আমার দৃষ্টিতে আগস্ট বিপ্লব– মাওলানা আবদুর রহিম
(ক) ১৯৭৫ সনের ১৫ই আগস্ট সূর্যোদয়ের প্রাক্কালে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর রাস্তায় যে ঘটনা সংগঠিত হয়, আমার মতে একটি যুগান্তকারী অনিবার্ষিক ঘটনা। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে ৭১ সনের ১৬ই ডিসেম্বরের পূর্ববর্তী ও তার পরবর্তী সময়ের মধ্যে যে পার্থক্য, আমি মনে করি উক্ত ঘটনা নীতিগতভাবে পূর্ণ মাত্রায় ও বাস্তবে আংশিকভাবে সেইরূপ পার্থক্যের সৃষ্টি করেছিল। ১৬ ডিসেম্বরের পূর্বে বাংলাদেশ নামে কোনাে স্বাধীন দেশের অস্তিত্ব ছিল না পৃথিবীর মানচিত্রে, আর উক্ত ১৫ই আগস্টের পূর্বে বাংলাদেশ নামে স্বাধীন হলেও কার্যত ছিল প্রতিবেশী রাষ্ট্রের অধীন। কিন্তু তার পরে বাংলাদেশ নীতিগতভাবে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের মর্যাদা লাভ করে। ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ অস্তিত্ব লাভ করে প্রধানত ভারতের সাহায্যে, কিন্তু কার্যত তা পাকিস্তানের পরিবর্তে ভারতের অধীনতার নাগপাশে নতুন করে বন্দী হয়। কার্যত তা ভারতের বিজিত অধিকৃত একটি অঞ্চলে পরিণত হয়। ভারতের আচরণে তা একটি ভারতীয় রাজ্যের মর্যাদা পায়। এখানকার প্রেসিডেন্ট ভারতীয় রাজ্যের রাজ্যপাল এবং প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মর্যাদায় অভিষিক্ত হয়। ভারতীয় পত্র পত্রিকায় এইরূপ প্রচারণাই চালানাে হয়। কিন্তু ১৫ই আগস্ট সে অধীনতার নাগপাশ ছিন্ন করে একটি প্রকৃত স্বাধীন রাষ্ট্রের মর্যাদার দিকে অগ্রযাত্রা করতে সমর্থ হয়। যদিও পর মুহুর্তেই তা কাটিয়ে ওঠা-অনেক বন্ধনে নিজেকে পুনরায় বেঁধে ফেলার চেষ্টা চলে। ভারতের প্রতি অনুগত থাকার প্রতিশ্রুতিও নতুন করে উচ্চারিত হয়। তাকে ক্ষমতা প্রাপ্ত ব্যক্তির বিশ্বাসঘাতকতা বলে অনায়াসেই চিহ্নিত করা যায়, কিন্তু তা সত্ত্বেও এখানকার জনগণ সে বন্ধন থেকে মুক্তি প্রাপ্তির স্বস্তি লাভ করতে সমর্থ হয়; তারা প্রকৃত স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে উঠে। তারা ১৬ ডিসেম্বর পূর্ববর্তী অবস্থার প্রতি ঘৃণা প্রকাশের সাথে ১৫ আগস্টের পূর্ববর্তী অবস্থার প্রতি আন্তরিক ঘৃণা করতে শুরু করে প্রকাশ্যভাবে। তাই আমার দৃষ্টিতে ১৫ই আগস্টের ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য একটি অনিবার্ষিক, বাঞ্ছনীয় ও ঐতিহাসিক গুরুত্ববহ ঘটনা। তা না ঘটলে আজকের বাংলাদেশের জনগণের সামগ্রিক চেতনার অস্তিত্ব সম্পূর্ণরূপে অকল্পনীয়ই থেকে যেত।
(খ) সেদিন লােক চক্ষুর অন্তরালে যা কিছু ঘটতে যাচ্ছিল তা এতই ভয়াবহ যে, এখন তার কল্পনা করলেও শরীর শিউরে উঠে। সম্ভবত পরিকল্পনা ছিল তদানীন্তন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্টকে ভারতের ভাইস প্রেসিডেন্টের মর্যাদার অভিসিক্ত করা হবে এবং বাংলাদেশের নিজস্ব সামরিক বাহিনীকে নিরস্ত্র করে এ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভারতীয় পঞ্চাশ হাজার সেনানী অবস্থান গ্রহণ করবে। তার উপর লিখিত দলিলে স্বাক্ষর গ্রহণ এবং সেনানী অবস্থানের স্থান নির্ধারণের উদ্দেশ্যে একটি বিশেষ হেলিকপ্টারে করে ভারতীয় ৮ জন জেনারেল সেই মুহুর্তে বাংলাদেশে উপস্থিত হয়েছিলেন বলে জানা যায়। এ খবর অনেকেরই গােচরীভূত হয়ে থাকবে যে, সেদিন একটি ভারতীয় হেলিকপ্টার এন্টিএয়ার ক্রাফটের সাহায্যে নামানাে এবং ৮টি লাশ সীমান্ত পথে ভারতের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছিল। খােদা-না-খান্তা ১৫ই আগস্টের ঘটনা সংঘটিত না হলে আজকের বিপুল মুসলিম সংখ্যাধিক সম্বলিত বাংলাদেশ অধিকৃত কাশ্মীরের অবস্থায় পৌছে যেত এবং এ দেশকে একটি আদর্শিক ইসলামিক রাষ্ট্রে পরিণত করার ও সংগ্রামের কোনাে অবকাশেরই চিন্তাধারা সম্ভবপর হতাে না। স্বাধীনতা ও জাতীয় অস্তিত্বের নাম চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যেত না।
(গ) তাই আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি,
যারাই ১৫ই আগস্টের ঘটনার পরিকল্পনা ও উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন তারা মুক্তিযুদ্ধেরই একটি অসমাপিত অধ্যায়কে সম্পূর্ণতা দানের অনিবার্ষিক বিপ্লবী পদক্ষেপই গ্রহণ করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায় ৭১ সনের ১৬ই ডিসেম্বর। অতিবাহিত হয়নি তা হয়েছিল, ‘৭৫ সনের ১৫ই আগস্ট; অতএব তা মুক্তিযুদ্ধের মতােই তারও বেশি তুলনাহীন বিপ্লবী পদক্ষেপ এবং তা স্বাধীন বাংলাদেশ ও তার নয় কোটি মুসলিম অধিবাসীর সামগ্রিক কল্যাণ চিন্তারই ফলশ্রুতি, এতে আমার কোনােই সন্দেহ নেই। এই ঘটনাই বিশ্ব সমাজের সম্মুখে রক্তের আঁখরে লিখে অকাট্যভাবে। প্রমাণ করেছ যে, বাংলাদেশের জনগণ শুধু যে ১৬ ডিসেম্বর পূর্ববর্তী অবস্থার প্রতি অসন্তুষ্ট ছিলেন তাই নয় তারা ১৫ই আগস্টের পূর্ববর্তী অবস্থার প্রতি তার চাইতেও অধিকতর ঘৃণা পােষণ করেন, তারা নামকা ওয়াস্তের স্বাধীনতার ভিলাষী নন, তারা। প্রকৃত আঞ্চলিক ও বাস্তব স্বাধীনতার জন্য চূড়ান্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতেও দ্বিধাবােধ। করে না। স্বাধীনতার জন্য চূড়ান্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতেও দ্বিধাবােধ করে না। স্বাধীনতার অন্তঃসারশূন্য শ্লোগান দিয়ে তাদের ভােলানাে সম্ভব নয়, প্রকৃত স্বাধীনতা নীতিগত, আদর্শগতভাবে যেমন তাদের কাম্য, তেমনি বাস্তবতার নিরিখে উত্তীর্ণ প্রকৃত স্বাধীনতার জন্য তারা শেষ রক্তবিন্দু দিতেও কুণ্ঠিত নয়।
(২) ১৫ আগস্ট যারা বিপ্লব করেছিলেন, তারা ঢাকা রেডিও স্টেশন থেকে প্রথমেই ঘােষণা করেছিলেন যে, বাংলাদেশকে ইসলামী গণপ্রজাতন্ত্র বানাবার। উদ্দেশ্যেই এই বিপ্লব ঘটেছে। আমার দৃষ্টিতে এই বিপ্লবের অন্য কোনাে লক্ষ্য থাকা। কল্পনীয় নয়। কেননা তারপরে যদি সঠিকভাবে পূর্ববর্তী অবস্থাই বিরাজ করতে। থাকে, তাহলে এই রক্তপাত সম্পূর্ণ নিষ্ফল এবং একেবারেই তাৎপর্যহীন। এ বিষয়ে। বিপ্লবীরা কতটা ভাবনা-চিন্তা করেছিলেন তা আমার জানা নেই। তবে এ পর্যায়ে। কিছু না কিছু পরিকল্পনা থাকা স্বাভাবিক- এটাই আমি বলতে পারি। তবে বিপ্লবের পরে তাৎক্ষণিকভাবে যে সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিল, তা ইসলামী প্রজাতন্ত্র ঘােষণার সহিত কিছুমাত্র সামঞ্জস্যশীল নয়।
কেননা সেই, প্রথম ঘােষণার পর আর কখনই তা ঘােষিত হয়নি। না হওয়ার। কারণ কি তা আমার সম্পূর্ণ অজানা। তবে পরে প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রীমণ্ডলে যাদেরকে। দেখা গেল তারা তাে সেই আগের ব্যবস্থারই ধারক বাহক এবং তারা কোনাে দিনই। ইসলামী প্রজাতন্ত্রের সমর্থক ছিলেন না। শুধু তাই নয়, সংবিধানে। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ ও গণতন্ত্র এই চার মূলনীতি সংজোযিত করে ভারতের শাসনের সহিত সাদৃশ্য বিধান করা হয়েছিল, শাসনতন্ত্রে তা পুরােপুরি বহাল থাকল, যদিও প্রেসিডেন্ট পদে সমাসীন ব্যক্তির স্বীয়পদের বৈধতা রক্ষার জন্য প্রয়ােজনীয় সংশােধনী তাৎক্ষণিকভাবেই করে নেয়া হয়েছিল। আমি বলব এ সব কারণে আগস্ট বিপ্লবকে কেন্দ্র করে যে প্রত্যাশা দেশবাসীর। মনে জেগে উঠেছিল তা অনতিবিলম্বে বিলীন হয়ে গেল। জনগণ যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই থেকে গেল। এই ব্যাপারে চরম হতাশা, নৈরাশ্য ও ভীতির সঞ্চার হলাে আরাে গভীরভাবে, তখন ২রা নভেম্বর সম্পূর্ণ ভিন্নতর অবস্থা দেখা দিল। এই ‘ ভিন্ন অবস্থার রূপ কি ছিল, তার ব্যাখ্যা দেয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে সেই সময় জনগণের মধ্যে একটা ভয়াবহ প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছিল। তা আমি প্রত্যক্ষ করছিলাম। এই অবস্থা ৬ই নভেম্বর পর্যন্ত বিরাজ করে। ৭ই নভেম্বর অবশ্য বাংলাদেশের আকাশে সমাচ্ছন্ন পঞ্জীভূত ঘনঘটা হঠাৎ করে মিলিয়ে নিয়ে নতুন। আশা-আকাক্ষা ও উৎসাহ উদ্দীপনার নবপ্রবাহ বাংলাদেশের আকাশে-বাতাসে, পথে-ঘাটে, সড়ক-রাজপথে লক্ষ্য করা যায়—তারা যেন সেদিন স্বস্তির নিঃশ্বাস । ছেড়েছিল এবং মুক্তির স্বাদ পেয়েছিল।
অতঃপর ২৪শে নভেম্বর থেকে দেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সহিত। সরকারের আলাপ-আলােচনা শুরু হয়ে যায়। রাজনৈতিক দলসমূহের স্বতন্ত্র অস্তিত্বের স্বীকৃতির আশ্বাস পাওয়া যায় এবং উদারভাবে রাজনৈতিক তৎপরতা চলবে এবং প্রত্যেকটি দল স্বীয় মতামত অনুযায়ী তৎপরতা চালাতে পারবে বলে লােকদের মনে বিশ্বাস জন্মে। ৭৬ সন এমনি ভাবেই অতিবাহিত হয়। এই বছরই বাকশাল জগদ্দল পাথরকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিয়ে রাজনৈতিক দলসমূহ নিজ নিজ অস্তিত্ব নিয়ে আত্মপ্রকাশ করে। | (৪) আগস্টে বিপ্লব ঠিক কাদের দ্বারা সংঘটিত হয়েছিল, সে বিষয়ে আমার কোনাে প্রত্যক্ষ জ্ঞান নাই। কর্নেল রশীদ ও কর্নেল ফারুকের নাম অবশ্য পত্রপত্রিকা বা লােক পরম্পরায় শুনেছি এবং এও শুনতে পেরেছি যে তারা সেই ঐতিহাসিক ৬ই নভেম্বরের পর থেকে বিদেশে নির্বাসিত হয়ে আছেন এবং এখন পর্যন্ত তারা দেশের বাইরেই রয়েছেন। এ পর্যায়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে যে, তারা বিদেশে কি স্বেচ্ছায় বসবাস করছেন? না বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে তাদের উপর দেশে প্রবেশাধিকার হরণ করা হয়েছে? অন্ততঃ আগস্ট বিপ্লবের পরবর্তী কোনাে সরকারের নিকট যে তারা এমন কোনাে অপরাধ করেননি সে জন্য তারা বিদেশে অবস্থান করতে বাধ্য হতে পারেন। কেননা আগস্ট বিপ্লব না হলে এ সব সরকার যে কোনাে দিনই ক্ষমতায় আসতে পারতেন না তা বােঝাবার জন্য যুক্তির অবতারণার প্রয়ােজন পড়ে তাদের বা তৎপরবর্তী বর্তমান সময়ের সকল ক্ষমতাসীন সরকারের ক্ষমতায় আসা আগস্ট বিপ্লবের প্রত্যক্ষ বা পরােক্ষ অবদান, তা কোনােক্রমেই অস্বীকার করা যেতে পারে না। অতএব পরবর্তী প্রত্যেকটি সরকারেরই যে সাধারণ কৃতজ্ঞতা স্বরূপ- অন্ততঃ নাগরিক অধিকার ও মানবিকতার দিক দিয়ে তাদের সম্মানজনক প্রত্যাবর্তন এবং দেশের সুনাগরিক হিসেবে ভূমিকা পালনের সুযােগ দান বাঞ্ছনীয়, তা আমি অকপট বলতে চাই।
(৫) বাংলাদেশ ভারতীয় রাষ্ট্রের সহযােগিতায় ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ যুদ্ধের ফলে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। অতঃপর ৭৫ সনের ১৫ আগস্ট পর্যন্ত ভারতেরই প্রত্যক্ষ প্রভাব বাংলাদেশের উপর অব্যাহত থাকে। তাকে আরাে গভীর ভাবে দানা বাঁধিয়ে তুলেছিল ভারতের সহিত বাংলাদেশের ২৫ বছরের শশাষণ চুক্তি। এই চুক্তির ৯ ও ১০ ধারা বাংলাদেশের প্রকৃত স্বাধীনতাকেই হরণ করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের তদানীন্তন শাসকরা শেষ পর্যন্ত কেবলমাত্র ভারতের অধীনতায়ই সন্তুষ্ট থাকতে পারেনি। এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, ভারতে নামকা ওয়াস্তের হলেও কিছু না কিছু গণতন্ত্রের ধারা রক্ষিত রয়েছে। ফলে নির্বাচনের মাধ্যমে ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরিত হওয়ার সুযােগ আছে। কিন্তু বাংলাদেশের তদানীন্তন শাসকরা ক্ষমতা হস্তান্তরিত হােক তা কোনাে ক্রমেই চাচ্ছিলেন না। দেশের রুশপন্থী কমিউনিস্টরা শাসকদের এই মনস্তাত্ত্বিক দুর্বলতার সুযােগে বাংলাদেশে রুশীয় পদ্ধতি প্রতিষ্ঠিত করার মন্ত্রে তাদের অত্যাচার জুলুম নিপীড়ন শোষণ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আওয়াজ তােলার কোনাে সুযােগ কারুর জন্য থাকবে না। এ রূপ অবস্থায়ই নিশ্চিন্তে ক্ষমতাসীন হয়ে থাকার নির্ভেজাল আনন্দটুকু উপভােগ করা যেতে পারে। ফলে আজীবন গণতন্ত্রবাদী হয়েও শেখ মুজিব জাতীয়
সংসদে মাত্র ১৩ মিনিটে বাকশাল কায়েমের প্রস্তাব পাস করিয়ে নিয়ে নিরীহ নয় কোটি মানুষের মাথায় শেল মারতে সক্ষম হয়েছিলেন। এই বাকশাল পদ্ধতি রুশীয় কমিউনিস্ট ডিকটেটরি শাসনেরই পরিকল্পনা। সকল রাজনৈতিক দল বেআইনী ঘােষণা করে একটি মাত্র রাজনৈতিক দল, দেশের প্রেসিডেন্টই এই একমাত্র দলের প্রেসিডেন্ট, জনগণের মুখপাত্র সকল পত্র-পত্রিকা বেআইনী করে মাত্র চারটি সরকারি পত্রিকা রেখে জনমত নিস্তব্ধ করে দেয়া এবং দেশের কল-কারখানা ব্যবসায়-বাণিজ্য ও ক্ষেত-খামার একান্তভাবে সরকারের নিয়ন্ত্রিত হওয়ার মতাে নিশ্চিন্ত ব্যবস্থা শাসকদের জন্য আর কি হতে পারে। কিন্তু এ বাকশাল এ দেশের আপামর জনগণের উপর ছিল সকল ও মানবিক অধিকার হরণের জগদ্দল পাথর। ১৫ আগস্টের বিপ্লব এই পাথরকে চিরতরে সরিয়ে দিতে চেয়েছিল যেন কোনাে দিনই এ দেশের গণমানুষের উপর অনুরূপ অবস্থার প্রচ্ছায়া আর কোনাে দিনই প্রভাব বিস্তার করতে না পারে।
সূত্র : ফ্যাক্টস্- এন্ড ডকুমেন্টস্–বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড – অধ্যাপক আবু সাইয়িদ