ব্যর্থতার দায়ভার আমার উপর চাপানাে হয়েছে। মেজর জেনারেল (অব.) সফিউল্লাহ-র সাক্ষাৎকারের জবাবে কর্নেল
(অব.) শাফায়াত জামিল
১. ১৫ এবং ১৬ আগস্ট তারিখের ‘ভােরের কাগজ’-এ মেজর জেনারেল সফিউল্লাহ। সাহেবের বিশেষ সাক্ষাৎকারটির প্রতি আমার দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। ‘৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আমি ঢাকা পদাতিক ব্রিগেডের অধিনায়ক ছিলাম। সাক্ষাৎকারে সাবেক সেনাপ্রধান সুকৌশলে তার সার্বিক ব্যর্থতার দায়ভার আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছেন। জাতীয় সঙ্কট মােকাবিলায় তার ব্যর্থতা ও বিতর্কিত ভূমিকা রহস্যাবৃত করে উদোরপিণ্ডি বুধাের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে তিনি আমার বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযােগ তুলেছেন। বঙ্গবন্ধুর জীবন রক্ষার সময়ােচিত পদক্ষেপ গ্রহণ করে অহেতুক কালক্ষেপণ করা হয় এবং পরবর্তীকালে চাপের মুখে অগণতান্ত্রিক, অবৈধ এবং সংবিধান লংঘনকারী মােশতাক সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করা হয়। জনমনে বিভ্রান্তি দূরীকরণ এবং সঠিক ইতিহাসের প্রয়ােজনে আমার এই প্রয়াস।
২. আলােচ্য দিনক্ষণে ঢাকায় মােতায়েন তকালীন সামরিক গােয়েন্দা বাহিনীর ইউনিটগুলাে এবং একমাত্র ট্যাঙ্ক রেজিমেন্টটি সেনাপ্রধানের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হতাে। এগুলাের সঙ্গে আমার কোনাে সম্পর্কই ছিল না। তবে অংশগ্রহণকারী গােলন্দাজ রেজিমেন্টটি আমার অধীনস্থ ছিলাে।
৩. তৎকালীন সামরিক গােয়েন্দা পরিদপ্তর বিদ্রোহের আগাম পূর্বাভাষ জানাতে এবং তা উদঘাটন করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়। আমার ব্রিগেডের অধীন কোনাে গােয়েন্দা ইউনিট ছিলাে না। যে কোনাে পরিস্থিতি সম্পর্কে খবরাখবর জানার জন্য সেনাসদরের উপরই নির্ভর করতে হতাে। বিদ্রোহ সংঘটিত হয়ে যাওয়ার পরই আমাকে অবহিত করানাে থেকে ধরে নেয়া যেতে পারে যে, সর্বস্তরে ষড়যন্ত্রটিকে আড়াল করার একটা প্রচ্ছন্ন চেষ্টা বিদ্যমান ছিল। সামরিক গােয়েন্দা বাহিনীর এই বিশাল ব্যর্থতার দায়ভার সাবেক সেনাপ্রধানকে এককভাবে বহন করতে হবে। এর কোনাে বিকল্প নেই।
৪, কথার মালা সাজিয়ে অনেক অসত্য কথার অবতারণা করে প্রাক্তন সেনাপ্রধান আমাকে ‘excape goat’ বানাতে চাচ্ছেন। প্রকৃত ঘটনা হলাে, ১৫ আগস্ট আনুমানিক সকাল ছয়টায় তিনি আমাকে ফোন করেন এবং বলেন, “তুমি কিছু জান নাকি বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে কারা ফায়ার করছে? উনিতাে আমাকে বিশ্বাস করলেন না… আমাকে বিশ্বাস করলেন না। মানসিকভাবে জনাব সফিউল্লাহ। বিপর্যস্ত হয়েছিলেন বলে আমার ধারণা। এ কারণে বিরক্তিকরভাবেই একই কথার পুনরাবৃত্তি টেলিফোনে করছিলেন। কোনাে নির্দেশ, কোন উপদেশ অথবা দিক-নির্দেশনা তিনি তখন দেননি বা দিতে পারেননি। একবারই ৮ সঙ্গে আমার কথা হয়েছিলাে টেলিফোনে।
৫. লে. কর্নেল সালাহউদ্দিন, তদানীন্তন ডিএমআই, পরবর্তীকালে আমার বিরুদ্ধে এক কোর্ট অব ইনকোয়ারীতে সাক্ষাৎদানকালে তার জবানবন্দীতে দাবী করেন যে, তিন (ডিএমআই) ভাের প্রায় ৪-৩০ মিনিটে সেনাপ্রধানকে ঘুম থেকে ডেকে তােলেন এবং শহরে ট্যাঙ্ক ও সৈন্য চলাচলের বিষয়টি উদ্বেগের সঙ্গে অবহিত করেন। তার ভাষা অনুযায়ী, সেনাপ্রধান তার উপস্থিতিতেই ঢাকা সেনানিবাসে অবস্থিত প্রায় সমস্ত ইউনিট কমান্ডারদের সাথে একের পর এক কথা বলেন (এদের মধ্যে আমার অধীনস্থ ইউনিট কমান্ডাররাও ছিলেন) এবং সর্বশেষ কথা বলেন। আমার সঙ্গে (অধিনায়ক ৪৬ ব্রিগেড)। সেই দুর্যোগ মুহুর্তে ত্বরিত সিদ্ধান্ত না নিয়ে ঘটনা যাচাই করার নামে কালক্ষেপণের উদ্দেশ্য কি ছিল, জনাব সফিউল্লাহ সাহেবই তার যথার্থ উত্তর দিতে পারবেন।
৬. বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক যথাযথ ব্যবস্থা না নিয়ে এইভাবেই আনুমানিক ১ থেকে দেড় ঘণ্টা মূল্যবান সময়ের অপচয় হয়। ফলে জাতির পিতার জীবন রক্ষা করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। আমাকে যখন জেনারেল সফিউল্লাহ ফোন করেন তখনতাে সবই শেষ। বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের সকল সদস্যকে অত্যন্ত নির্মম এবং কাপুরুষােচিতভাবে হত্যা করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। চরম দুঃখজনক ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পরই আমাকে অবহিত করা হয়। আমাকে সতর্ক করতে এই দীর্ঘ অহেতুক বিলম্বের জন্যই রাষ্ট্রপতিকে রক্ষার্থে সময়মতাে ফোর্স পাঠিয়ে সাহায্য করার কোনাে সুযােগই আমার ছিল না। এই চরম ব্যর্থতার দায়ভার আমার নয় কোনােমতেই, দায়ভার তাদেরই যারা নিজেরাতাে কিছুই করেনি উপরন্তু আমাকে সতর্ক করতেও অহেতুক বিলম্ব করেছিলেন।
৭, সেনাবাহিনীর প্রধানের ফোন পাওয়ার সামান্য কিছু আগে বিদ্রোহীদের অন্যতম নেতা মেজর রশীদ সশস্ত্র বিদ্রোহী যান্ত্রিক সেনাদলের সঙ্গে আমার বাসায় এসে আমাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তােলেন। মেজর রশীদ আমার অধীনস্থ আর্টিলারী রেজিমেন্টের অধিনায়ক ছিলেন এবং তারই ইউনিটের সৈন্যরা ঐ দিন আমার বাসা পাহারায় নিয়ােজিত ছিল। মেজর রশীদ দাবী করেন যে, তারা খন্দকার মােশতাকের নেতৃত্বে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছেন, প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিব নিহত হয়েছেন এবং আমি যেন ব্রিগেড কমান্ডার হিসেবে বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনাে । বিরােধিতামূলক পাল্টা ব্যবস্থা না নেই। প্রেসিডেন্ট যেহেতু নিহত হয়েছেন এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা তারা দখল করেছেন, কোনাে পাল্টা ব্যবস্থা গৃহযুদ্ধের সৃষ্টি করবে বলেও হুশিয়ারি উচ্চারিত হলাে। তাদের উপস্থিতির সময়েই আমি সেনাপ্রধানের | টেলিফোন পাই, যা পূর্বেই উল্লেখ করেছি।
৮. বিদ্রোহীদের মােকাবিলা করার উদ্দেশ্যে আমি আমার অধীনস্থ ১, ২ এবং ৪ বেঙ্গল রেজিমেন্টকে প্রয়ােজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেই। উল্লেখ্য যে, ব্যারাকে শান্তিকালীন সময় বিশ্রামরত কোনাে ইউনিটকে অভিযানে প্রস্তুত করতে কমপক্ষে দুই ঘণ্টা সময়ের প্রয়ােজন। এরপর আমি আমার ব্রিগেড সদর দফতরের দিকে রওয়ানা দেই। পথে উপ স্টাফ প্রধান লেঃ জেনারেল জিয়াউর রহমানের বাসভবনে যাই তার পরামর্শ এবং সঠিক দিকনির্দেশনার জন্য। তিনি তখন অর্ধেক | শেভরত অবস্থায় ছিলেন। আমার কাছ থেকে পরিস্থিতি শােনার পর তিনি বললেন, “President is dead so what? Vice President is there, you should uphold the sanctity of the constitution, Get your toops ready immediately.” জেনারেল জিয়ার বাসভবন থেকে আমি ফার্স্ট বেঙ্গলের ইউনিট লাইনে তাদের প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণের জন্য গেলাম এবং আশ্চর্য হয়ে দেখতে পেলাম, বেশ কয়েকটি ট্যাঙ্ক আমার ব্রিগেড সদর দফতরের ১০০ গজের মধ্যে দুই ইনফ্যান্টি ব্যাটালিয়নের মধ্যবর্তী স্থানে পজিশনে রয়েছে। আমার ব্রিগেড সদর দফতরের সামনে আরও দুটি ট্যাঙ্ক অবস্থান করছে। জানতে পারলাম, প্রয়ােজনবােধে আমার ব্রিগেড এলাকায় কামানের গােলা নিক্ষেপের জন্য মীরপুর ফিল্ড রেজিমেন্টের আর্টিলারী গানগুলাে প্রস্তুত রয়েছে। ট্যাঙ্কগুলােতে যে কামানের গােলা ছিল না তা আমাদের জানার কথা নয় এবং সেদিন দুপুর পর্যন্ত তা অজ্ঞাতই থেকে গিয়েছিল। জানতে পারলাম যখন বঙ্গভবনে অবস্থিত সেনাপ্রধানের নির্দেশে সিজিএস ব্রিগেডিয়ার খালেদ মােশাররফ দুপুরের দিকে রাজেন্দ্রপুরে অবস্থিত ordnance-এর দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারকে গােলা সরবরাহের নির্দেশ দেন।
৯, আনুমানিক সকাল সাড়ে সাতটায় জিএস ব্রিগেডিয়ার খালেদ মােশাররফ সেনাপ্রধানের নির্দেশে ফাস্ট বেঙ্গলে এসে আমার সঙ্গে মিলিত হলেন। তার আগমনের সাথে সাথে ৪৬তম ব্রিগেডের সকল ইউনিট অধিনায়কগণ সেনাবাহিনীর প্রধানের পক্ষে সিজিএস-এর কাছ থেকে নির্দেশ পেতে শুরু করেন। তখন থেকে সমস্ত কর্মকাণ্ড সিজিএস-এর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হতে লাগলাে।
১০, সংবিধান সমুন্নত রাখতে বিদ্রোহ দমনের সকল প্রস্তুতি আমরা অতি দ্রুততর সঙ্গে সম্পন্ন করেছিলাম। সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ প্রস্তুতি যখন প্রায় শেষ, তখন প্রত্যাশা ছিল যে, বিমানবাহিনীর সহায়তায় বিদ্রোহ দমনে একটি যৌথ | আন্তঃ বাহিনী অভিযান সেনাসদরের তত্ত্বাবধানে সঙ্গত কারণেই পরিচালনা করা হবে। ট্যাঙ্ক বাহিনীর বিরুদ্ধে পদাতিক সেনাদল এককভাবে কখনই আক্রমণাত্মক। যুদ্ধ মােকাবিলা করে না। পদাতিক সেনাদলের সহায়ক শক্তি হিসেবে প্রয়ােজন অনুগত বিমান অথবা ট্যাঙ্ক বাহিনীর।
১১. অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, বিদ্রোহ দমনের কোনাে যৌথ পরিকল্পনা। সেনাপ্রধানের তত্ত্বাবধানে সেদিন সকালে করা হলাে না। পক্ষান্তরে সারাজাতিকে। স্তম্ভিত করে সেনাবাহিনীর প্রধান একটি অবৈধ, অগণতান্ত্রিক, শাসনতন্ত্র বহির্ভূত, খুনী সরকারের প্রতি বেতারে তার সমর্থন ও আনুগত্য ঘােষণা করে বিদ্রোহ দমনে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পূর্ণভাবে অকার্যকর ও অচল করে ফেলেন। বেতার ভবনে | যাওয়ার পথে তিনবাহিনী প্রধান, উপস্টাফ প্রধান, মেজর ডালিম ও অন্য কয়েকজন। অফিসারের এক বিরাট কনভয় ক্ষণিকের জন্য ফার্স্ট বেঙ্গলে আসে এবং সিজিএস। ব্রিগেডিয়ার খালেদ মােশাররফকে সাথে করে নিয়ে যায়।
১২. ১৯ আগস্ট সেনাপ্রধান সেনাসদরে এক কনফারেন্সের জন্য ঢাকায় অবস্থিত সিনিয়র অফিসারদের তলব করেন। সেখানে তিনি মেজর রশীদ ও ফারুককে সঙ্গে করে নিয়ে আসেন। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট মােশতাকের নির্দেশে | রশীদ/ফারুক অভ্যুত্থানের বিশদ ব্যাখ্যা সিনিয়র অফিসারদের কাছে রাখবেন। রশীদ কথা বলা শুরু করেন এবং বলেন, সেনাবাহিনীর সব সিনিয়র অফিসার এই। অভ্যুত্থানের কথা আগে থেকেই জানতেন, এমনকি ঢাকা ব্রিগেড কমান্ডাররাও। তিনি দাবী করলেন যে, প্রত্যেকের সঙ্গে তাদের আলাদা আলাদা সমঝােতা হয়েছে পূর্বেই। তখন উপস্থিত কেউ এর প্রতিবাদ করলেন না। একটি শব্দও উচ্চারণ করলেন না কেউই। ইতিহাস সাক্ষী, আমার প্রতিবাদ ও প্রতিরােধের মুখে কনফারেন্সের ইতি সেখানেই টানা হলাে। তারা ফিরে গেলেন। সকলের উপস্থিতিই আমি সেদিন তাদের মিথ্যা দাবী নাকচ করে বলেছিলাম, “You are all liars, mutineers and deserters, you are all murders. Tell your Moshtaque that he is an unsurper and a consipirator. He is not my president. In my first opportunity I shall dislodge him and you all will be tried for your crimes.” জীবন বাজি রেখে আমি আমার কথা পরবর্তীকালে রাখতে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। সে আর এক অধ্যায়।
১৩. ২৪ আগস্ট ‘৭৫ জনাব সফিউল্লাহ সাহেবকে প্রেষণে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। বদলি করা হলাে। রেডিওতে ঘােষণা শুনে তাকে বলেছিলাম, অবৈধ সরকারের অবৈধ আদেশ মানতে তিনি বাধ্য নন। তাকে এই আদেশ অমান্য করার জন্য অনুরােধ করলাম। তিনি রাজি হলেন না বরং বললেন, “আমার কথা কি কেউ শুনবে?”
১৪. অপ্রাসঙ্গিক হলেও আরেকটি বিষয়ের উল্লেখ করতে চাই সকলের অবগতির জন্য। লে. কর্নেল হামিদ তার বইয়ে অনেক মিথ্যাচারের মাধ্যমে। বঙ্গবন্ধুর হত্যার সঙ্গে তদানীন্তন সেনাবাহিনীর মুক্তিযােদ্ধা অফিসারদের প্রত্যক্ষ ও পরােক্ষ মদদকারী হিসেবে চিত্রিত করেছেন এবং মুক্তিযােদ্ধা অফিসারদের প্রতি বিরূপ প্রক্রিয়া সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই এ কাজটি তিনি করেছেন। হামিদ সাহেব জনাব সফিউল্লাহর কোর্স মেট। মুক্তিযুদ্ধের পরই তিনি পাকিস্তান থেকে দেশে ফিরে আসেন। মুক্তিযােদ্ধা অফিসারদের প্রতি তার বৈরী মনােভাব এবং ঈর্ষান্বিত আচরণের জন্য তখন তিনি যথেষ্ট সমালােচিতও হয়েছিলেন। ‘৭৫-এর পট পরিবর্তনের সাথে সাথে তার পদ ও পদমর্যাদা দুটোই বৃদ্ধি পায়। খন্দকার মােশতাকের প্রতি তার আনুগত্যের আতিশয্যে তিনি আমাকে ‘Firing Squad’-এ পাঠানাের নিস্ফল প্রয়াস চালান। কর্নেল হামিদের এহেন মানসিকতার নমুনা কিছুটা হলেও পাওয়া যাবে আমার বিরুদ্ধে তার স্বাক্ষরিত চার্জশীট থেকে। লক্ষণীয় যে, প্রথম ৪টি চার্জ সামরিক বিধান অনুযায়ী কোর্ট মার্শালে মৃত্যুদণ্ডযোগ্য অপরাধ।
১৫. হামিদ সাহেবের বানােয়াট ও মিথ্যাচারের আরেকটি নমুনা। রক্ষীবাহিনীর কর্নেল সাবিউদ্দিন ও ব্রিগেডিয়ার খালেদ মােশাররফের কথিত টেলিফোন সংলাপ একটি নির্জলা মিথ্যা এবং কল্পিত মনগড়া কাহিনী । খালেদ মােশাররফকে হেয় করার উদ্দেশ্যেই তিনি এটার জন্ম নিজেই দিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে সাবিউদ্দিনকে ১৫ তারিখ সকালে যােগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তিনি তখন উত্তর বঙ্গে অবস্থান করছিলেন। সাবিউদ্দিনের অবর্তমানে জনৈক মেজর অবদুল হাসান ঐ দিন বাকি প্রধানদের সঙ্গে রক্ষীবাহিনীর পক্ষে মােশতাকের প্রতি রেডিওতে আনুগত্যের ঘােষণা দেন। ১৬, আমার ধারণা, আমার এই বক্তব্যে দেশবাসীর সকল প্রশ্নের উত্তর পেতে সহায়ক হবে। ভাবাবেগ পরিহার করে জেনারেল সফিউল্লাহ সত্য ও যুক্তির আশ্রয় নেবেন, অনর্থক অন্যের প্রতি কালিমা লেপন করা থেকে বিরত থাকবেন—এই আশা রেখে আমার বক্তব্য শেষ করছি।
সূত্র : ফ্যাক্টস্- এন্ড ডকুমেন্টস্–বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড – অধ্যাপক আবু সাইয়িদ