যশাের খুলনা দুই শহরই জনমানবশূন্য
তুষার পত্ৰনবীশ। মালঞ্চ (মুক্তিফৌজের অগ্রবর্তী ঘাটি), ৮ এপ্রিল-যশােরের চার মাইল দক্ষিণে এই ঘাঁটিতে যখন পৌছলাম তখন দেখি, আশপাশের গ্রামগুলির ভিতর থেকে কুন্ডলী পাকিয়ে ধোয়া বেরােচ্ছে। গ্রামগুলি এখান থেকে দূরে নয়-বেশি হলেও দু’মাইলের মধ্যেই।
যশাের ও খুলনায় পাক দখলদার বাহিনীর উসকানি ও যােগসাজসে কয়েকদিন ধরে নির্বিচারে লুট ও হত্যা চলে। সবচেয়ে দুর্ভাগ্য যে, ধুনায় পাক বাহিনী হিন্দু ও মুসলমানের সংহতি ও সম্প্রীতিতেও ফাটল ধরাবার জন্য মরীয়া হয়ে ওঠে। পশ্চিম সীমান্তে একমাত্র কুষ্টিয়া পাক লুঠেরাদের হাত থেকে পুরােপুরি মুক্ত। মুক্তি ফৌজ যশাের ক্যান্টনমেন্ট আক্রমণের জন্যই বােধহয় যশােরের চারদিক ঘিরে রয়েছে।
যশাের ক্যান্টনমেন্ট থেকে দেড় মাইল দূরে জোদিয়া গ্রাম ব্যাপকভাবে ধ্বংস হয়েছে বলে জানা গেল। পুরাে গ্রামটিই ধুলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। সকালে বেরিয়ে এক মুজাহিদের কাছ থেকে জানলাম, তশবিরডাগ গ্রামে এদিন সকালে বিহারী মুসলমানরা লুটপাটের পর খাদ্য গুদামে আগুন লাগিয়ে দেয় । যশাের খুলনা দুই শহরই আজ জনমানবশূন্য।
Reference:
৯ এপ্রিল ১৯৭১, দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা