ্ধা তরুণ যুবক সম্ভবত তার নাম লুত্যর রহমান, সে তার জীবন বাজী রেখে লে. সামাদের নিহত দেহটি নিয়ে আসল। ক্রলিং করে লাশের পাশে গিয়ে লে, সামাদের লাশ পিঠে ফেলে নিয়ে আসার পর দেখলাম—দেহের কোথাও গুলি বা আঘাতের চিহ্ন নেই। মাথায় একটি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেল। এটাই তার মৃত্যুর কারণ। লে. সামাদের সঙ্গে একই ব্যাংকারে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এমদাদুল হক খন্দকার (বাবু)। তার নিকট জানতে পারি লে, সামাদের শাহাদৎ বরণের ঘটনা। রায়গঞ্জে যখন ক্যানেলের ওপাশ থেকে খান সেনারা বৃষ্টির মতো গুলি ছুড়ছে তখন ব্যাংকার থেকে লে. সামাদ ওয়াকিটকি দিয়ে লে. আব্দুল্লাহর নিকট ম্যাসেজ পাঠায়’ “আব্দুল্লাহ তুমি তোমার টিমকে নিয়ে এ্যাডভ্যান্স কর”। এমন সময় লে. সামাদ ওয়াকিটকি নিয়ে একটু মাথা তুলতেই শত্রুর বুলেট এসে তার মাথায় বিদ্ধ হয়। লে. সামাদ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। | আর কিছু বলতে পারে নাই। এ কথা বলতে বলতে মুক্তিযোদ্ধা বাবু হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে। তিনি চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে বলতে থাকে—আমি আমার এক ভাইকে হারালাম, তার জন্য কিছুই করতে পারলাম না। লে. সামাদের মৃত্যুতে আমরা সকলেই মর্মাহত হয়ে পড়েছিলাম। ঈদের আনন্দ আমাদের মাঝে শোকে পরিণত হলো। ঈদের নামাজ পড়া আর হলো না। সাব-সেক্টর কমান্ডার মেজর নয়াজেস উদ্দিন সাহেব লে. সামাদের লাশ দাফনের সমস্ত দায়িত্ব আমার উপর দিয়েছিলেন। তখন উক্ত এলাকায় পাক বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলি চলছিল। এলাকার লোকজন ঘর বাড়ি ফেলে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছে। ফলে গ্রাম গুলো ছিল জনশূন্য। আমরা কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা অনেক খোঁজ করে একজন ইমাম সাহেবকে পেলাম। তিনি জানাযা পড়ালেন। জয়মনিরহাট মসজিদের পাশে লে. সামাদের লাশ কবরস্থ করা হলো। বর্তমান কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার জয়মনিরহাট মসজিদের পাশে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা লে. সামাদের মাজারটি অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। আমি যতদিন বেঁচে থাকব ততদিন এ কথা আমার মনের স্মৃতিতে ভেসে উঠবে। মুক্তিযুদ্ধে কি কষ্টটাই না করেছি। লে. সামাদের দাফনের জন্য কাফনের কাপড় পর্যন্ত মেলেনি। গোসল ছাড়াই জিন্সের প্যান্ট শার্ট পরিহিত অবস্থাতেই আমরা তার জানাযা শেষে তাকে কবরস্থ করলাম। জানাযা পড়ার আগে পাথরের মতো দাঁড়িয়ে ছিল লে. আব্দুল্লাহ্। তার চোখ থেকে পানি পড়ছে অনবরত। সে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য। লে. আব্দুল্লাহকে সান্তনা দেওয়ার মতো ভাষা তখন আমার ছিল না। তিনি (আব্দুল্লাহ্) হয়তো ভাবছেন” এক সঙ্গে ট্রেনিং শেষে স্বাধীনতা যুদ্ধে এসেছিলাম, আমি বেঁচে রইলাম আর সহযোদ্ধা আমাকে ছেড়ে চলে গেল।” লে, সামাদের জিন্সের পকেটে কিছু কাগজপত্র ছিল। সে সব কাগজপত্র লে. আব্দুল্লাহ্ বের করে নিলেন ও লে. সামাদের পা থেকে জঙ্গল-সু জোড়া খুলে নিলেন। তাকে দাফন করে আমরা নিজ নিজ পোস্টে চলে গেলাম। যুদ্ধ আস্তে আস্তে অগ্রগতির দিকে চলছে। মুক্তিযযাদ্ধাদের আক্রমণের ভয়ে হানাদার বাহিনী পালিয়ে যাচ্ছে। কয়েকদিনের মধ্যে কুড়িগ্রাম এলাকা শত্রুমুক্ত এলাকা ঘোষণা হলো। ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম স্বাধীন হলো। লে. সামাদের নামে জয়মনিরহাটের নামকরণ করা হলো “সামাদ নগর”। এভাবে শত মুক্তিযোদ্ধা তরুণের রক্তে আমাদের দেশ ১৬ ডিসেম্বর ‘৭১-এ স্বাধীন | দেশ হিসেবে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠা পেল। আমরা পেলাম সবুজ জমিনের উপর লাল টুকটুকে সূর্য খচিত পতাকা। এ পতাকায় দেশের মুক্তিযোদ্ধার রক্তে রঞ্জিত হয়ে স্বাধীনভাবে ৩০ বছর ধরে পত পত করে উড়ছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় গোটা বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করে যুদ্ধ পরিচালনা হয়েছিল। এর মধ্যে শুধুমাত্র ৬নং সেক্টরের হেড কোয়ার্টারটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মুক্ত বাংলাদেশের মাটিতে। এলাকাটি লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে। বাকী ১০টি সেক্টরের সকল হেড কোয়ার্টার ছিল ভারতের বিভিন্ন কাঁদতে থাকে। তিনি চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে বলতে থাকে—আমি আমার এক ভাইকে হারালাম, তার জন্য কিছুই করতে পারলাম না। লে. সামাদের মৃত্যুতে আমরা সকলেই মর্মাহত হয়ে পড়েছিলাম। ঈদের আনন্দ আমাদের মাঝে শোকে পরিণত হলো। ঈদের নামাজ পড়া আর হলো না। সাব-সেক্টর কমান্ডার মেজর নয়াজেস উদ্দিন সাহেব লে. সামাদের লাশ দাফনের সমস্ত দায়িত্ব আমার উপর দিয়েছিলেন। তখন উক্ত এলাকায় পাক বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলি চলছিল। এলাকার লোকজন ঘর বাড়ি ফেলে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছে। ফলে গ্রাম গুলো ছিল জনশূন্য। আমরা কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা অনেক খোঁজ করে একজন ইমাম সাহেবকে পেলাম। তিনি জানাযা পড়ালেন। জয়মনিরহাট মসজিদের পাশে লে. সামাদের লাশ কবরস্থ করা হলো। বর্তমান কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার জয়মনিরহাট মসজিদের পাশে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা লে. সামাদের মাজারটি অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। আমি যতদিন বেঁচে থাকব ততদিন এ কথা আমার মনের স্মৃতিতে ভেসে উঠবে। মুক্তিযুদ্ধে কি কষ্টটাই না করেছি। লে. সামাদের দাফনের জন্য কাফনের কাপড় পর্যন্ত মেলেনি। গোসল ছাড়াই জিন্সের প্যান্ট শার্ট পরিহিত অবস্থাতেই আমরা তার জানাযা শেষে তাকে কবরস্থ করলাম। জানাযা পড়ার আগে পাথরের মতো দাঁড়িয়ে ছিল লে. আব্দুল্লাহ্। তার চোখ থেকে পানি পড়ছে অনবরত। সে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য। লে. আব্দুল্লাহকে সান্তনা দেওয়ার মতো ভাষা তখন আমার ছিল না। তিনি (আব্দুল্লাহ্) হয়তো ভাবছেন” এক সঙ্গে ট্রেনিং শেষে স্বাধীনতা যুদ্ধে এসেছিলাম, আমি বেঁচে রইলাম আর সহযোদ্ধা আমাকে ছেড়ে চলে গেল।” লে, সামাদের জিন্সের পকেটে কিছু কাগজপত্র ছিল। সে সব কাগজপত্র লে. আব্দুল্লাহ্ বের করে নিলেন ও লে. সামাদের পা থেকে জঙ্গল-সু জোড়া খুলে নিলেন। তাকে দাফন করে আমরা নিজ নিজ পোস্টে চলে গেলাম। যুদ্ধ আস্তে আস্তে অগ্রগতির দিকে চলছে। মুক্তিযযাদ্ধাদের আক্রমণের ভয়ে হানাদার বাহিনী পালিয়ে যাচ্ছে। কয়েকদিনের মধ্যে কুড়িগ্রাম এলাকা শত্রুমুক্ত এলাকা ঘোষণা হলো। ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম স্বাধীন হলো। লে. সামাদের নামে জয়মনিরহাটের নামকরণ করা হলো “সামাদ নগর”। এভাবে শত মুক্তিযোদ্ধা তরুণের রক্তে আমাদের দেশ ১৬ ডিসেম্বর ‘৭১-এ স্বাধীন | দেশ হিসেবে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠা পেল। আমরা পেলাম সবুজ জমিনের উপর লাল টুকটুকে সূর্য খচিত পতাকা। এ পতাকায় দেশের মুক্তিযোদ্ধার রক্তে রঞ্জিত হয়ে স্বাধীনভাবে ৩০ বছর ধরে পত পত করে উড়ছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় গোটা বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করে যুদ্ধ পরিচালনা হয়েছিল। এর মধ্যে শুধুমাত্র ৬নং সেক্টরের হেড কোয়ার্টারটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মুক্ত বাংলাদেশের মাটিতে। এলাকাটি লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে। বাকী ১০টি সেক্টরের সকল হেড কোয়ার্টার ছিল ভারতের বিভিন্ন এলাকায়। উল্লেখ্য যে, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ৬নং হেড কোয়ার্টারটি ছিল শত্রুমুক্ত। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরােধের মুখে পাকবাহিনী এ এলাকায় প্রবেশ করতে পারেনি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ জানাই যে, একজন শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতিস্বরূপ রংপুর ক্যান্টনমেন্টে একটি স্কুলের নামকরণ করা হয়েছে। “শহীদ লে. সামাদ স্কুল” নামে। কিন্তু, স্বাধীনতার ৩০ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও ৬নং সেক্টরে কোনো স্মৃতিসৌধ তৈরি হয়নি। এখানে একটি স্মৃতিসৌধ তৈরি করে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা দেওয়ার জোর দাবী জানাচ্ছি। সে সাথে খেতাব প্রাপ্তদের নামের তালিকাও যেন ৬নং সেক্টরের হেড কোয়ার্টারে স্থান পায়।

ক্যাপ্টেন (মুজাহিদ) মো. আজিজুল হক, বীর প্রতীক জন্ম : ১ এপ্রিল ১৯৪৫, লালমনিরহাট। শিক্ষা : লালমনিরহাট গভর্নমেন্ট হাই স্কুল। প্রাইভেট পরীক্ষা দিয়ে এইচ এসসি পাশ। ১৯৬৫ সালে মুজাহিদ বাহিনীতে ভর্তি। ১৯৬৮ সালে ক্যাপ্টেন পদে উন্নীত। একাত্তরে ৬ নম্বর সেক্টরের সাহেবগঞ্জ সাব-সেক্টরে যুদ্ধ করেন বীরত্বের সাথে। তার সাহসিকতা ও অবদানের জন্য সরকার তাকে বীর প্রতীক’ উপাধিতে ভূষিত করে। স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে ১৪ ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট গঠন প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত থেকে কোয়াটার মাস্টারের দায়িত্ব পালন করেন।

রেফারেন্স – স্বাধীনতা ৩ – মেজর কামরুল হাসান ভুঁইয়া

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!