রাজাকার গোলাম আযমের বিরুদ্ধে সাক্ষী দেয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল
ইমতিয়াজ বুলবুল ছাত্রজীবনে মাধ্যমিকে অধ্যয়নরত অবস্থায় মাত্র ১৫ বছর বয়সে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেন।[২][৩] এসময় তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের ২ নাম্বার সেক্টরে মেজর আবু তাহের মোহাম্মদ হায়দারের অধীনে যুদ্ধ করেন।[৩] ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অপারেশন সার্চলাইটের পর বুলবুল ও তার বন্ধুরা মিলে পাকিস্তানিদের কাছ থেকে অস্ত্র ছিনতাই করে ছোট একটি মুক্তিযোদ্ধা দল গঠন করেন যাদের ঘাঁটি ছিল ঢাকার জিঞ্জিরায়।[২] জুলাইয়ে বুলবুল ও তার বন্ধু সরোয়ার মিলে নিউ মার্কেটের ১ নাম্বার প্রবেশমুখের কাছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর লরিতে গ্রেনেড হামলা করেন।[১] অগস্টে ভারতের আগরতলায় কিছুদিন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং ঢাকায় ফিরে ‘ওয়াই (ইয়াং) প্লাটুন’ নামে একটি গেরিলা দল গঠন করেন।
অক্টোবরে পুনরায় ভারত যাওয়ার সময় বুলবুলসহ চারজন কুমিল্লা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাঝামাঝি তন্তর চেকপোস্টে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে আটক হন।[৩] আটক হওয়ার পর প্রথমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগারে ও পরে এ অঞ্চলের শান্তি কমিটির প্রধান কার্যালয়ে নির্যাতনের শিকার হন।[১] পরবর্তীতে বয়সে ছোট হওয়ায় তিনি মুক্তি পান কিন্তু ঢাকায় তার নিজ বাসা থেকে পুনরায় গ্রেফতার হন ও জাতীয় সংসদের মানিক মিয়া এভিনিউ’র এমপি হোস্টেলে নির্যাতনের শিকার হন।[৩] সেখান থেকে তাকে রমনা থানায় স্থানান্তর করা হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিজয়ী হওয়ার পর মুক্তিবাহিনী রমনা থানা থেকে আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করেন।[৩] পরবর্তীতে তাকে পিজি হাসপাতালে (বর্তমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) চিকিৎসা প্রদান করা হয়।[৩]
যুদ্ধাপরাধের সাক্ষী
২০১২ সালের আগস্টে ইমতিয়াজ বুলবুল বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দন্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রদান করেন।[২][৪] পরবর্তীতে ২০১৩ সালের ৯ মার্চ রাতে ঢাকার কুড়িল উড়ালসেতুর পাশ থেকে পুলিশ বুলবুলের ছোট ভাই আহমেদ মিরাজের লাশ উদ্ধার করে।[১] তার ভাইয়ের মৃত্যুর পর তিনি সরকারের কাছে তার নিরাপত্তা বৃদ্ধির আবেদন করেন এবং এটাও উল্লেখ করেন যে সাক্ষ্য দেওয়ার পর তিনি বেশ কিছু হত্যার হুমকি পেয়েছেন।[৪]
আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল (১ জানুয়ারি ১৯৫৬ – ২২ জানুয়ারি ২০১৯)
[উইকিপিডিয়া থেকে]
0
People reached
138
Engagements
–
Distribution score
Boost again