You dont have javascript enabled! Please enable it!

তদানীন্তন ডি এফ আই প্রধান ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুর রউফ-এর সাক্ষাৎকার

প্রশ্ন : ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টই কি শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের উপর প্রথম আঘাত নেমে আসে না তার আগেও এমন ঘটনা ঘটার সম্ভাবনার কথা আপনারা শুনেছেন বা আপনাদের গােচরে এসেছিল?

উত্তর : না, ১৫ই আগস্ট প্রথম আঘাত তার আগেও; অর্থাৎ ১৯৭৪ সালের শেষ দিকে বা ১৯৭৫ সালের প্রথমে বঙ্গবন্ধু সম্ভবত ঢাকায় তার জীবনের শেষ জনসভা করেন, রমনা রেসকোর্সে জনসভা হয়।  একদলীয় সরকার কায়েমের উদ্দেশ্যে জনগণকে অবহিত করার জন্য এই জনসভা হয়। সেই মিটিং-এর আগের দিন আমাকে বিশেষ গােয়েন্দা সংস্থার প্রধান হিসেবে আমার একজন সহকর্মী (তিনি বাংলাদেশ কাউন্টার ইনটেলিজেন্স-এর পরিচালক ছিলেন) আমাকে টেলিফোনে জানান তার সূত্র তাকে জানিয়েছে যে, ট্যাঙ্ক রেজিমেন্টের কিছু লােক সম্ভবতঃ ঐ মিটিংকে সামনে রেখে কোন কর্মসূচি নিয়েছে। তখন ট্যাঙ্ক রেজিমেন্টের সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন কর্নেল ফারুক (১৫ই আগস্ট অভ্যুত্থানের সাথে জড়িত), তিনি এই পরিকল্পনা করেছেন বলে কাউন্টার। ইনটেলিজেন্সর ডাইরেক্টর আমাকে জানান।

বঙ্গবন্ধুকে (তিনি তখন প্রেসিডেন্ট) হত্যা করা হবে কিনা এ কথা তখনও তিনি নিশ্চিত করে আমাকে জানাতে পারেন নি। তবে একটা শােডাউন তারা করতে চায়—এ ধরনের আশংকা তিনি প্রকাশ করলেন। ফারুক ওয়াজ ভেরী মাচ ইন ইট—এ কথা তিনি আমাকে জানান ব্রিগেডিয়ার মােমেন (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত) তখন রেজিমেন্টের প্রধান ছিলেন। ফারুক তখন লেফট্যানেন্ট কর্নেল। পুরাে কর্নেল নয়। ফারুক ছিলেন মুক্তিযােদ্ধা। কর্নেল (অব.) সাফায়াত জামিলের সাক্ষাৎকার দ্রষ্টব্য। মােমেন ছিলেন রিপ্যাট্রিয়েটেড অফিসার। এ জন্য ফারুকের প্রভাব ছিল মােমেন সাহেবের চেয়ে বেশি। মােমেনকে বস্তুত সে কর্ণার করে রেখেছিল। উনচল্লিশ জন মুক্তিযোেদ্ধা অফিসার ছিলেন। বারােশত জন ছিলেন রিপ্যাটরিয়েটেড অফিসার, তবু যেহেতু মুক্তিযােদ্ধারা স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন, তাই তাদের প্রাধান্য স্বাভাবিকভাবেই ছিল এবং প্রায় সব ‘কী-পজিশনেই মুক্তিযােদ্ধারা ছিলেন। সেটাও তখন ১৯৭২ সাল থেকে যে সেট আপ চলে আসছিল সেই সেট আপের। কনটিনিউটি হিসেবে চলে আসছিল। অন্যথা হবার কথাও নয়। রিপ্যাট্রায়েটেড। 

অফিসাররাও অনেকে উল্লেখযােগ্য পােস্টে ছিলেন। ব্রিগেড কমান্ডেও ছিলেন। কিন্তু মুক্তিযােদ্ধা অফিসারদের অবদানের জন্য তাদের একটা আলাদা গুরুত্ব ছিল। সুতরাং ফারুক এ ব্যাপারে সত্যিই ইনভলবড় হলে মােমেনের পক্ষে কতটুকু কি। করা সম্ভব হবে, বা আদৌ হবে কি না তা চিন্তার বিষয় ছিল। যাহােক আমি কাউন্টার ইনটেলিজেন্সের পরিচালককে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি এটা জানলেন কেমন করে হাউ ডু ইউ নাে দ্যাট হােয়াট অ্যাবাউট দি সিও? কমান্ডিং অফিসার কি করছেন? তিনি বললেন, কমান্ডিং অফিসার খুবই সাদাসিধা এবং সহজ-সরল মানুষ, কোয়ায়াট- সিম্পল ম্যান। আমার বা অস্ত্র গুদামের চাবি ফারুকের কেয়ারেই থাকতাে। যে অফিসারের কাছে থাকতাে ফারুক লীনিং। সে জন্যই ফারুক দায়িত্ব দেয় তাকে। আজ রাতে ফারুক হয়তাে সি, ওর অজ্ঞাতসারেই আলমারীর তালা খুলে ফেলবে। বেশ কতদিন থেকে কয়েকজন মুক্তিযােদ্ধা অফিসারদের সাথে রাতে আলাপ-আলােচনা করে। তখন আমি কাউন্টার ইনটেলিজেন্সের পরিচালককে বললাম, ওকে আপনি কমান্ডিং অফিসার মােমেনের বাসায় যান। তাকে গিয়ে বলেন আমি তার সাথে তার বাসায় কথা বলতে চাই। আমি তাকে কমান্ড করতে পারি না। কারণ আমার সংস্থার অফিসার তিনি নন, তবে আমি তাকে অনুরােধ করে পাঠালাম। আমি তখন খাচ্ছিলাম। এর মধ্যে দেখি মােমেন সাহেবকে কাউন্টার ইনটেলিজেন্সের পরিচালক নিয়ে এসেছেন। মােমেন সাহেবকে বললাম, তােমার সেকেন্ড ইন কমান্ড সম্বন্ধে আমার ধারণা কি? মােমন আমাকে বললেন, দেখুন আমারতাে কিছু অসুবিধা আছে। আমি বললাম, আপনার সেকেন্ড ইন কমান্ড যে আগামী কালকের রেসকোর্সের ময়দানে একটা শশা-ডাউন করতে চাচ্ছে তারা এ জন্য আলমারীর চাবি নিয়ে আগামীকাল অস্ত্র শস্ত্র বের করবে? মােমেন আমাকে বললেন, হয়তাে হতে পারে বাট নট দ্যাট আই নাে অ্যানি থিংস অব ইট। হয়তাে তাদের এ রকম প্রয়াস থাকতে পারে। কিন্তু আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না।

তখন তাকে আমি বললাম, কীপ ওয়াচ আপন ইয়াের সেকেন্ড ইন কমান্ড। তােমার সেকেন্ড ইন কমান্ডের উপরে নজর রাখ। ভাল করে নজর রাখবে যাতে কোন ডিস্টারভেন্স সৃষ্টি করতে না পারে। জুনিয়ার কমিশনড অফিসারদের উপর নজর রাখবেন। | আমি চিন্তা করতে লাগলাম ব্যাপারটিকে কিভাবে বন্ধ করা যায়। দ্যাট মাস্ট বা স্টপড়। তখন উইং কমান্ডার সাহেব যিনি কাউন্টার ইনটেলিজেন্সের প্রধান তাকে বললাম, আপনিও চিন্তা করেন। কারণ ওনার ডাইরেকটরকে আমি হুকুম করতে পারি না। আমার সংস্থার অফিসারকে আমি ডেকে পাঠালাম। তার ব্যাঙ্ক তখন লেফটেনেন্ট কর্নেল। তিনি আগে ইঞ্জিনিয়ার কোর-এর সাথে কাজ করেছেন। তাকে বললাম তুমিতাে ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সাথে ছিলে, বাই ভারচু অফ ইয়াের ওন্ড অ্যাসােসিয়েশান  উইথ দি ইঞ্জিনিয়ারিংস ইউ কীপ কনটাক্ট উইথ দেম টুডে অ্যান্ড আফটার। তােমার পুরান বন্ধু সাব এডিনেটের সাথে যােগাযােগ রাখ। যদি তােমার কাছে মনে হয় যে তাদের সহায়তায় ট্যাঙ্ক বাহিনীর লােকেরা অন্ত্র বারুদ নিয়ে মুভ আউট করতে চায়। তবে তুমি যেন তাদের ভ্যানগার্ড; অর্থাৎ তাদের নেতার মত ৰা অগ্রগামী বাহিনীর মত। তাদের সাথে সাথে বাইরে যাবে, ফাক বুঝে আমাকে ইঙ্গিত দেবে। তাঁকে ছাড়াও আমার সেই লেফটেন্যান্ট কর্নেল অফিসারকে আমি বললাম ইউ আর লুকিং আফটার ঢাকা ডিটাচমেন্ট।

সে সময়ে ব্রিগেড কমান্ডার গােলাম দস্তগীর ঢাকায় ছিলেন। তার পােস্টিং ছিল চট্টগ্রামে। তবে তিনি ঢাকায় এসেছিলেন একটা কনফারেন্সে যােগদান করার জন্য । তখন দস্তগীর সাহেব ঢাকায় যে বাসায় উঠেছিলেন সেখানে যােগাযােগ করলাম। বিকেল হয়ে গেছে। বাসা থেকে বলল, তিনি চট্টগ্রাম যাবার জন্য এয়ারপাের্ট রওনা হয়ে গেছেন। সাে আই সেন্ট ওয়ান অফ মাই অফিসারর্স টুদি এয়ারপাের্ট ফর হিম। তাকে ঢাকায় থাকতে বলার জন্য আমি একজন লােক পাঠালাম। পুরাতন এয়ারপাের্টে। আমার অফিসারকে বললাম, যে ভাবইে হােক এয়ারক্রাফট ডিটেইন করে হলেও তার সাথে কথা বলবে। এবং পাস্ দি মেসেজ টু দস্তগীর দ্যাট আই ওয়ান্ট টু টক টু হিম। দস্তগীরকে বলবে আমি তার সাথে কথা বলতে চাই। দস্তগীর ওয়াজ পুলভ আউট অফ দি এয়ারক্রাফট, তাকে প্লেন থেকে নামিয়ে আনা হয়। দস্তগীর আমার বাসায় এলে তাকে বললাম ঘটনাটি। নাউ দ্যটি সাম জুনিয়র অফিসারস আর ট্রাইং টু গাে ফর এ শােডাউন। সাে উই জয়েন্টলী ইভলফড এ ট্রাটেজী। কিছু কাজ ভাগাভাগি করে নিলাম। আমার অফিসারদের ওয়াচ আউটে থাকতে বললাম। ডিফেন্স সেক্রেটারীকেও ঘটনাটা জানালাম। তার প্রেসিডেন্ট মুজিবকে গিয়ে বললাম-৩২ নাম্বারের বাসায় স্যার এই ব্যাপার ওটা বন্ধ করার জন্য কে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তাও বললাম, প্রেসিডেন্ট সাহেব আমার কথা শুনে বললেন, এরতাে আমি সব কিছু জানি।

প্রেসিডেন্টেরও নিজস্ব একটা এজেন্সি ছিল। তারা এ সম্পর্কে কোন তথ্য প্রেসিডেন্টকে জানিয়েছিল কিনা তা বলতে পারব না। তবে প্রেসিডেন্ট আমাকে বললেন, আমি এর সবই জানি।

প্রশ্ন : ফারুকের বিরুদ্ধে শাস্তি নেয়া হল না কেন?

উত্তর : আমার কাজটা ছিল তথ্য জানান। এ্যাকশন নেয়ার দায়িত্ব প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের। প্রেসিডেন্ট আইন অনুযায়ী শাস্তি দিবেন। আর্মি চিফ বা অন্যান্যদের মতামত নেয়া হবে। তারা আর্মি এ্যাক্ট অনুযায়ী শাস্তি দিবেন।

প্রশ্ন : ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট তারিখে হত্যাকাণ্ড কিভাবে ঘটে অন্তত আপনার জানামতে কিভাবে সংঘটিত হয়?

উত্তর : আপনাকে আগেই বলেছি ১৯৭৫-এর জুন মাসের কোন এক সময় একটা ট্রেনিং কোর্সের জন্য বিলেত যাই। দুই আড়াই মাস মেয়াদী ছিল কোর্স

শেষ করে আগস্ট মাসের (৭৫) ১২ বা ১৩ তারিখে ঢাকায় পৌছি। ঢাকায় এসেই প্রেসিডেন্টের সাথে দেখা করি। আমি যে গােয়েন্দা সংস্থার কাজে নিয়ােজিত ছিলাম তা সরাসরি প্রেসিডেন্টের নিয়ন্ত্রণে ছিল। তাই প্রেসিডেন্টের সাথে দেখা করাই স্বাভাবিক ছিল। আমি বঙ্গবন্ধুর সাথে দেখা করি রাত সাড়ে আট নয়টার দিকে নতুন গণভবনে। তখনকার তথ্য প্রতিমন্ত্রী তাহের উদ্দিন ঠাকুর তখন তার সাথে বসে কথা বলছিলেন ঘরে আর কেউ ছিলেন না।

আমি দেখা করলে প্রেসিডেন্ট আমাকে জানালেন যে, আমার অনুপস্থিতিতে কর্নেল জামিলকে আমার পদে নিয়ােজিত করা হয়েছে। আমাকে লজিস্টিকস বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিতে বললেন।

| আমি পরদিন কর্নেল জামিলকে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ বুঝিয়ে দেবার জন্য আমি আমার পুরান অফিসে যাই। যদিও কর্নেল জামিল আমার অনুপস্থিতিতে কাজ শুরু করে দিয়েছিলেন, তবুও কিছু কাগজ পত্র সই করার ব্যাপার ছিল। কাজ বুঝিয়ে দেবার জন্যও সই করা দরকার। তাই আমি সেখানে যাই।

যা হােক, সে আমাকে বলল, সে এখনই বেরিয়ে যাবে। প্রেসিডেন্ট আগামীকাল (১৫ই আগস্ট ‘৭৫) ঢাকা ইউনিভার্সিটি যাবেন।

সংবাদ শােনা যাচ্ছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের একটা বিশেষ উইং ঢাকায় শশা ডাউনের চেষ্টা করবে। প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা বা সিকিউরিটি সম্পর্কে ব্যবস্থা নেবার জন্য কনেল জামিল তাই তাড়াতাড়ি শেখ কামালের সঙ্গে চলে গেলেন।

আমি তখন আমার অফিসে বসে খবরের কাগজ পড়ছিলাম। তখনতাে আমি আউটগােয়িং অফিসার, হাতে কাজ নেই। এর মধ্যে তখনকার পুলিশের আইজি নুরুল ইসলাম আমাকে টেলিফোন করেন। তিনি আমাকে বললেন, “রউফ সাহেব আপনাকে পেয়ে ভালই হল। আমারতাে এখন একটা বিরাট সমস্যা। আমাদের কাছে বলা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মাইন পুঁতে রাখা হতে পারে বা হয়েছে। কালকে প্রেসিডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলে তারা একটা সিচুয়েশান সৃষ্টি করতে পারে।” | আমি বললাম, “আমিতাে আর এখন (গােয়েন্দা সংস্থার) চাকুরীতে নেই, আমাকে তাে লজিসৃটিক্সের হেড করা হয়েছে। আজ কালের মধ্যেই চার্জ বুঝিয়ে দেব আমি।”

তিনি বললেন, তবুও একটু সাহায্য আপনাকে করতে হবে। আমিতাে নতুন ডিজি চিনি না। আবার তাকে পাচ্ছিও না। ইউনিভার্সিটিতে শুনেছি কারা মাইন পুঁতে রেখেছে। আপনাদের ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যদের আমাদের সহযােগিতার জন্য পাঠান। আমরাতাে মাইন হ্যান্ডল করার টেকনিক জানি না।

ওখানে বেরিড মাইন প্রডিং এবং ক্লানিং-এর জন্য কিছু লােক দরকার।

আমি বললাম, কাউকম ইউনিভার্সিটি বয়েজ আর প্লান্টিং মাইনস। আই জি বললেন : নাে দেয়ার আর রিউমার্স ইন দি সিটি। সুতরাং আমাকেতাে ব্যবস্থা

নিতেই হবে। আমি বললাম, হােয়াই আর ইউ টকিং, আপনি এ সব কি বলছেন? এসব মাইন পোতার মত কাজ ছাত্ররা কিভাবে করবেন? তারা না হলেও কারা এ সব করতে পারে? কেন করবে? | প্রশ্ন : মাইন পুঁততে কত সময় লাগে? মাইন পোতার অন্য কি অভিজ্ঞতার প্রয়ােজন?

উত্তর ; অভিজ্ঞতা তাে দরকার বটেই। তবে পুঁততে বেশি সময় নেয় না যদি ছােট জায়গায় স্যাৰােটাজের জন্য হয়। তবে ডিফেন্স স্কীমের জন্য যুদ্ধক্ষেত্রে পুঁততে কিছু সময় নেয়। পুরাে রাত লাগে; কারণ জায়গাও থাকে বড়। | যা বলছিলাম ছেলেদের কাছে স্বাধীনতার পরে যে কারণেই হােক অস্ত্র এসেছে, হাতবােমা পিস্তলের কথা আমি অনুমান করতে পারি কিন্তু মাইন? আমার কাছে বিশ্বাসযোেগ্যই মনে হচ্ছিল না, ছেলেদের কাছে মাইন থাকতে পারে। যা হােক তিনি বললেন, ভাই আমার একটা ইনজিনিয়ারিং ব্যাটালিয়ন চাই—এগারটা সেকশন। আমরা আজ ঠিক রাত বারােটায় সােহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসব। আমরা সেখানে এগারটা টীমে ভাগ হব। প্রতিটি টীমে ইনজিনিয়ারিং ব্যাটালিয়নের লােক, পুলিশের লােক, স্পেশাল ব্রাঞ্চের লােক ছাড়াও আরও তিনটি গােয়েন্দা সংস্থার লােক উপস্থিত থাকবে।

| ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাইন পুঁতে রাখা হয়েছে কথাটা আমার বিশ্বাস হলাে না। আই, জি বারংবার বলার পর আমি বললাম, দেখুন আমারতাে বদলির ওয়ার্ডার হয়ে গেছে। তিনি আমাকে বললেন, তবু আপনি যদি জেনারেল সফিউল্লাহকে এ ব্যাপারে বলে দেন। আমি বললাম, আপনাদের কি দরকার বলুনতাে? আই, জি নুরুল ইসলাম বললেন, আমরা সকল গােয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশের লােক মধ্যরাতে সােহরাওয়ার্দী উদ্যানে মিলিত হব। তাদের সংগে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাটালিয়নের লােকও থাকবে। তারা ১১টি শাখায় ভাগ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মাটির নিচে মাইন পুঁতে রাখা হয়েছে কিনা বা অন্য কোন অস্ত্র শস্ত্র রাখা হয়েছে কিনা তা দেখবে। ভাের রাত পর্যন্ত এই সার্চ চলবে। তারপর সারা ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার দায়িত্ব পােশাকধারী পুলিশের হাতে দেয়া হবে। আমি বললাম, দেখুন আমিতাে এই গােয়েন্দা সংস্থায় নেই। তবু আপনি যখন বলছেন। আমি সেনাবাহিনীর শফিউল্লাহ সাহেবকে বলে দেব। আমি তখন সফিউল্লাহ সাহেবকে টেলিফোন করলাম। শফিউল্লাহ আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন আই, জি সাহেব আমাকে বলছেন না কেন? আমি বললাম, তিনি এই গােয়েন্দা সংস্থায়। টেলিফোন করে আমাকে পান। তিনি অনুরােধ করেন ব্যাপারটা আপনাদের জানাতে। নাউ ইফ ইউ থিংক ইউ শুড ডু সামথিং, ইউ ডু অর ফরগেট অ্যাবাউট ইট, আপনি যদি মনে করেন আপনার কিছু করা উচিত, তাহলে করবেন, যদি মনে করেন কিছু করার নেই আপনি সেই রকম সিদ্ধান্ত নিন। শফিউল্লাহ পরে অবশ্য একটা ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাটালিয়নকে অর্ডার পাস করে দেন সার্চ পার্টিতে থাকার জন্য। তিনি আমাকে টেলিফোনে জানান তিনি অর্ডার পাস করে দিয়েছেন। আমি বললাম, তাদের মিডনাইটে সােহরাওয়ার্দী উদ্যানের কাছে পুলিশ কন্ট্রোলরুমে হাজির হতে হবে।

১৫ই আগস্ট ভােররাতে সময় ঠিক মনে নেই, অনুমান রাত আড়াইটার দিকে কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের পরিচালক সেই উইং কমান্ডার দ্রলােক আমাকে টেলিফোন করলেন। আমি তখন বলতে পারেন জেন্টলম্যান অ্যাটালার্জ। গােয়েন্দা সংস্থা থেকে বদলি অর্ডার হয়ে গেছে নতুন পােস্টে তখনও যােগদান করিনি। গােয়েন্দা সংস্থা থেকে আমার জন্য একটা ডিনার অ্যারেঞ্জ করেছিল। সেটা হয়ে গেলেই নতুন পােস্টের দায়িত্ব বুঝে নেব—তবে অ্যাট মাই হার্ট অফ হার্ট আমি চাচ্ছিলাম সেনাবাহিনীর চাকুরী ছেড়ে দিতে। তখন শৃঙ্খলার যে অবস্থা ছিল তাতে এর বেশি কিছু আমি মনে করতে পারিনি।

 যাহােক যা বলছিলাম—কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের দ্রলােক আমাকে টেলিফোনে যখন জানান তখন রাত দুটো কিংবা আড়াইটা হবে। দ্রলােকের নামটা বলতে চাই না, কারণ তিনি একটা সরকারী চাকুরীতে এখনও আছেন। তিনি স্বাধীনতার প্রথমদিক থেকেই ছিলেন। আমার সঙ্গেও কাজ করেছিলেন। কাউন্টার। ইন্টেলিজেন্সের পরিচালক সাহেবের বাসা ছিল জিয়াউর রহমান সাহেবের বাসার কাছেই। তাকে পাচ্ছি না। আপনি আমাদের ইমিডিয়েট পাষ্ট পরিচালক তাই আপনাকে ব্যাপারটা জানান উচিত মনে করে এত রাতে টেলিফোন করলাম। আমি বললাম কি ব্যাপার? তিনি বললেন, স্যার লেট মী কোট মাই ফিল্ড চীফ। দি ট্যাঙ্কস হ্যাভবীন টেকেন আউট। দে আর মুভিং টোয়ার্ডস দি সিটি-ট্যাঙ্কগুলাে বের করা হয়েছে। সেগুলাে শহরের দিকে নেয়া হচ্ছে। আমি বললাম, ডু ইউ থিংক দেয়ার ইজ গেয়িং টু বি এনি আপরাজিং, আপনার কি ধারণা কোন অ্যুথান হতে যাচ্ছে দে আর অন সাম্ আদার বিজিনেস। পরিচালক আমাকে বললেন, স্যার সামথিং ভেরী সিরিয়াস ইজ গােয়িং টু টেক প্লে। মনে হয় একটা ভীষণ কোন ব্যাপার হতে যাচ্ছে। আমি বললাম, তােমার কাছে পজেটিভ কোন ইনফরমেশন, নির্দিষ্ট তথ্য আছে? উইং কমান্ডার বললেন, না ঠিক তা নেই—তৰে ট্যাঙ্কগুলাে বের হয়ে শহরের দিকে যাচ্ছে—সে কথা সত্য এবং ট্যাঙ্ক আর্মড কার থেকে অটোমেটিক ফায়ার বাস্ট-এর শব্দ আসছে। এই বলে আমি আমার রিসিভারে মনােযোগ দিয়ে শুনতে চেষ্টা করলাম। ওর দিক থেকে পরিষ্কারভাবে অটোমেটিক ফায়ার বান্ট-এর শব্দ শুনতে পেলাম।

কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের পরিচালক তখন আমাকে বললেন, আমার যা মনে হচ্ছে ট্যাঙ্ক নিয়ে ওরা ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর রােডে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের দিকে যাচ্ছে।

আমি তখন বললাম, ডু ইউ কন্টাক্ট জামিল-ইয়র নিউ বস? সে বলল, তাকে তাে পাচ্ছি না। আমি বললাম, আই অ্যাম, আউট অফ পােষ্ট আমি তাে ঐ পদে নেই তবু বলছি, হ্যাভ ইউ টোলড দি প্রেসিডেন্ট উইং কমান্ডার বলল, স্যার আই

ক্যান্ট ডু দ্যাট- এ উইং কমান্ডার ক্যান নট ডু দ্যাট। আই ক্যান ইনফরম মাই বস অনলী। তারপরেও ঘটনাটি টিল নাউ হাফ কনফারমড-ট্যাংকস আর মুভিং আউট অলরাইট বাট দ্যাট দে আর মুভিং টু ধানমন্ডি রােড নাম্বার থারটি টু ইজ মাই গেস। ট্যাঙ্ক বের হয়েছে সত্যি কিন্তু ট্যাঙ্কগুলাে যে ৩২ নাম্বারের দিকে যাচ্ছে সেটা আমার অনুমান। ইফ দি ইনফরমেশান ওয়াজ রং আই উইল ৰী ইন ট্রাবল। খবরটা ভুল হলে আমার উল্টা বিপদ হবে। তখন আমি বললাম তবে, ইউ ওবে মী। ইনফরর্মড ইন দি ইভেন্ট ইউ ডােন্ট পেট ইয়াের নিউ বস। তােমার বসকে না পাওয়া পর্যন্ত আমাকে জানাতে থাক দেখি কি করা যায় । আমি দুই এক মিনিট চিন্তা করে জেনারেল শফিউল্লাহকে লাল টেলিফোনে ফোন করলাম। | শফিউল্লাহ তখন আর্মির চিফ। তখন আমি জেঃ শফিউল্লাহকে বললাম, হ্যাভ ইউ কমিশনড অ্যানি অফ ইয়াের ট্যাঙ্ক রেজিমেন্টস টু দি সিটি অর ইফ নট হ্যাভ ইউ বাই নাউ কাম টু নাে অপ দি ট্যাঙ্ক রেজিমেন্ট। আপনি কি কোন কাজে আপনার ট্যাঙ্ক রেজিমেন্টকে বাইরে পাঠিয়েছেন অথবা কেউ কোন এডভেনচারইজমের আশ্রয় নিচ্ছেন এমন কোন সংবাদ আপনার কাছে পৌছেছে।

শফিউল্লাহ সাহেব বললেন, আমি তেমন কিছু জানি না, তবে এই রকম একটা। কথাতাে শুনেছি। আমি বললাম, হােয়াট ডু ইউ মীন, ইউ হ্যাভ নাে পারমিশন হু কুড ডু ইট। জেনারেল শফিউল্লাহ আমাকে বললেন, না তেমনতাে কোন ধারণা। আমার নেই। আমি কিছুতাে বুঝতে পারছি না। আমি বললাম, ঠিক আছে আপনি আপনার ডেপুটি চীফ বা সিজি-এর কাছ থেকে জিজ্ঞাসা করে জানুন- হু কুড বী ইন ইট। তাছাড়া ঢাকা ব্রিগেড কমান্ডারকেও জিজ্ঞাসা করতে পারেন। দি বয় ইজ ইন দি সিটি। আপনারতাে ঢাকা ব্রিগেড কমান্ডারকে জিজ্ঞাসা করা উচিৎ। তিনি শহরেই আছেন। শফিউল্লাহ আমাকে বললেন, ঠিক আছে আমি তাই করব।

প্রশ্ন : ঢাকা ব্রিগেড কমান্ডার তখন কে ছিলেন?

উত্তর : শাফায়াত জামিল। আমি তখন একটু চিন্তা করতে লাগলাম। কিছুক্ষণ পরে আমি লুঙ্গি পরে শফিউল্লাহ সাহেবের বাসায় রওনা হলাম। আমার গার্ড কমান্ডারও আমার পিছনে পিছনে এল। বলল স্যার একা যেতে পারবেন না। আমরা যখন চীফ অফ স্টাফের বাড়ির পঞ্চাশ গজ দূরে তখন আমাদের চিফ অফ স্টাফের বাড়ির গার্ড চ্যালেঞ্জ করল, হু কামিস দেয়ার, হল্ট। আমি বললাম, আই অ্যাম ব্রিগেডিয়ার রউফ, ডােন্ট ফায়ার । ওর বাসার দরজা তখন লক করা। আমি বললাম, ভিতরে যাব কেমন করে বলল, স্যার আপনার হাতটা একটু বাড়িয়ে দেন আমরা আপনাকে হাতের উপর করে দরজার উপর থেকে নিয়ে যাব। ওরা আমাকে বাইরের দিক থেকে হাত বাড়িয়ে উঁচু দেওয়ালের উপর তুললাে। এরপর আবার হাত নিচু করে বাড়ির ভেতর নামিয়ে দিল। নামতে গিয়ে আমার পায়ে একটু চোট পেলাম। যাহােক নিচে নেমে চিফ অফ স্টাফের বাড়ির ভেতরে নেমে আমি অবাক হলাম। আই ওয়াজ সারপ্রাইজড টু সী দ্যাট ব্লাক মার্সিডিজ ইজ বাথিং আন্ডার দি

পাের্চ, দ্যাট ব্লাক মার্সিডিজ বিলংগড টু জেনারেল জিয়াউর রহমান। দেয়ার ওয়াজ অনলী ওয়ান ব্লাক মার্সিডিজ ইন দি আর্মি অ্যাট দ্যাট টাইম। জেনারেল জিয়াউর রহমান গাড়িটি ব্যবহার করতেন। তখন আর্মিতে একটাই মার্সিডিজ গাড়ি ছিল। তাই চিনতে পেরেছিলাম। গাড়িটি দেখেই আমার মনে চিন্তা এল তারা দুই জনে এতরাতে এখানে কি চিন্তা করছেন। ডেপুটি চিফ কখন এলেন? কেন এলেন? আমি তখন সাত পাঁচ ভেবে ভেতরে ঢুকলাম। পাের্চের কাছে এসে জিয়াউর রহমান সাহেবের এ-ডি-সি কাইয়ুমের সাথে দেখা হলাে। আমি কাইয়ুমকে জিজ্ঞাসা করলাম, তােমরা কখন এসেছ? সে বলল, স্যার কিছুক্ষণ আগে? আমি বললাম, হােয়াট দে (শফিউল্লাহ ও জিয়া) আর ডুয়িং কাইয়ুম বলল, স্যার আই জাস্ট ডােন্ট নাে।

আমি জেনারেল জিয়াউর রহমান সাহেব ও শফিউল্লাহ সাহেবকে ভালােভাবে জানতুম। আমি ড্রইংরুমে গেলাম না। ড্রইং রুমের কাছে একটা প্যাসেজ, সেই প্যাসেজের পর একটা ছােট্ট রুম। আমি গিয়ে দেখি জেনারেল শফিউল্লাহ ইজ সীটিং দেয়ার লুকিং লট। আমি গিয়ে দেখি শফিউল্লাহ সাহেব ঘরে বসে আছেন। তার ইউনিফর্ম পরা। ক্যাপটা মাথায় নয়। হাতে ব্যাটন আছে। আমি গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করলাম জেনারেল হােয়াট ইজ ইয়াের প্রােৱেম। হােয়ার ইজ দি ডেপুটি চিফ, হােয়ার ইজ জেনারেল জিয়াউর রহমান হােয়েন ডিড হি কাম টু ইউ হােয়াই হাজ হি কাম অ্যাট দিস আওয়ার? তিনি কোথায়? আপনার কাছে এতরাতে তিনি কি মনে করে এলেন? শাট আর ট্রাউজার পরলাম। আমার বাসা ক্যান্টমেন্ট গলফ কোর্সের কাছে ছিল। ঐ গলফ কোর্সের এক মাথায় শফিউল্লাহর বাসা অন্য মাথায় আমার বাসা। আমি বাড়ি থেকে বের হচ্ছিলাম। ইতিমধ্যে আমার গার্ড কমান্ডার এসে দাঁড়ালাে, বলল স্যার আপনি যাচ্ছেন কোথায়? তাকে কিছু বলতে যাব এমন সময় একটা টেলিফোন এলাে আমার পরিচিত একটা ছেলের কাছ থেকে। মানিকগঞ্জের তােজাম্মেল আলী সাহেবের, সে আমাকে টেলিফোন করে বলল, ভাইজান আপনি কেমন আছেন? আমি বললাম, আমি কেমন আছি মানে? সে তখন আবার বলল, আমাদের এখানে বােমা পড়ছে। আমি বললাম, আপনি কোথা থেকে বলছেন? তিনি বললেন, আমার বাসা মােহাম্মদপুর এলাকায়। আমি বললাম, আপনাদের ওখনে বােমা পড়ছে মানে! সে বলল, আপনাদের আর্টিলারীর গােলা পড়ছে। দুই তিন জন ক্যাজুয়ালটি হয়ে গেছে। একটা মানুষ রাস্তায় পড়ে আধমরা অবস্থায় চিৎকার করছে। তাকে রেসকিউ করে হাসপাতালে পাঠাবার জন্য একটা এম্বুলেন্সের জন্য কত হাসপাতালে টেলিফোন করলাম। কোথাও এম্বুলেন্স পেলাম। লােকটা একটু পরােপকারী ছিল।

আমার ধারণা হলাে এ এলাকায় হয়তাে সিরাজ সিকদার বা জাসদের আন্ডার গ্রাউন্ড উইং-এর কোন দল কারাের পরে হামলা। করেছে। আমি বললাম, আপনি মােহাম্মদপুর থানায় যান না কেন? তিনি বললেন। বাইরে ভীষণ গােলাগুলির শব্দ। ধানমণ্ডির দিক থেকে গােলাগুলি হচ্ছে। আমি  যাহােক তার কাছ থেকে এম্বুলেন্সের নাম্বারটা নিলাম। তারপর এম্বুলেন্সের জন্য। টেলিফোন করে মােহাম্মদপুর যে এলাকার ঠিকানা সেখানে যেতে বললাম। তখন। এম্বুলেন্সের উপস্থিত ছিল না-আধা ঘণ্টা পরে তারা আমাকে টেলিফোন করে জানায় এম্বুলেন্স রওনা হয়ে গেছে। তারপর আমি মােহাম্মদপুর থানার ওসিকে টেলিফোন করে জিজ্ঞাসা করলাম, কি ব্যাপার হয়েছে আপনাদের ওখানে? সে বলল, স্যার মর্টারের গােলা পড়েছে এখানে, আমি বললাম, কোথা থেকে আসছে এই গোলা? সে বলল, স্যার আমি বলতে পারি না। আমি বললাম, ইউ গাে আউট অ্যান্ড সী । সে আমাকে জিনিসটি কয়েক মিনিট পরে জানাল স্যার ধানমণ্ডির দিক থেকে হচ্ছে বলে আমার মনে হয়। এইভাবে প্রায় আধঘণ্টা পৌনে এক ঘণ্টা হয়ে গেছে তখন আমি আবার টেলিফোন করলাম জেনারেল শফিউল্লাক। আমি বললাম, বাট নাও আর ইউ ক্লিয়ার হােয়াট ইজ হ্যাপেনিং? হু ইজ ইন আর হু আর ইন ইট। আপনারা কি বুঝতে পেরেছেন কি হয়েছে? কারা বা কে এতে জড়িত। শফিউল্লাহ বললেন,  এখনও কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আমি বললাম, ঠিক আছে আমি আপনার বাসায় আসছি। এসে কি তিনি অভ্যুত্থানের কথা কিছু জানিয়েছেন? কি বলেছেন? আমি বললাম হুইজ ডুয়িং ইউ টেল মী।

শফিউল্লাহ আমাকে বললেন, আমি কিছু জানি না। তবে খালেদ মােশাররফকে বলেছি। ব্রিগেডিয়ার খালেদ মােশারফ তখন (সি জি এস) টু রাশ টু দি সিটি অ্যান্ড টু টেক দি ফোর্স- ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট উইথ হিম। আমাকে শফিউল্লাহ সাহেব একটা ভেতরের ঘরে নিয়ে গেলেন। সেখান থেকে তিনি বিভিন্ন জায়গায় টেলিফোন করতে লাগলেন, কিন্তু টেলিফোনেও তিনি তেমন কাউকে পাচ্ছিলেন না। আমি বললাম, ঠিক আছে আপনি আপনার গাড়িতে বসুন তারপর আর্মি হেড কোয়াটার্সে চলুন। সেখানে থেকে উইল ডু ইয়াের পারট, ইয়াের পারট অফ দি ডিউটি। আই উইল গাে টু আওয়ার এজেন্সী এন্ড ফ্রম দেয়ার উই উইল বী অ্যাবল টু সেফ কুইক আন্ডারস্টাডিং অব দি সিচুয়েশান হােয়েন আই গেট সামথিংস আই উইল রাশ টু ইয়াের অফিস। প্লিজ গেট ইয়াের টেপস, অ্যান্ড আই ওয়ান্ট টু গেট ইউ ইন ইউর কার ইন মাই প্রেজেন্স। আমি থাকতে থাকতেই আমি চাই আপনি এখান থেকে বেরিয়ে অফিসে আসুন। এর মধ্যে লাল টেলিফোনটা বেজে উঠেছে। আমি টেলিফোন তুললাম। ফোনে কথা বললেন হােম মিনিস্টার মনসুর আলী। তিনি টেলিফোন করে বললেন, হ্যালাে শফিউল্লাহ? আমি বললাম, না, স্যার আমি রউফ বলছি। উনি আমাকে বললেন। রেডিও স্টেশনে কিছু লােক পাঠিয়ে দেন। সাম পিপুল হ্যড ক্যাপচারড ইট। আমি বললাম, স্যার আমারতাে কমান্ড নেই- আমি গােয়েন্দা সংস্থার লােক, শফিউল্লাহ সাহেব এলেই আমি আপনার মেসেজ ওনাকে দেৰ। উই আর এ্যালাইভ টু দি সিচুয়েশন। মনসুর আলী বললেন, দেরী করবেন না। ইমিডিয়েটলী অ্যাকশনে যান। শফিউল্লাহ সাহেবকে নিয়ে পরে আমি আমি হেড কোয়ার্টারসে গেলাম। জেনারেল শফিউল্লাহকে ওখানে নামিয়ে দিয়ে আমি শর্ট

কার্ট রাস্তায় গেলাম আমাদের সংস্থার অফিসে।

আমি গােয়েন্দা সংস্থার অফিসে গিয়ে পেলাম মেজর জিয়াউদ্দিনকে। তার কথা। আগেই বলেছি ওকে আমাদের গোয়েন্দা সংস্থায় নেয়া হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবের নির্দেশেই। মেজর জলিলের দ্বারা প্রভাবিত হবার জন্যই কোন কোন অফিসার তাকে নিয়মিত বাহিনীতে নেবার বিরােধিতা করার জন্যই প্রধানমন্ত্রী ওকে গােয়েন্দা সংস্থায় কাজ করার নির্দেশ দেন। ওর ব্যাংক এবং নিয়মিত সিনিয়রিটিও বহাল রাখার ব্যবস্থা করা হয়। এই সংস্থায় ঢুকার সময় সে ছিল ক্যাপটেন। তিন মাস পর ওর সিনিয়রিটি হলে ওকে , -র করা হয়। ও গােয়েন্দা সংস্থার জন্য ভাল কাজ করে। হি ওয়াজ এ গুড অফিসার ফর দি এজেন্সি। আমি তখন আমাদের সংস্থায় গিয়ে পৌছলাম তখন সে ছাড়া অন্য কোন অফিসার সেখানে ছিল না। সে আমাকে দেখতে পেয়েই বলল, স্যার অই উইল ওয়ার্ন ইউ নট টু সিট ইন দিস অফিস এলােন। ইউ মাষ্ট গেট আউট অব দিস অফিস অ্যান্ড মাস্ট জয়েন আদার সিনিয়র অফিসারস হয়ার এভার দেয়ার। স্যার খবরদার এই অফিসে একা থাকবেন না। অন্যান্য সিনিয়ার। অফিসাররা যেখানে আছেন সেখানে তাদের সাথে গিয়ে আপনি যোগ দেন। এখানে। থাকলে আপনার বিপদ হতে পারে। আমি বললাম, হােয়াট? কেন? সে বলল, স্যার আই উইল নট গেট ইনভলভড ইন এনি আরগুমেন্ট উইথ ইউ, পারটিকুলারলি অন দিস ইস্যু! আমি আপনার সাথে কোন তর্ক করতে চাইনে। এ ব্যাপারেতাে নয়ই, আমি আপনার সেফটির জন্য বলছি আপনি অন্যান্য সিনিয়র অফিসারদের সাথে থাকুন। একা থাকবেন না। তাহলে বিপদ হতে পারে। আই কনট্যাকটেড ইয়াের হাউস টেক ইউ নট টু কাম ওভার হিয়ার। বাট ইউ আর নট দেয়ার। নাউ দ্যাট আই মিট ইউ হিয়ার, আই রিকোয়েস্ট ইউ নট টু সিট হিয়ার এনি মাের। স্যার আমি আপনার বাসায় যােগাযােগ করে এখানে আসতে নিষেধ করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আমি আপনাকে বাসায় পাইনি। স্যার আপনাকে আবারও বলছি, দােহাই এখানে থাকবেন না। আপনার জন্য দুঃশ্চিন্তার কারণ আছে বলে বলছি। আপনি একটা দণ্ড এখানে থাকবেন না। ইট ইজ নট সেফ ফর ইউ। এখানে থাকা আপনার জন্য এক মুহূর্ত নিরাপদ নয়। এই বলেই সে আমাকে গাড়িতে তুলে দিল।

তখন আমি ফিরে এলাম আর্মি হেড কোয়ার্টারসে। আমি এসে দেখলাম শফিউল্লাহ সাহেব, জিয়া সাহেব, এয়ার চীফ এ.কে. খন্দকার, নেভাল চীফ এম এইচ খান, আরও কয়েকজন ব্লেড টেপ সিনিয়র অফিসার; ইট ওয়াজ অ্যারাউন্ড ডন-সােবেহ সাদেকের সময় হবে। ইউ কেম টু নাে এ কুঁ হাজ টেকেন প্লেস আমরাও আমাদের অফিসারদের মাধ্যমে তথ্য পেয়েছি। আমি সব সিনিয়র অফিসারদের মধ্যে বসে বসে চিন্তা করেছিলাম এই ঘটনার পেছনে একজন অন্তত উচ্চপদস্থ অফিসারের হাত হবে। সেই অফিসার কে? আমি প্রথমে শফিউল্লাহ সাহেবের চোখে সােজাসুজি তাকালাম। তার মধ্যে ভাবান্তর লক্ষ্য করলাম না। তিনিও আমার দিকে আগের মতই তাকিয়ে কথা বললেন। তবে হি লুকড হােপলেস

অ্যান্ড লস্ট। তাকে কেমন যেন অসহায় মনে হতে লাগল। মনে হল এমন অসহায় তাকে আর কখনও দেখিনি। হি ওয়াজ রাদার নার্ভাস। কেমন দুশ্চিন্তাচ্ছন্ন মনে হল, তাই মনে হল হয়তাে এই সব ঘটনার সাথে জড়িত নাও হতে পারেন। এরপরে তাকালাম জেনারেল জিয়াউর রহমান সাহেবের দিকে, কিন্তু তিনি সারাক্ষণ নিচের দিকে তাকিয়েছিলেন। তার চোখের দিকে চেষ্টা করেও তাকান যাচ্ছিল না। আবার তিনি অসহায় এমনও মনে হচ্ছিল না। | যাহােক তারপরে তাকালাম রিয়ার এডমিরাল এম এইচ শানের দিকে। তারদিকে তাকানাের সাথে সাথে তিনি আমাকে বললেন, ব্রিগেডিয়ার রউফ ইউ অয়ারর দি ইমডিয়েট লাস্ট হেড অফ দি এজেন্সী, মেৰী ইউ আর দেয়ার নাউ হােয়াই ডন্ট ইউ ফাইন্ড আউট হু ইজ ডুয়িং হােয়াট। এডমিরাল এম, এইচ খান। আমাকে বললেন, রউফ সাহেব কিছুদিন আগে পর্যন্ত আপনি সামরিক গােয়েন্দা সংস্থার প্রধান ছিলেন। হয়তাে এখন নেই, আপনি কেন খোঁজ-খবর নিচ্ছেন না কারা এই সব কাণ্ড ঘটাল। আপনি বলছেন না কেন ইউ টেল হু ইজ ডুয়িং হােয়াট। আপনি বলুন এইসব ঘটনা কারা ঘটিয়েছে। তারা কারা? তাদের পিছনে কারা আছে? আমি বললাম, এডমিরাল টু বি অনস্ট, আই উইল টেল উইথ ডিউ অ্যাপলজি আই ডােন্ট নাে হু ইজ ডুয়িং হােয়াট। আমি বললাম, অ্যাডমিরাল সাহেব, আমাকে মাফ করবেন, সত্যি কথা বলতে কি, আমার কাছে সঠিক তথ্য নেই, এখনও আমার কাছে তেমন কোন তথ্য নেই। ইউ ওয়ান্ট সী টু ব্রীপ অন দি সিচুয়েশন, আই অ্যাম এফৱেইড আই ক্যান নট। এই মুহূর্তে যদি আপনি বলেন আপনাকে ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করতে তা পারব না, আমি দুঃখিত। আমি এরপর বিমানবাহিনীর প্রধান এ, কে খন্দকারের মুখের দিকে তাকালাম। তিনিও অত্যন্ত দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত এবং অসহায় বলে মনে হল। | এর মধ্যে চিফ অফ দি জেনারেল স্টাফ খালেদ মােশারফ দরজা খুলে আর্মি। চিফ শফিউল্লাহর ঘরে ঢুকলেন। তাকে অত্যন্ত ক্লান্ত মনে হচ্ছিল, শুধু অসহায় বললে কম বলা হবে মনে হচ্ছিল যে সে যেন একেবারেই ভেঙে পড়েছে। হি লুকড টেরিবলী ব্রোকেন অ্যান্ড ওয়ারী অ্যান্ড অ্যাবসলুটলী লস্ট। হি ওয়াজ গারস্কয়িং। তার ক্লান্ত দেহ ভর্তি ঘামে। তিনি মিশনে গিয়েছিলেন, যে ট্যাংক বহর নিয়ে ৩২ নাম্বার রােডের দিকে গিয়েছিল অ্যুত্থানকারীরা তাকে পাঠান হয় সে ট্যাংক বহরের প্রতিরােধের জন্য। তিনি তার মিশন থেকে এসে শফিউল্লাহকে বললেন, স্যার আই ওয়েন্ট টু দি সিটি ইউথ ফোর ইস্ট বেঙ্গল । বাট দি সিচুয়েশান ইজ নাউ আউট অব কন্ট্রোল। শফিউল্লাহ আকসড হিম টু সীট ডাউন। খালেদ মােশারফ সাহেব এসে সফিউলাহ সাহেবকে বললেন, স্যার আমি চার নাম্বার ইস্ট বেঙ্গল বাহিনীকে নিয়ে শহরে গিয়েছিলাম। (ট্যাংক বহরকে বাধা দেবার জন্য) কিন্তু অবস্থা সম্পূর্ণ আয়ত্তের বাইরে। শফিউল্লাহ সাহেব তাকে বসতে বললেন।

প্রশ্ন : খালেদ মােশাররফ সাহেব কি অভূত্থানকারীদের বাধা দিতে গিয়েছিলেন?

উত্তর : জ্বী হি ওয়াজ আউট উইথ ফোর ইস্ট বেঙ্গল টু দি সিটি ফর দ্যাট পারপাস। বাট দে স দ্যাট ট্যাঙস ওয়ায়ার ডেমলয়েড। সাে দে হার্ট ইউ উড বী ফিউটাইল টু ডু এনিথিং উইথ দি অডিনারী উইপন্স। সাে দে কেম ব্যাক। জ্বী হ্যা।

খালেদ মােশাররফ সাহেব অত্যুখানকারীদের বাধা দেবার জন্যই চার নাম্বার। বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেনাবাহিনীকে নিয়ে শহরে গিয়েছিলেন। কিন্তু তারা দেখতে পান যে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বিশেষকরে ৩২ নাম্বার রােডের কাছে বেশ কয়েকটি ট্যাংক মােতায়েন করা আছে। তাদের সাথে যে অস্ত্র ছিল; অর্থাৎ মর্টার বা অন্যান্য সাধারণ অস্ত্র দিয়ে ট্যাংক মােকাবেলা করা সম্ভব ছিল না। আমরা কিন্তু এখনও জানি না শেখ ইজ কিড। আমরা অ্যুথান হয়েছে শুনেছি। তার প্রধান সঙ্গী মারা গেছেন শুনিনি। আমি খালেদ মােশাররফের চোখের দিকেও তাকালাম; কারণ খালেদ মােশাররফও খুব উচ্চাকাংখী ছিল। আমার মনে প্রশ্ন এল। কুড হি ডু দ্যাট। তার পক্ষে সম্ভব? কিন্তু তাকে যেমন অসহায় এবং দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মনে হল তার সম্পর্কে আমার সন্দেহ মনে রইল না।

এমন সময় শফিউল্লাহ সাহেবের অফিসের সামনে দরজায় ভীষণ জোরে শব্দ হতে লাগল। দেয়ার ওয়ার ভেরী বিগ ব্যাংগ অন দি ফ্রন্ট ডাের অব দি চীফস অফিস। রুম। আর অফিসের দুটো দরজা ছিল। একটা পারম্যানেন্টাল বন্ধ থাকতাে। আর একটা দরজা ছিল সেই দরজায় ভীষণ শব্দ হচ্ছে। কে যেনাে পাশের দরজাটা খুলে। দিল। তখন বাইরের থেকে একটা স্টেনগান নিয়ে ঢুকল ডালিম। সে ভীষণ জোরে চীৎকার করে বলতে লাগলাে হােয়ার ইজ দি চীফ অফ স্টাফ? তার সার্টের বােতাম খােলা। হাপ ওয়ে ডাউন। বুকের কিছুটা দেখা যায়। হিজ আইজ ওয়ার রেড। তার চোখ লাল। শফিউল্লাহ সাহেব তার টেবিলেই বসেছিলেন। আমরা সবাই তাকে ঘিরেই বসা। তাকে দেখতে না পারার কিছুই ছিল না। শফিউল্লাহ দরজার দিকে মুখ করেই বসেছিলেন। মনে হয় তাকে কেমন যেন একটা ক্লায়ারডভিজন আক্রান্ত লােক মনে হচ্ছিল; অর্থাৎ যে সব কিছু ধোঁয়াটে দেখে এমন একজন লােক। এমন ধোয়াটে যে, চিফ ওয়াজ সীটিং অন হিজ হিউজ চেয়ার জাস্ট ফেসিং ডাের, হি হ্যান্ড স্ট্যান্ড ইন অ্যান্ড হি ওয়াজ আসকিং হােয়ার ইজ দি চিফ অফ দি স্টাফ

প্রশ্ন : তার এমন হচ্ছিল কেন বলে আপনার মনে হয়?

উত্তর ; আই জাস্ট ডােন্ট নাে। আমি জানি না হােয়াই ওয়াজ ডুয়িং লাইক দ্যাট। বাট হি ওয়াজ এজাকটলী ডুয়িং দ্যাট। সে কেন এমন করছিল জানি না তবে তাইই করছিল। আই রীড বাট হি কুড নাইদার সী নর রিকগনাইজ দি চীফ অফ দি স্টাফ। সে সময়ে আমি হেড কোয়ার্টারসে মিলিটারী সেক্রেটারী (এম এস) ছিলেন জেনারেল নাসিম। মিলিটারী সেক্রেটারী অ্যান্ড হিজ ব্রাঞ্চ ওয়াক্কাস ডাইরেকটলী আন্ডার দি চিফ অফ স্টাফ। হি ইজ রেসপ্যানসিবল ফল মেইনটেইনিং দি রেকর্ডস অফ অফিসার্স অ্যানাউনসিং এ্যান্ড দেয়ার ট্রান্সফারস এটসেকটরা। জেনারেল, নাসিম বললেন, ডালিম ডােন্ট ইউ সী দি চীফ ইজ সীটিং জাস্ট বীফোরট। বাট আই জাল কেন? 

ইউ। তুমি দেখছ না প্রধান সেনাপতি তােমার সামনেই বসে আছেন। হােয়াট ডােন্ট ইউ কীপ কোয়ায়েট অ্যান্ড সীট হেয়ার ডাউন। আই হ্যাভ দি আপ্রেহে সন বিকজ অফ জিয়াউদ্দিনস ওয়ার্নিং হি মাইট ওপেন ফায়ার ফ্রম বিহাইন্ড মি বাটি ল্যাটার আই আন্ডারস্টুড হি ডিড নট কাম ফ্রম মাই বীহাইল্ড পারপাজলী ।

বাট ডালিম স্যাট ডাউন অ্যান্ড দেন স্টারটেড ফাস্বালিং অ্যাড শাউটিং অরটারনেটলী ডালিম সেইড, স্যার আই নীড ইউ ভেরী মাচ। আই ওয়াজ লুকিং ফর ইউ ডেসৃপ্যারেটলী। দি রক্ষীবাহিনী ওয়াজ অ্যাবাউট টু লাঞ্চ এ কাউন্টার অফেনসিভ। সাে আই উইল রিকোয়েস্ট ইউ টু লুক ইনটু ইট। উড প্লীজ গাে টু সাভার।

তখন ডালিমের কথায়তাে আর আমি চীফ স্যার যেতে পারেন না। তবে হাতে অন্ত্র। ওকে থামানাের জন্য এয়ার চীফ এ, কে খন্দকার বললেন, ডালিম ডােন্ট ইউ ওয়ারী ওভার দ্যাট। দি চীফ হ্যাজ অলরেডী লুকড ইন্টু দ্যাট। দি প্রােবলেম উইল বী ট্যাকলড ওয়েল। খন্দকার সাহেব বললেন, আমার এ বিষয়ে আর ভাবতে হবে

আর্মি চীফ নিজেই ব্যাপারটা দেখছেন। সমস্যার সমাধান তিনি করবেন। অলরেঙী এ ব্যাপারটা দেখার জন্য তিনি ব্যবস্থা নিয়েছেন। উনি এমনি বলে দিলেন। ডালিমকে শান্ত করার জন্য।

এমন সময় মেজর আমিন আহমেদ চৌধুরী (নিউ ব্রিগেডিয়ার) কেম উইথ এ রেডিও। আমার মনে হয় ডালিম তার বক্তব্য রেডিওতে রেকর্ড করে এসেছিল। রেডিওতে ডালিমের গলা। শেখ মুজিবর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে এবং তার সরকারের পতন ঘটেছে। তখনই প্রথম আমি এবং অন্যরাও শুনলেন যে, দি প্রেসিডেন্ট ইজ কিলড। প্রথম আমার মনে হয় এটা একটা পাবলিসিটি টান্ট বা প্রচারণার মাধ্যমে সবাইকে হতবাক করে দেবার একটা চেষ্টা এমন সময় মেজর মাহমুদুল হাসান কনফারমড হয়ে জানালেন যে বঙ্গবন্ধু হ্যাজ বীন কিলড। তিনি চীফের রুমে টেলিফোন করলেন। চীফের নামে আমাকে টেলিফোন দেয়া হয়। তিনি আমাকে বললেন, স্যার ইউ ডু নাে দি প্রেসিডেন্ট ইজ কিলড। ইট ইজ কনফামড়। তিনি তখন আমার গােয়েন্দা সংস্থায় কাজ করতেন। তাই টেলিফোন আমাকে দেয়া হয়। তিনিই আমার কাছে কনফামড় করেন। আমি বললাম, হেয়ার ওয়াজ হি কিলড তিনি কোথায় নিহত হয়েছেন? মাহমুদ সাহেব আমাকে বললেন, তার বাসায়। তিনি বললেন, প্রেসিডেন্টস নেপেট শেক মনি অ্যান্ড ব্রাদার ইন ল অ্যান্ড মিনিস্টার আব্দুর রব সেরনিয়াবাত হ্যাজ অলসাে ধী কিলড। আমি জিজ্ঞাসা করলাম হু হ্যাড কিন্তু দেম? তিনি তখন কিছু নাম বললেন যারা অত্যুত্থানকারী বলে পরিচিত সাত জনের মধ্যে আছেন। আর কয়েকটা নাম বললেন সেগুলাে আমি অফ দি রেকর্ড রাখতে চাই। অন্তত এখনও তা বলা ঠিক নয়। 

সূত্র : ফ্যাক্টস্- এন্ড ডকুমেন্টস্–বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড – অধ্যাপক আবু সাইয়িদ

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!