যে শুয়েই আছে মাটিতে সে আর পড়বে কোথায়
১১ নম্বর সেক্টরের যােদ্ধা মাহবুব এলাহী রঞ্জু। বাড়ি গাইবান্ধা শহরে। একাত্তরের মার্চে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্ট্যাটিস্টিকসের ১ম বর্ষ সম্মানের ছাত্র। একাত্তরের ১৭ এপ্রিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী গাইবান্ধা শহরে প্রবেশ করে। রঞ্জুরা ৭ জন যমুনা নদী পাড়ি দিয়ে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের তুরায় পৌছে ২২ এপ্রিল। জুনের প্রথমে সেখানে চার সপ্তাহের প্রশিক্ষণ শেষে একটি গণযােদ্ধা কোম্পানির অধিনায়কত্ব পান। সাহসে, সৌকর্যে এবং সংসিদ্ধ যােদ্ধা হিসেবে বিজয়ের পর বীর প্রতীক উপাধিতে ভূষিত হন। গাইবান্ধা জেলার অপর বীর প্রতীক এটিএম খালেদ (দুলু) ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অবস্থায় যুদ্ধ করেন। স্বাধীনতার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষে অনুল্লেখ্য এক ব্যবসা শুরু করেন, একটু সচ্ছলতার আশায়। ১৯৮০ সালে কোন কুলাঙ্গার যেন তাকে গুলি করে হত্যা করে। রঞ্জু ছাত্রজীবনে রাজনীতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করে পানি উন্নয়ন বাের্ডের ঠিকাদারি কাজে লেগে যান। কাজ পান না। পানি উন্নয়ন বাের্ডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বীর প্রতীক’-এর কাছে উপরি চাইতে শরম লাগে। বাস্তবতা উপলব্ধি করে র কৌশল বদলান। অন্যের মারফতে কর্তাব্যক্তিদের উপরি পাঠান। জীবনে তখনই কিছু কাঁচা পয়সা আসে। প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাস, অক্লান্ত পরিশ্রম এবং বিরল। সততা নিয়ে স্বচ্ছ কাচের ব্যবসা করছেন রঞ্জু। শুরুতে ভালাে করলেও বর্তমানে সচ্ছলতা নেই। আজকের বাংলাদেশ সহজ সরল পথ’-এর দেশ নয়। তবুও স্বভাবজাত হাসিটি মুখে তার লেগেই আছে। প্রায়ই বলেন, গাইবান্ধা ফেরত চলে। যাবেন। আমি জানি, এ তার কথার কথা। আমি তাকে চিনি ভেতর-বাহির। মুক্তিযােদ্ধাদের মধ্য থেকে বিদ্বান ব্যক্তি, বড় চাকরিজীবী, বিত্তশালী ব্যবসায়ী, নামি ব্যক্তিত্ব, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকসহ খ্যাতিমানদের খোজ নেন। সবার বিবরণ দিয়ে গর্বের সঙ্গে বলেন, দেখেন কামরুল ভাই, মুক্তিযােদ্ধারাও ভালাে আছে। গর্বে উদ্ভাসিত তার চেহারা দেখে খুব ভালাে লাগে আমার। তারপর হৃদয়ের গভীর থেকে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন, একাত্তরের নয় মাস মুক্তিযােদ্ধারা এতাে কষ্ট করলাে; কিন্তু স্বাধীন দেশে তারা সুখের মুখ দেখলাে কই? সুখে আছে অন্যরা, আমরা আছি তাদের। দয়া আর দাক্ষিণ্যে। রঞ্জু ভাইয়ের অন্তরভরা কষ্ট আর হাসিমাখা মুখটি দেখে আমি বেজার হই না। তার সঙ্গে আমিও কষ্ট করে মুখে হাসি টানি।
মােহাম্মদ আলী আশরাফ ময়মনসিংহের ছেলে। যুদ্ধ করেছে ১১ নম্বর সেক্টরের মাইনকারচর সাব-সেক্টরে। ৬ অক্টোবর গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর থানা দখল করে স্বভাবতই বিজয়ের আনন্দে ফিরছিল মুক্তিযােদ্ধারা। বল্লমঝাড় গ্রামের রাস্তার একেবারে নিকট-দূরত্বে পাকিস্তানিরা অ্যাম্বুশ অবস্থানে প্রস্তুত, মুক্তিযােদ্ধাদের কল্পনায়ও তা ছিলাে না। আশরাফসহ তিন সহযােদ্ধা মারাত্মকভাবে আহত হয়ে অদূরে গ্রামের একটি ঘরে আশ্রয় নেয়। পাকিস্তানি সৈন্যরা যেন আশরাফকদের। অবস্থান জানতে না পারে, গ্রামের মেয়েরা মুহূর্তে কলস কলস পানি ঢেলে রক্তের দাগ ধুয়ে দেয়। কিন্তু পাকিস্তানিরা ঠিকই পৌছে যায় তাদের ঘরে। আবার ওদের ওপর গুলি করে। মৃত্যু হয় ওমর ও ইসলামের। আশরাফের লাগে পাঁচটি গুলি। বুদ্ধি করে আশরাফ উর্দুতে কথা বলা শুরু করে। পাকিস্তানিরা বলে, ওকে মারিস না, ওকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অনেক তথ্য পাওয়া যাবে, ও উর্দু জানে। মৃত্যুতুল্য আঘাত নিয়ে বন্দি হয় আশরাফ। আশরাফের চিকিৎসা হয় মামুলি, অত্যাচার শুরু হয় অমানুষিক। এ কাহিনী কোনােদিন শেষ করতে পারেনি আশরাফ। ষাটের উপরে বয়স। বলতে বলতে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে। আমি আর শুনতে চাই না। আরেকদিন সে কাহিনী শেষ থেকে শুরু করি- কীভাবে পালালাে আশরাফ পাক পশুদের বন্দিদশা থেকে। আশরাফ কারও সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সময় খুব গর্ব করে নামের শেষে বীর প্রতীক’ বলে। কেউ শােনে, কেউ শােনে না। যারা শশানে তাদের কেউ বােঝে, কেউ বােঝে না। তাতে আশরাফের একাত্তরের অহংকারের কিছুই যায় আসে না। ছােটখাটো ঠিকাদারি করে আশরাফ। প্রতিষ্ঠানের কেরানিরাও তাকে করুণার চোখে দেখে। শরীরে পাকিস্তানিদের পাঁচটি গুলির দাগ দেখে না, সেগুলাে কাপড়ে ঢাকা।
রফিকুল ইসলাম ২ নম্বর সেক্টরের যােদ্ধা। বাড়ি মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া থানায়। একাত্তরের মুন্সীগঞ্জ সদরে অবস্থিত রামপাল হাইস্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র ছিলাে। গ্রামের ছেলে বলে হয়তাে একটু বেশি বয়সে লেখাপড়া করেছে। বয়স ১৭/১৮। ঢাকা-কুমিল্লা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক গজারিয়া এলাকার ওপর দিয়ে গেছে। এ পথ অতিক্রম করেছে একাধিক নদী। পথে তারাবাে, মেঘনা এবং দাউদকান্দি ফেরি। এই মহাসড়কটি পাকিস্তানিদের এ অঞ্চলের একমাত্র চলার মাধ্যম। সেক্টর কমান্ডার মেজর খালেদ মােশাররফ এবং অপারেশন অফিসার ক্যাপ্টেন এটিএম হায়দারের প্রিয় যােদ্ধা রফিক। তারা রফিককে গজারিয়ার থানা কমান্ডার নিয়ােগ দেন। রফিক তার সহযােদ্ধাদের নিয়ে পাকিস্তানিদের কখনও দু’পায়ের উপর দাঁড়াতে দেয়নি, তা। মাটিতে বা পানির উপরে জলযানে। কখনও ওদের গানবােট ডুবিয়েছে, কখনও শত্রুসহ ওদের লঞ্চ। কখনও ফেরি ডুবিয়েছে, কখনও পাকিস্তানি গাড়ির বহরে অ্যাম্বুশ করেছে। ওদিকে মেলাঘরে সেক্টর সদর দফতরে মেজর খালেদ মােশাররফ এবং ক্যাপ্টেন হায়দার প্রতিদিন অপেক্ষায় থাকতেন, কেন এখনও রফিকের কাছ থেকে যুদ্ধের সাফল্যের কোনাে খবর আসছে না। দেশ স্বাধীন হ’ল। লেখাপড়া তেমন এগােয় না রফিকের। তেহাত্তর সালের ১৫ ডিসেম্বর সরকার গেজেটের মাধ্যমে রফিককে বীর প্রতীক’ বীরত্ব উপাধি প্রদান করে। বয়সের চেয়ে বেশি বৃদ্ধ হয়ে গেছে রফিক। তার প্লাস্টিকের থালা, বাসন, বদনা তৈরির কারখানা লাভের মুখ না দেখতে দেখতে অর্থাভাবে বন্ধ হয়ে আছে। দিন কাটতে চায় না রফিকের। ১৯৬৫-র পাক-ভারত যুদ্ধের সময় ১ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট পশ্চিম পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের ভারত সীমান্ত বেদিয়ানে প্রতিরক্ষা অবস্থানে। ভারতীয় আক্রমণের মুখে পাঞ্জাবের রাজধানী লাহাের পতনের পর্যায়ে চলে যায়। ১ম ইস্ট বেঙ্গলের বঙ্গশার্দুলরা ভারতীয় আক্রমণ শুধু সক্ষমভাবে প্রতিহতই করেনি, তাদের প্রচুর। হতাহত করে। এ যাবত বাঙালিদের সম্বন্ধে পাকিস্তানিদের ধারণা ছিলাে, তারা ‘মাছখেকো’ এবং ‘অযােদ্ধা জাতি’। পঁয়ষট্টির যুদ্ধের পর তাদের যথাযথ উপলব্ধি ঘটে। গােটা পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে ১ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট সর্বাধিক সংখ্যক বীরত্ব উপাধি লাভ করে। সিপাই আবুল হাসেম পাকিস্তান সরকারের চতুর্থ বীরত্ব উপাধি ‘তাঘমায়ে জুরাত’ (টিজে) লাভ করে তার শৌর্য-বীর্য প্রদর্শনের জন্য। এরপর সিপাই আবুল হাসেমের নাম বদল হয়ে যায় হাসেম টিজে। দেশপ্রেম আর সাহস হাসেমের মজ্জাগত। মুক্তিযুদ্ধের সম্মুখ সমরেও হাসেম ছিলেন ব্যতিক্রমী যােদ্ধা। ৫ ডিসেম্বর সিলেটের কানাইঘাট যুদ্ধে কপালের ঠিক মাঝখানে মাইনের প্লিন্টারে মারাত্মকভাবে আহত হন তিনি।
যুদ্ধ শেষে বীর বিক্রম’ বীরত্ব উপাধি পান। অনারারি ক্যাপ্টেন হিসেবে অবসর গ্রহণ করেও কোনাে সম্মানজনক অবস্থানে নেই। সরকারের ভুল নীতিমালার কারণে সম্মুখ সমরে আহত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা যুদ্ধাহত ভাতা পান না (Freedom Fighters Welfare Foundation Gazette, Dated 7 August 1972)। যুদ্ধাহত ভাতা পান না নায়েব সুবেদার আবদুস সােবহান বীর প্রতীকও। ২৮ অক্টোবর ধলই বিওপির যুদ্ধে আটটি গুলিতে আহত হয়ে রক্তের মধ্যে ডুবেছিলেন তিনি। ধলই বিওপির যুদ্ধ দাঁড়িয়ে অবলােকন করছিলেন ভারতীয় ৪ কোর কমান্ডার লে. জেনারেল সগত সিং ও জেড ফোর্স। কমান্ডার লে. কর্নেল জিয়াউর রহমান। লে. জেনারেল সগত সিং সােবহানের মরণাপন্ন অবস্থা দেখে তার ব্যক্তিগত হেলিকপ্টারে তাকে আসামের মাসিমপুর সিএমএইচে পাঠান। ১ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কেউই সােবহান বাঁচবে বলে ভাবেনি। আল্লাহর রহমতে এবং সবার দোয়ায় সােবহান বেঁচে যায়। কোনােরকম সুস্থ হয়ে দেশে ফেরে ১০ জানুয়ারি, ১৯৭২। বীর প্রতীক’ নায়েব সুবেদার সােবহান। ২৩০০ টাকা মাসিক বেতনে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করতে এই সেদিনও ২০০২ সালে যখন আমার সাথে পরিচয় হয়। বয়স এখন সত্তরের কোঠায়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর থানার চরলনিয়া গ্রামে গরুর দুধ বিক্রি করে কোনােমতে বেঁচেবর্তে আছে। জাতীয় বীরদের বেঁচে থাকা! দিন দিন অশ্রুত হয়ে যাচ্ছি আমরা, মুক্তিযােদ্ধারা। এসব অনুরােধ পুরনাে। এ যাবৎ কেউ মনেও নেয়নি, মেনে নেয়ার তাে প্রশ্নই ওঠে না। ক, বারবার রাজনৈতিক বিবেচনায় মুক্তিযােদ্ধাদের তালিকা করা হয়েছে। ভােটার তালিকা কার্যক্রমের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সহায়তায় মুক্তিযােদ্ধাদের তালিকা প্রণয়ন করুন। সেনা, নৌ, বিমান বাহিনী, বাংলাদেশ রাইফেলস এবং পুলিশ বাহিনী তাদের মুক্তিযােদ্ধাদের তালিকা তৈরি করে রেখেছে। গণযােদ্ধাদের তালিকা প্রণয়নের ক্ষেত্রে Freedom Fighters Welfare Foundation গেজেট, তারিখ ৭ আগস্ট ১৯৭২ অনুসরণ করা আবশ্যক। জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভােটার পরিচয়পত্রে মুক্তিযােদ্ধাদের জন্য আলাদা রঙের এবং মুক্তিযােদ্ধা শব্দটি লেখা থাকবে। খ, পরিসংখ্যান অনুযায়ী নিয়মিত বাহিনী ও অনিয়মিত বাহিনীসহ মুক্তিযােদ্ধার সংখ্যা আনুমানিক ১,২০,০০০। বর্তমান সম্মানী ভাতা ৬০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকা বৃদ্ধি করতে অনুরােধ জানাচ্ছি। তাতে মাসে খরচ হবে ৬০ কোটি টাকা, বছরে ৭২০ কোটি, যা প্রস্তাবিত বাজেটের এক শতাংশেরও কম। শহীদদের উত্তরাধিকারীদের দেয়া হােক ১০,০০০ টাকা।
স্বাধীনতার যুদ্ধ যারা করেছেন, জাতি তাদের বাজেটের এক শতাংশ অর্থ তাদের জন্য আলাদা করে দিতে পারবে ? জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বক্তৃতায় আর পুস্তিকায় থাকলে থাকুক। সম্মান আসে হৃদয়ের গভীর থেকে। জাতির সম্মানবােধ ও আন্তরিকতার প্রতিফলন চাই, অবশ্যই এবং এখনই। মুক্তিযােদ্ধারা কেমন আছে, চোখ খুললেই দেখি। পত্রিকা আর টেলিভিশন চ্যানেলগুলাে করুণা করে তাদের উপস্থাপন করে। ওদের যৌবনের কৃত্য না দেখিয়ে বর্তমানে আর্থিক অনটন প্রদর্শন করে জাতির সামনে দয়া-দাক্ষিণ্য আর করুণার পাত্র বানাচ্ছে। অথচ এরাই ছিল একাত্তরের সম্মুখ সমরের এক-একটি স্ফুলিঙ্গ। প্রান্তবর্তিত মুক্তিযােদ্ধাদের নাম উচ্চারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু অনুদান, সাহায্য আর খয়রাত দেয়ার কথা মনে আসে। হায় দীনতা! জীবদ্দশায় উদাম গতরে কাপড় দাও, তাহলে তাদের মৃতদেহ জাতীয় পতাকা দিয়ে সমাহিত করার আনুষ্ঠানিকতা না করলেও চলবে। মুক্তিযােদ্ধাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের বিষয়টি শেষ অবধি নিতে হবে আমাদের সন্তানদের। তাদেরই দায়িত্ব মুক্তিযুদ্ধের সম্মুখ সমরে আমাদের শৌর্য-বীর্য প্রজন্মান্তরে রেখে যাওয়ার। তাই আমাদের সন্তানদের বলি-কলংকের সঙ্গে কেউ থাকতে চায় না। মানুষ থাকতে চায় গর্বের সঙ্গে। তােমরা স্ফীতবক্ষে গর্বের সঙ্গে বলাে, আমার বাবা একজন মুক্তিযােদ্ধা ছিলেন। তােমরা কি দেখেছ কেউ গর্বিত ভঙ্গিতে দাড়িয়ে কখনও বলছে, আমার বাবা জেলা শান্তি কমিটির সভাপতি ছিলেন। বা রাজাকার কমান্ডার? গর্ব করার অনন্ত উপকরণ এ জাতি তােমাদের দিয়েছে। বুকভরা অহংকারের সঙ্গে মাথা উচু করে তােমরা বলবে- মাতৃভাষার সম্মান এবং মাতৃভূমির মর্যাদা রক্ষার জন্য যুগপৎ রক্ত দিয়েছি গােটা পৃথিবীতে শুধু আমরাই। সূর্য হেলে পড়েছে। অদূরে ঘণ্টাধ্বনিও শুনতে পাচ্ছি। একাত্তরের ঘন কালাে রক্ত এদেশের অবারিত শস্যক্ষেতে আর ধূসর ধুলায় হারিয়ে গেছে। আজকের এই বাংলাদেশ অনেক কষ্টের আর অনেক রক্তের বিনিময়ে পাওয়া। এ পবিত্র আমানত তােমাদের কাছে রেখে যাচ্ছি। ভবিষ্যতে তােমরা যে তাঁবুতেই থাকো, তােমাদের প্রিয় বাংলাদেশকে এবং অহংকারের মুক্তিযুদ্ধকে রেখাে সবার ওপর, সবসময়, সবখানে।
সূত্র : পতাকার প্রতি প্রণোদনা – মেজর কামরুল হাসান ভূঁইয়া (অব.)