You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.10.23 | ৫ কার্তিক ১৩৭৮ শনিবার ২৩ অক্টোবর ১৯৭১ | একাত্তরের দশ মাস - রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী - সংগ্রামের নোটবুক

৫ কার্তিক ১৩৭৮ শনিবার ২৩ অক্টোবর ১৯৭১

-এদিনে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, ৪ জন পদস্থ সামরিক অফিসারকে নিয়ে উত্তর কোরিয়ার একটি সামরিক দল গোপনে পাকিস্তান সফর করেছে (সেপ্টেম্বর ৯)প্রতিবেদনে আরো বলা হয় প্রতিনিধি দলে যাত্রার পূর্বে (২৫ আগষ্ট) উত্তর কোরিয়া পাকিস্তানে এক জাহাজ অস্ত্রশস্ত্র প্রেরনকরে। (সংবাদপত্র)

-পাকবাহিনী পশ্চিম ফ্রন্টের সম্ভাব্য রণাঙ্গনগুলোতে সৈন্য সমাবেশ শুরু করে। (১০:২৯০)

-সোভিয়েত কর্তৃপক্ষ মার্কিন সরকারের জানিয়ে দেনঃ শেখ মুজিবের মুক্তি এবং পূর্ব পাকিস্তানে দ্রুত রাজনৈতিক নিস্পত্তি সাধন ব্যতীত কেবল সীমান্ত অঞ্চল থেকে ভারত ও পাকিস্তানের সৈন্য প্রত্যাহারের মাধ্যমে যুদ্ধের আশঙ্কা রোধ করা সম্ভব নয়। (দি নিউইয়র্ক টাইমস অক্টোঃ ২৬:৭১)

-ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরাগান্ধী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ফ্রান্স, পশ্চিম জার্মানী বৃটেন বেলজিয়াম এবং অষ্ট্রেয়ার তিন সপ্তাহের সফরে বেরোন। তিনি তাঁর মিশনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিলে বর্তমান পরিস্থিতিতে উপমহাদেশের বাস্তব সম্পর্কে বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে অবহিত করারনোর প্রয়োজনে তিনি বেরিয়েছেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নোত্তরে শ্রীমতি গান্ধী বলেন’ চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবার বিষয়টি তো আমাদের হাতেই। যেহেতু পরিস্থিতি অত্যন্ত মারাত্মক ভারতকে উচিত হবে না ক্রোধের বশবর্তী হয়ে অথবা তাড়াহুড়োর মধ্যে কিছু বলা বলি করা।

তিনি ইয়াহিয়া খানে সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা ও ব্যক্ত করেন এবং দু’টি দেশ যে সমস্যার সম্মুখীন তা নিয়ে আলোচনায় বসতেও চান।

লন্ডন অবজারভার এ জন গ্রিগ (John Grigg) মন্তব্য করেনঃ Mrs Gandhi is a dove with sharp claws. It her efforts to find a peaceful solution failed she would nor shrink from war”

-পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো লাহোর বলেন, ভয়ভীতী প্রদর্শন অব্যাহত থাকলে পূর্ব পাকিস্তানের উপ-নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে তাঁর দলের পার্থীদের প্রত্যাহার করে নেয়া হবে।

-মুক্তিবাহিনী কসবা সীমান্তের বেশ কিছু এলাকায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। যশোর, বগুরা, ময়মনসিংহ, রংপুর নীলফামারী ও ব্রাক্ষণবাড়িয়ার মুক্তিবাহিনী ও সেনাবাহিনীর মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়।

-করাচী পিপলস পার্টির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় যে জামাতে ইসলামী পূর্ব পাকিস্তানে যুদ্ধংদেহী ভূমিকা পালন করছে। তারা আপত্তিকর ও জনগনে মনোভাব বিরুদ্ধ কার্যকলাপে লিপ্ত রয়েছে।

-ভারতে প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী জাতির উদ্দেশ্যে এক বেতার ভাষণে বর্তমান সংকটপূর্ণ পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য জন্য জনগণকে সংযত ঐক্য শৃংখলাবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।

-অবরুদ্ধ বাংলাদেশ সামরিক সরকার পনেরজন প্রার্থীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত করেছেন। এদের মধ্যে ৫ জন পিডিপি ৫ জন জামাত-ই ইসলামী, দুই জন কনভেনশন মুসলীম লীগ, ২ জন নেজামে ইসলামী ও ১ জন কাইয়ুম লীগের। নির্বাচিত প্রার্থীরা হলেনঃ পি ডিপির সর্বজনাব সৈয়দ আজিজুল হক, সৈয়দ মোসলেহ উদ্দিন দলিলুর রহমান, মোহাম্মদ নুরুল্লাহ, ফজলুল হক। জামাতে ইসলামীর সর্বজনাব সাদ আদমেদ, আব্দুল মতিন, অধ্যাপক ইউসুফ আলী মতিউর রহমান শাহ, জবান উদ্দীন আহমদ। কনভেশন মুঃলীঃ সর্ব জনাব মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, এম এ মতিন, নেজামে ইসলামী জনাব আশরাফ আলী, আবদুল হক, কাইয়ুম মুঃ লীগের জনাব মুজিবুর রহমান।

-সামরিক সরকারের বেসামরিক গর্ভনর ডাঃ মালিক এ এফ পি প্রতিনিধিকে বলেন, এখানকার অস্বাভাবিক অবস্তায় সন্তোষজনক নির্বাচিত হতে পারে না। এটা শাসন ব্যবস্থাকে আবার চালু করার পক্ষে সহায়ক হবে। তিনি বলেন পূর্ব পাকিস্তানের সব কটি দলেরেই বে- আইনী ঘোষিত আওয়ামী লীগের ৬ দফার অনুরূপ অর্থনৈতিক ও সামাজিক কর্মসূচী রয়েছে। (দৈঃ পাঃ ৭: ৫৮৯)

Reference:

একাত্তরের দশ মাস – রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী