পাকিস্তানের নাগরিক ও সংখ্যালঘুদের বিষয় সংক্রান্ত প্রশ্নে মৌলিক অধিকার কমিটির রিপোর্ট, পাকিস্তান গণপরিষদ, ৬ই অক্টোবর, ১৯৫০
পাকিস্তানের নাগরিক ও সংখ্যালঘুদের বিষয় সংক্রান্ত প্রশ্নে মৌলিক অধিকার কমিটির রিপোর্ট
[৬ই অক্টোবর, ১৯৫০ পাকিস্তান গণপরিষদে গৃহিত]
পাকিস্তানের নাগরিকদের মৌলিক অধিকার
প্রথম পত্র
নাগরিকত্ব
১। সংবিধানের সুচনালগ্নে নাগরিকত্তঃ যেদিন থেকে এই সংবিধান কার্যকর হবে সেদিন থেকে সকলে পাকিস্তানের নাগরিক বলে বিবেচিত হবে।
(ক) যিনি এবং যাদের পিতামাতা কিংবা তাদের পিতামাতা পাকিস্তানের অংশীভূত সীমানায় চৌদ্দই অগাস্ট ১৯৪৭ এর পর জন্মগ্রহন করেছেন এবং পাকিস্তানিভাবে অন্য রাষ্ট্রে বসবাস করেন না ।
(খ) যিনি এবং যাদের পিতামাতা কিংবা তাদের পিতামাতা ৩১ মার্চ ১৯৩৭ সালের ভারতের অংশভূত সীমানায় জন্মগ্রহন করেছেন এবং ১৯২৫ সালের ভারতীয় উত্তরাধিকার আইনের দ্বিতীয় পত্রে বর্ণিত ধারা অনুসারে যাদের পাকিস্তানে বাসস্থান রয়েছে তাদের উপরেও ইহা প্রযোজ্য হবে।
অংশ ২- মৌলিক চাহিদা
১। আইনের দ্বারা জীবনের নিরাপত্তা,ব্যক্তি,স্বাধীনতা এবং সমতা-
১, ক) সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান/আইন সকল নাগরিকের উপর সমানভাবে প্রযোজ্য হবে।
খ) আইন অনুসারে,কোন ব্যক্তি জীবনধারণ এবং ব্যক্তিস্বধীনতার অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে না।
ইহা প্রযোজ্য হবে যদি এই সংবিধান কার্যকর হওয়ার পূর্বে কেও অন্য রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহন করেছিল কিন্তু যথাযথ কতৃপক্ষের নিকত লিখিত অঙ্গিবাচনার মাধ্যমে উক্ত নাগরিকত্ব বর্জন করেন।
২। অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হবার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা – কোনো ব্যক্তিই এমন কোনো কাজের জন্য শাস্তি পাবেন না যেক্ষেত্রে যেটি করবার সময়কালে তা করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ ছিলো না।
৩। কোনো ব্যক্তিকে আদালতে হাজির করতে(Habeas Corpus) আদালতের পদক্ষেপের অধিকারঃ রাষ্ট্রের নিরাপত্তায় কোনো বৈদেশিক বা আভ্যন্তরীণ হুমকী বা জরূরী অবস্থা ব্যতিরেকে, কোনো ব্যক্তিকে আদালতের সম্মুখে হাজির করতে (Habeas Corpus) সমন জারির জন্য আদালতের পদক্ষেপ নেওয়ার যে অধিকার নাগরিকের আছে তা রহিত করা হবে না।
৪। ধর্ম, বর্ণ, জাত কিংবা লিঙ্গ বিবেচনায় বৈষম্যর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞাঃ শুধুমাত্র ধর্ম, বর্ণ, জাত, লিঙ্গ বা জন্মস্থান-সহ গন চিত্তবিনোদন, মনোরঞ্জন , কল্যাণ বা সেবামূলক কোনো স্থানে প্রবেশগম্যতা বিবেচনায় কোনো বৈষম্য করা হবে না। এই শর্তে যে, এই অনুচ্ছেদের কোনো কিছু, নারী ও শিশুদের সুবিধার্থে বিশেষ বিধানের ব্যবস্থা করতে রাষ্ট্রের ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করবে না । আরও এই শর্তে যে, এই অনুচ্ছেদের বিধানসমূহ ধর্মীয় উপাশনালয়,মন্দির কিংবা সমগোত্রীয় পবিত্র স্থানের প্রয়োগ করা হবে না।
৫. দাসবৃত্তি এবং জোর করে শ্রমে বাধ্য করায় নিষেধাজ্ঞা –
(১) কোন ব্যক্তিই দাসত্ব অথবা অধীনস্থ থাকবে না।
(২) সকল প্রকার জোরপূর্বক শ্রম আদায় বেআইনি।
(৩) কোন ব্যক্তিই নির্যাতন অথবা অমানবিক ব্যবহার অথবা শাস্তির আওতায় থাকবে না।
৬. কারখানায় শিশু নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা, ইত্যাদি- ১৪ বছরের নিচে শিশুদের কোন কারখানা বা খনি অথবা যেকোন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োগ দেয়া নিষেধ।
৭. সাধারণ জনগণের নিয়োগদানে সমতা- প্রত্যেক যোগ্য নাগরিক চাকরির ক্ষেত্রে ধর্ম, বর্ণ, জাত, লিঙ্গ, গোত্র অথবা জন্মস্থান নির্বিশেষে সমান সুযোগ পাবে। বিধানানুযায়ী, সংখ্যালঘু বা অনুন্নত জনগোষ্ঠীকে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য তাদের জন্য বিশেষ কোটা রাখা বেআইনি নয়। চুক্তি অনুসারে আরো বলা হয় যে, কোন ধর্ম বা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য একজন ব্যক্তি একটি অফিস পাবে যার মাধ্যমে সে সরকারের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারবে।
৮. সম্পদের বাধ্যতামূলক অর্জন-
(১) কোন ব্যক্তিই আইনানুযায়ী প্রাপ্য সম্পদ থেকে বঞ্চিত হবে না।
(২) কোন সম্পদই সংভৃত বা দখল করা যাবে না যদি না সেটা জনসাধারণের উপকারার্থে আইনের আওতায় সরকার কর্তৃক ন্যায্য ক্ষতিপূরণবাবদ হয়। এই ধারা কোন অবস্থাতেই কোন বিদ্যমান আইন কোন প্রভাব ফেলবে না যা পরবর্তীতে জোরপূর্বক শুল্ক আরোপে বাধ্য করে অথবা গণস্বাস্থ্য এবং জীবন বা সম্পদের হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
এই ধারা বা এর কোনো উপধারা শুল্ক আরোপ অথবা জনস্বাস্থ্যের উন্নতি অথবা জীবন বা সম্পদের প্রতি কোনো হুমকি প্রতিরোধ করার উদ্দেশ্যে প্রণীত বিদ্যমান কোনো আইন বা আইনের ধারার উপর কোনোভাবেই প্রভাব ফেলবে না ।
৯.পাকিস্তানের প্রতিটি নাগরিকের বাকস্বাধীনতা নির্দিষ্ট কিছু অধিকার যেমন-(১)বাকস্বাধীনতা প্রভৃতি সুরক্ষার নিশ্চয়তা প্রদান করা হইল :
ক. বাকস্বাধীনতা,মতপ্রকাশ,সংগঠন,পেশা,কর্ম,ব্যবসা-বাণিজ্য,সম্পত্তি অর্জন ও হস্তান্তর এবং নিরস্ত্র শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার অধিকার।
খ.পাকিস্তানের যেকোনো স্থানে মুক্তভাবে চলাচল এবং উহার যে কোনো অংশে অবস্থান অথবা স্থায়ীভাবে বসবাসের অধিকার,
গ)সমান কাজের জন্য সমান মজুরির অধিকার।
(২)এই অনুচ্ছেদ এর কোনো কিছুই কোনো বিদ্যমান আইন এর কার্যকারিতা অথবা বিদ্বেষপূর্ণ কুৎসা,অপবাদ,রাষ্ট্রদ্রোহ অথবা অন্য কোনো বিষয় শালীনতা ও নৈতিকতা বিরোধী এবং রাষ্ট্রের কতৃপক্ষ অথবা প্রতিষ্ঠার অবমাননাকারী সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে আইন প্রণয়নে এবং জনস্বার্থে বা জনশৃঙ্খলা রক্ষায়,নৈতিকতা অথবা স্বাস্থ্য রক্ষায় , এই অনুচ্ছেদে নিশ্চয়তা দানকারী কোনো ব্যক্তিস্বাধীনতা বা অধিকার কে সীমিত বা নিয়ন্ত্রণ করতে রাষ্ট্রকে বাধা দেবে না।
—————————-
জনাব লিয়াকত আলি নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দিবেন কি ?
১. ঐতিহাসিক লাহোর চুক্তির/ সমাধানের ভিত্তিতে বলা হয়েছিল পাকিস্তানের আলাদা আলাদা প্রদেশগুলো সম্পুর্ন স্বাধীন এবং সর্বভৌমভাবে হিসাবে মর্যাদা পাবে। যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে এই মূল বক্তব্যটি কেন বি.পি.সি সুপারিশে পুরো ব্যাপারটি অগ্রহ্য করা হল?
২. আপনি কি স্বীকার করবেন যে, পূর্ব পাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তান থেকে প্রায় ২০০০ কিলোমিটার বিদেশভুইয়ের উপর দিয়ে যেতে হত। তাদের কি স্বাধীন এবং সার্বভৌমভাবে নিজেদের পরিচালনা করা প্রাপ্য ছিল না?
৩. লাহোর চুক্তি বা সামাধানে বলা হয়েছিল যে, পাকিস্তানের সার্বভৌম তার জনগণের উপরে ন্যাস্ত। রাষ্ট্রপ্রধান দ্বারা কখনোই সংবিধান স্থগিত করার ক্ষমতা দেয়া হয়নি লাহোর সমাধানে। কিন্তু তারপরেও বারবার বিভিন্ন সময় সংবিধান নিজের খেয়ালখুশি মত রাষ্ট্রপ্রধানগণ কেন সংবিধান স্থগিত করেছিলেন?
৪. আপনি কি এটা স্বীকার করবেন না যে বারবার সংবিধান স্থগিত কারনে জনগনের অধিকারগুলো কে একধরনের সংকাটময় পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড় করে দিয়েছিল। কিংবা এই কারণে পাকিস্থান আসতে আসতে একনায়কতন্ত্রের দিকে ধাবিত হচ্ছিল।
৫. উচ্চকক্ষ কোন চিন্তাভাবনার ভিত্তিতে মধ্যযুগের ব্যর্থ সামন্ততন্ত্রের উপরে দুই আইনসভাকে একই ধরনের ক্ষমতা দেবার ব্যাপারটি চালু করেছিল? এটা কী সংখ্যাগরিষ্ট এবং সংখ্যালঘুদের মধ্যে একধরণের বাঁকা রেখা এঁকে দিয়েছিল না?
৬. শতকরা ৬২ ভাগ বাঙ্গালিদের মুখের ভাষাকে অবহেলা করে তাঁদের উপর উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা ঘোষনা দেয় কি তাঁদের রাষ্ট্রীয় অধিকার থেকে কি বঞ্চিত করা হয়নি?
৭. এটি কি অগনতান্ত্রিক আচারণ নয় যে প্রাদেশিক মন্ত্রিসভা, প্রাদেশিক আইনসভার পরিবর্তে কেন্দ্রিয় সরকারের কাছে দায়বদ্ধ?
৮. এটা কি আপনি স্বীকার করেন না যে, গত তিন বছরে পূর্ব পাকিস্তানের উপর কেন্দ্র সারকারের অযাচিত হস্তক্ষেপ পূর্ব পাকিস্থানের বানিজ্য এবং সংস্কৃতির ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে। নিচে পয়েন্ট আকারে কিছু পরিসংখ্যান দেয়া হল।
১. ক) পাট থেকে ক্রামানয়ে বানিজ্য ঘাটতি। ১৯৪৮ এ পাট থেকে আয় ১১৪ কোটি। ১৯৪৯ তা গিয়ে দাঁড়ায় ৭৫ কোটিতে। ১৯৫০ পাট রপ্তানির পরিমান মাত্র ৩৫ কোটি কেন ?
খ) চাষীদের জন্যে উপলব্ধ পাটের মূল্য নির্দিষ্ট করে দেয়া মূল্যের চাইতে অনেক নিচে নেমে গেছে। অনৈপুন্যের জন্যে পূর্ব বাঙলায় পাটের মূল্য যখন ১২ টাকা তখন সীমান্তের ওপারে পাটের মূল্য ৫০ টাকা।
গ)পাট বোর্ড কি কেবল ইস্পাহানী, হারুন আর আদমজীদের স্বার্থসিদ্ধির জন্যে পাট উৎপাদনকারি কৃষকদের খিদমত করছে না?
ii) সুপারির মূল্য যখন ৭৫ টাকা মণ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ১২ টাকায় তখন সীমান্তের ওপারে ভারতীয় ইউনিয়নে তা বিক্রি হয় ৯০ টাকা মণে।
iii) প্রাদেশিক সরকার হইতে কেন্দ্রে পূর্ব বাংলার সকল রাজস্ব স্থান্তিরিত হওয়ায় প্রাথমিক, মাধ্যমিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থায় ধস, যখন কেন্দ্র সরকারের অনুদানে পশ্চিম পাকিস্থানে বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে ওঠেছে।
iv) সরকারের ভুল আমদানি-রপ্তানী নীতির কারণে একসময়ের উন্নয়ণশীল কুটিরশিল্পগুলো যেমন- হোসায়ারী শিল্প, চিরুনি, শাখ ও বোতাম উৎপাদন শিল্প এবং পিতল এবং কাসার দ্রব্যসমূহ; এখন অনুন্নতির পথে।
v) চট্টগ্রাম বন্দর উন্নয়নে অবহেলা এখনো পূর্ব বাঙলাকে এখন ভারতীয় ইউনিয়ের কাছে অনুগত করে রেখেছে। যা পুর্ব বাঙলার শিল্প ও বানিজ্যকে প্রবাহিত করে চলেছে।
ডেমোক্রেটিক ফেডারেশন কেন্দ্রিয় কমিটি
পাকিস্তানের সংবিধান
মৌলিক নীতি হিসাবে গৃহীত গ্র্যান্ড ন্যাশনাল সম্মেলন প্রস্তাবনা
যেহেতু এই গ্র্যান্ড ন্যাশনাল কনভেনশনের মানুষ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের সার্বভৌম ক্ষমতা শুধুমাত্র আল্লাহর যিনি রহমত বর্ষবর্তীতে পাকিস্তান সৃষ্টি করেছেন তাঁর খাঁটি ও প্রকৃত প্রতিনিধিদের জন্য যেন তারা এই অঞ্চলে রাজত্ব করে এবং পাকিস্তানের জনগনের জন্য প্রদত্ত সমস্ত অধিকার, আরাম ও সুযোগ-সুবিধা উপভোগ করে; এবং ১৯৪০ সালে, লাহোরে সর্বভারতীয় মুসলিম লীগের কাউন্সিলের অধিবেশনে একটি রেজোলিউশন (সমাধান) পাস হয় যা পাকিস্তানের সংবিধানের মূলনীতি এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সার্বভৌম এবং স্বায়ত্তশাসিত পরিষদ সৃষ্টিতে স্থানিক সান্নিধ্য বজায় রাখে।
এবং যেহেতু পাকিস্তান গণপরিষদের সাব-কমিটি ঘোরের মাঝে সংবিধানের মূলনীতির ড্রাফট করেছে এবং পাকিস্তান তৈরিতে নীতির ইচ্ছাকৃত লঙ্ঘন করে যা পূর্বোক্ত লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তি; এবং যেখানে সংবিধান প্রণয়নের মত চরম দায়িত্ব সহজাতভাবেই জনগণের উপর অর্পিত এবং সংবিধানের মূলনীতি প্রণয়ন বিষয়ক সংসদীয় উপকমিটির সদস্যরা সংবিধানের যথার্থ মূলনীতি এবং মৌলিক অধিকার দিতে শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়।
এবং যেখানে গ্রান্ড ন্যাশলান কনভেনশন সমগ্র জনগণের আশা আকাঙ্খার প্রতিনিধি হিসাবে লাহোর প্রস্তাবের রুপায়ন এবং ইসলামী ন্যায় ও সাম্যের নীতি অনুযায়ী গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আলোচনার জন্যে একত্রিত হয়েছে এবং সংবিধানের মূলনীতির খসড়া প্রনয়ণের জন্যে এই গ্রান্ড ন্যাশলান কনভেনশন এখন জনগনের কর্তৃত্ব দ্বারা এতদ্বারা মূল নীতি ও মোউলিক অধিকারের এই খসড়া প্রনয়ন করছে
নাম ও ধরণ:
১. রাষ্ট্রের নাম হবে ইউনাইটেড দা স্টেটস অব পাকিস্তান
২. ইউনাইটেড স্টেটস অব পাকিস্তান গঠিত হবে দুটি অঞ্চল নিয়ে
৩. রাষ্ট্রের ভেতর কোনো এলাকা বহির্ভূত, আংশিক ভাবে বহির্ভূত এবং কেন্দ্রীয় ভাবে প্রতিপালিত বা কোনো রাজোচিত রাজ্য থাকবে না। এখানে উল্লেখিত ধরণের সব এলাকা সংলগ্ন বা পাশ্ববর্তি প্রদেশ বা প্রদেশগুলোর সঙ্গে একীভূত হবে, অথবা এই ধরণের একীভূতকরণ ও গঠনের সম্ভাব্যতা অনুসারে সংশ্লিষ্ঠ জনগণের চাওয়া অনুযায়ী গণভোটের মাধ্যমে নিজেরাই প্রদেশ গঠন করবে।
৪এ. ইউনাইটেড স্টেটস অব পাকিস্তান হবে একটি সার্বভৌম সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র।
রাষ্ট্র প্রধান:
৪. ইউনাইটেড স্টেটস অব পাকিস্তানের একজন রাষ্ট্র প্রধান থাকবেন
৫. ইউনাইটেড স্টেটস অব পাকিস্তানের নির্বাহী ক্ষমতা ন্যস্ত করা হবে রাষ্ট্র প্রধানের ওপর, তিনি পরিচালনা করবেন সংবিধান ও আইন অনুযায়ী।
৬. “রাষ্ট্রপ্রধান” উপাধিটি অর্থবহ শুধু এই ব্যতীত যে, মন্ত্রীপরিষদের পরামর্শে তিনি কাজ করবেন নিজের ব্যক্তিগত বিচার বা রাষ্ট্রপ্রধানের বিচক্ষণতায়।
রাষ্ট্র প্রধান নির্বাচন:
৭. রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচিত হতে হবে কেন্দ্রীয় সংসদের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায়। তবে তার সংসদের সদস্য হওয়া চলবে না।
৮. রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচিত হবেন বিদায়ী রাষ্ট্রপ্রধানের মেয়াদ শেষের ৩০
(এটা ভীষণ গোলমেলে। ৩০ দিনের পরে নয়, আবার ৬০ দিনের আগেন নয়, কি করে হয়?
The Head of the State should be elected not earlier than 60 days and not later
than 30 days before the expiry of the term of the out-going Head of the State.
কার্যকাল:
৯. রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্বের মেয়াদ হবে তার দায়িত্ব গ্রহণের দিন থেকে ৫ বছর।
১০. রাষ্ট্রপ্রধানের মৃত্যু, পদত্যাগ, অসামর্থ্য বা অপসারণের কারণে পদ খালি হলে নতুন রাষ্ট্র প্রধানের মেয়াদ হবে ৫ বছর।
রাষ্ট্র প্রধানের অপসারণ:
১১. রাষ্ট্রদ্রোহ বা বিধিবহির্ভূত কাজে অভিযুক্ত হলে সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে রাষ্ট প্রধানকে অপসারণের ক্ষমতা প্রদত্ত থাকবে ফেডারেল পার্লামেন্টের।
১২. রাষ্ট্রপ্রধানের মৃত্যু, পদত্যাগ, অসামর্থ্য বা অন্য কোনো কারণে পদ খালি হলে নতুন রাষ্ট্র প্রধান নির্বাচনের আগ পর্যন্ত দায়িত্ব নেবেন সংসদের স্পিকার।
১৩. রাষ্ট্র প্রধানের পদ খালি হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নতুন রাষ্ট্র প্রধান নির্বইচত করতে হবে।
রাষ্ট্র প্রধানের ক্ষমতা ও কার্যক্রম:
১৪. রাষ্ট্র প্রধানের অনুকম্পার ক্ষমতা থাকতে হবে।
১৫. ইউনাইটেড স্টেটস অব পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর ওরপর রাষ্ট্র প্রধানের কতৃত্ব থাকবে।
১৬. নিজস্ব বিবেচনায় তিনি ইউনাইটেড স্টেটস অব পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনার, সুপ্রীম কোর্টের বিচারক ও মহা হিসাব নিরীক্ষক নিয়োগ দেবেন।
১৭. প্রধানমন্ত্রীকে তিনি এমন একজনকে হিসেবে নিয়োগ দেবেন, যার ওপর সংসদের সংখ্যাগষ্ঠের আস্থা আছে। প্রধানমন্ত্রীর পরাপর্শে অন্যান্য মন্ত্রীদের নিয়োগ দেবেন তিনি।
১৮. তিনি বিদেশী কূটনীতিকদের নিয়োগ দেবেন, দূতদের স্বাগত জানাবেন এবং সকল আনুষ্ঠানিক আয়োজনে রাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করবেন।
ইউনাইটেড স্টেটস অব পাকিস্তান সরকারের গঠন:
১৯. ইউনাইটেড স্টেটস অব পাকিস্তানের সংসদ হবে এক কক্ষ বিশিষ্ট
২০. সংসদ বসবে একান্তর ভাবে সংযুক্ত রাষ্ট্রেরি রাজধানীতে ও পূর্বাঞ্চলের রাজধানীতে।
২১. সংসদের সদস্য নির্বাচিত হবেন জনগনের দ্বারা, প্রতিটি অঞ্চলের সমান প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে প্রাপ্তবয়স্কদের ভোটাধিকার ও সংযুক্ত নির্বাচকণ্ডলী পদ্ধতিতে।
২২. পার্লামেন্টের মেয়াদ হবে চার বছর।
২৩. সংসদ সদস্যরা প্রত্যাহারের জন্য দায়বদ্ধ থাকবেন ইলোক্টোরাল কলেজের কাছে।
২৪. প্রতি বছর দুটির কম অধিবেশন বসা যাবে না এবং প্রতিটি অধিবেশনের শেষ দিন ও পরের অধিবেশনের প্রথম দিনের মাঝে ৬ মাসের বেশি সময় অতিবাহিত হওয়া যাবে না।
২৫. প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগের তিন মাসের মধ্যে সংসদের অধিবেশন বাহবান করতে হবে।
২৬. সংসদ স্থগিত রাখতে পারবেন রাষ্ট্র প্রধান।
২৭. সংসদ থেকে পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে সব আর্থিক বিবরণী অনুমোদন করবেন রাষ্ট্র প্রধান। অন্যান্য বিবরণির অনুমোদন দিতে হবে ৩০ দিনের মধ্যে।
২৮. নির্বাচন কমিশনার, সুপ্রশি কোর্টের বিরাচরক ও পাকিস্তানের মহা হিসাব নিরীক্ষক যদি রাষ্ট্রদ্রোহ ও বিধিবহির্ভূত কাজে অভিযুক্ত হন, সংসদের দুই-তৃতীয়াংষ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় তাদের অপসারণ করা যাবে।
২৯. আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা সরকারের অধীনে কোনো লাভজনক দায়িত্বে থাকবেন না।
নোট- সংসদ সদস্য হিসেবে সদস্যদের পাওয়া সম্মানী লাভজনক দায়িত্বের মধ্যে পড়বে না।
স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার:
৩০. সংসদের প্রথম অধিবেশনেই স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন করতে হবে।
৩১. রাষ্ট্র প্রধানের পদ খালি হলে, স্পিকার যদি সেই দায়িত্ব গ্রহণ করেন তাহলে তার সদস্যপদ হারাবেন না, তবে রাষ্ট্র প্রধানের দায়িত্ব পালনের সময় তা স্থগিত থাকবে।
সংসদের বিলুপ্তি:
৩২. সুনির্দিষ্ট প্রয়োজন ও গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ইস্যুতে সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের মতামত জানতে মন্ত্রীপরিষদের পরাপর্শে সংসদ বিলুপ্ত করবেন রাষ্ট্র প্রধান।
৩৩. যদি এমন কোনো আকস্মিকতা দেখা দেয় যে মন্ত্রীপরিষদ সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা আদায় করতে পারছে না, সেখানে রাষ্ট্র প্রধন নিজস্ব বিচক্ষণতায় সংসদ বিলুপ্ত করা ও নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষমতা রাখবেন।
৩৪. সংসদ বিলুপ্ত করার পর, আসল খালি হওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে।
মন্ত্রীপরিষদ:
৩৫. মন্ত্রী পরিষদের সদস্যরা একত্রিত ভাবে এবং পৃথকভাবে সংসদের কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন।
৩৬. সংসদের সদস্য যে কোনো নাগরিক মন্ত্রীপরিষদের সদস্য হতে পারবেন, যদি তিনি মন্ত্রী হিসেবে তার নিয়োগের ৬ মাসের মধ্যে সংসদ্য সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হতে পারে। কোনো কৌশল, অভিসন্ধি বা আইনী ধারা বলেই এই ৬ মাসের সময়কাল বাড়ানো যাবে না।
সুপ্রীম কোর্ট:
৩৭. ইউনাইটেড স্টেটস অব পাকিস্তানে একটি সুপ্রীম কোর্ট থাকবে
৩৮. সুপ্রীম কোর্ট বসবে একান্তর ভাবে সংযুক্ত
রাষ্ট্র ভাষা
৪১.বাংলা ও উর্দু দুইটি ভাষাই হবে ইউনাইটেড স্টেট অব পাকিস্থানের রাষ্ট্র ভাষা
কেন্দ্রীয় বিষয়াবলী
৪২.(১)আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী (২) প্রতিরক্ষা;
(ক)কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রনে পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের জন্য দুইটি আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা বাহিনী থাকবে
(খ)আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা বাহিনী পরিচালিত ও গঠিত হবে তার স্ব স্ব অঞ্চলের জনগনের মাধ্যমে
(গ)পূর্বাঞ্চলের আঞ্চলিক পররাষ্ট্র বিষয়ক একটি অফিস থাকবে
(ঘ)অন্যান্য সকল ক্ষমতা থাকবে আঞ্চলিক সরকারের হাতে
কেন্দ্রীয় সরকারের রাজস্ব
৪৩. কেন্দ্রীয় সরকার নির্দিষ্ট কিছু বিষয় ও জিনিসের উপর কর আরোপের ক্ষমতা ভোগ করবে; রাজস্ব ঘাটতি পূরণের জন্য নতুন কর আরোপের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক সরকারের মতামতের প্রয়োজন হবে
সংবিধান সংশোধন
৪৪.সংবিধান হবে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন
৪৫. দুই-তৃতীয়াংশ ফেডারেল সদস্যের ভোটে ফেডারেল সরকারের সংবিধান সংশোধন করা যাবে তবে, যদি কোন সংশোধনী কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে আঞ্চলিক সরকারের স্বার্থের বিরোধ দেখা দেয় সে ক্ষেত্রে প্রথমে আঞ্চলিক পরিষদে প্রতিনিধিদের দুই-তৃতীয় সংখ্যাগরিষ্টের ভিত্তি একটি রেজুলেশন পাশ করিয়ে পরবর্তীতে তা কেন্দ্রীয় পরিষদের দুই-তৃতীয়াংশের সংখ্যাগরিষ্টের ভোটে পাশ করাতে হবে। সংবিধানের অন্যান্য সকল সংশোধনী আঞ্চলিক পরিষদের দুই-তৃতীয়াংশের সংখ্যাগরিষ্টের ভোটে পাশ করা যাবে
সংবিধান রহিতকরন
৪৬.সংবিধানের কোন অংশ বা সংবিধান রহিতকরেনর কিংবা স্থগিতকরনের কোন ক্ষমতা কোন কর্তৃপক্ষের থাকবে না
পূর্ব পাকিস্থানের আঞ্চলিক সরকার
৪৭. এ অঞ্চলে একজন সরকার প্রধান থাকবে
৪৮. নির্বাহী ক্ষমতা থাকবে আঞ্চলিক সরকারের প্রধানের হাতে; তিনি সংবিধান ও আইন দ্বারা সে ক্ষমতা প্রয়োগ করবে
৪৯. হেড অব দ্য রিয়জন বলতে বুঝাবে কেবিনেট প্রদত্ত ক্ষমতা ও নিষ্ঠার দ্বারা কর্মরত কোন এনটিটি
৫০. আঞ্চলিক সংসদ উক্ত অঞ্চলের সরকার প্রধান নির্বাচন করবে পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে
৫১.বিদায়ী আঞ্চলিক প্রধানের ক্ষমতাকাল শেষ হওয়ার ৬০ দিন পূর্বে নতুন আঞ্চলিক প্রধান নির্বাচিত করতে হবে
ক্ষমতাকাল
৫২. আঞ্চলিক সরকার প্রধানের ক্ষমতাকাল হবে ৫ বছর
৫৩. মৃত্যু, পদত্যাগ, অসমর্থ, অপসারিত কিংবা অন্য কোন কারনে আঞ্চলিক সরকার প্রধানের পদটি শূন্য হলে পুনঃনিয়োগকৃত সরকার প্রধানের ক্ষমতাকাল হবে ৫ বছর
আঞ্চলিক সরকার প্রধানের অপসারণ
৫৪. রাষ্ট্রদ্রোহিতা কিংবা আদালত কর্তৃক অপরাধি ঘোষিত হলে আঞ্চলিক পার্লামেন্ট সংসদের দুই-তৃতীয়াংশের মতামতের ভিত্তিতে আঞ্চলিক প্রধানকে ক্ষমতা থেকে অপসারন করতে পারে
৫৫. মৃত্যু, পদত্যাগ, অসমর্থ, অপসারিত কিংবা অন্য কোন কারনে আঞ্চলিক সরকার প্রধানের পদটি শূন্য হলে আঞ্চলিক পরিষদের স্পিকারের হাতে আঞ্চলিক প্রধানের ক্ষমতা থাকবে আঞ্চলিক সরকার প্রধান পুনঃনিয়োগের আগ পর্যন্ত
৫৬. আঞ্চলিক সরকার প্রধানের পদটি শূন্য হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে পুনঃ আঞ্চলিক সরকার প্রধান নির্বাচিত করতে হবে
আঞ্চলিক সরকার প্রধানের ক্ষমতা ও কর্ম
৫৭. মৃত্যুদন্ড মওকুপের ক্ষমতা থাকবে আঞ্চলিক সরকার প্রধানের হাতে
৫৮.আঞ্চলিক সরকার প্রধান তার নিজ ক্ষমতাবলে নির্বাচন কমিশনার, হাই কোর্টের বিচারক ও অডিটর জেনারেল নিয়োগ দিতে পারবেন
৫৯.সংসদের সংখ্যাগরিষ্টের মতামতের ভিত্তিতে মনোনিত ব্যক্তিকে আঞ্চলিক সরকার প্রধান প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ এবং অন্যান্য মন্ত্রীদেরকে প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশের ভিত্তিতে নিয়োগদান করে
আঞ্চলিক সরকারের সংগঠন
৬০. আঞ্চলিক সরকারের পার্লামেন্ট হবে এক কক্ষ বিশিষ্ঠ
৬১. আঞ্চলিক সরকারের পার্লামেন্ট মেম্বার সার্বজননীন প্রাপ্ত বয়ষ্কদের ভোট এবং জয়েন্ট ইলেক্টরেট সিস্টেমে নির্বাচিত হবে
৬২. পার্লামেন্ট আয়ুস্কাল হবে ৪ বছর
৬৩. প্রতি বছর কমপক্ষে তিনটি সংসদ অধিবেশন বসবে; বিগত সংসদ অধিবেশন হতে পরবর্তী অধিবেশনের প্রথমদিনের মধ্যে চার মাসের অধিককাল ব্যবধান হতে পারবেনা
৬৪. প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের ৩ মাসের মধ্যে পার্লামেন্ট অধিবেশন ডাকতে হবে
৬৫. আঞ্চলিক সরকার প্রধান পার্লামেন্টের অধিবেশন সমাপ্তি ঘোষনা করবে
৬৬.অর্থ বিল উপস্থাপনের ৩ দিন এবং অন্যান্য বিল উপস্থাপনের ৩০ দিনের মধ্যে আঞ্চলিক সরকার প্রধান সম্মত্তি প্রদান করবেন
৬৭. রাষ্ট্রদ্রোহিতা কিংবা আদালত কর্তৃক অপরাধি হিসেবে ঘোষিত হলে পার্লামেন্টের দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে নির্বাচন কমিশনার, হাই কোর্টের বিচারক ও অডিটর জেনারেলকে পার্লামেন্ট অপসারণ করতে পারবে
স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার
৬৮. পার্লামেন্টের প্রথম অধিবেশনে সংসদের স্পিকার এবং ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হবে
৬৯.স্পিকার যখন সরকার প্রধানের দায়িত্ব গ্রহন করবে তখন তার সংসদ সদস্যপদ হারাবে না তবে, তিনি যতদিন সরকার প্রধানের দায়িত্বে থাকবেন ততদিন তার সদস্যপদ স্থগিত থাকবে
পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দেওয়া
৭০. জরুরী ও যুদ্ধকালীন বিশেষ করনীয় নির্ধারনের জন্য গনভোট নেওয়ার প্রয়োজন হলে সরকার প্রধান কেবিনেটের মতামতের ভিত্তিতে সংসদ ভেঙ্গে দিতে পারে
৭১. যদি এমন কোন বিশেষ অবস্থা সৃষ্টি হয় যখন সংখ্যাগরিষ্টতার অভাবে মন্ত্রিপরিষদ গঠন না করা যায় তখন সরকার প্রধান তার ক্ষমতাবলে পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দিয়ে পুনরায় নির্বাচন দিতে পারে
৭২. সংসদ ভেঙ্গে দেওয়ার তারিখ হতে ৬০ দিনের মধ্যে সাধারন নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে
৭৩. নৈবত্তিক কারনে পার্লামেন্টের কোন সিট শূন্য হলে তা শূন্য হওয়ার তারিখ হতে ৪৫ দিনের মধ্যে পূরণ করতে হবে
কেবিনেট
৭৪. কেবিনেটের সকল মেম্বার একক এবং যৌথভাবে পার্লামেন্টের নিকট দায়বদ্ধ
৭৫. যে কোন নাগরিক, পার্লামেন্টের সদস্য না হয়েও মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেতে পারে এই শর্তে যে তার মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগের ৬ মাসের মধ্যে পার্লামেন্ট মেম্বার হিসেবে নির্বাচিত হতে হবে। কোন অবস্থাতেই অন্তর্বতীকালীন এই ৬ মাস সময় আর বৃদ্ধি করা যাবে না
আঞ্চলিক উচ্চ আদালত
৭৬. এই অঞ্চলে আঞ্চলিক উচ্চ আদালত থাকবে
৭৭. উচ্চ আদালতের অরিজিনাল এবং আপিলাত জুরিসডিকশন থাকবে
৭৮. উচ্চ আদালতে একটি স্টান্ডিং ইলেকশন কমিটি থাকবে যারা আঞ্চলিক পরিষদের সকল নির্বাচনকালীন সমস্যার সমাধান দিবে
পশ্চিম অঞ্চলের প্রাদেশিক সরকার
যেখানে পশ্চিম অঞ্চল প্রশাসনিক ভাবে বহুবিধ শাখা রয়েছে এ জন্য অঞ্চলের সংবিধান বিশেষ ক্ষেত্রে পুর্বাঞ্চলের থেকে আলাদা হওয়া উচিৎ।এজন্য এরূপ সুপারিশ যে পশিমাঞ্চলের মানুষ একত্রিত হয়ে আলোচনার মাধ্যমে তাদের সরকারের রূপরেখা ঠিক করবে তৎসঙ্গে পুর্বাঞ্চলের সরকারে কি ধরনের পরিবর্তন বা বিকল্প ব্যাবস্থা প্রয়জন সেটা সিদ্ধান্ত নিবে।
নাগরিকগনের প্রাথমিক অধিকার ঃ
ক ।(১)আইনের দৃষ্টিতে সকল নাগরিক সমান ।
(২) কোর্টে বিচার ব্যতিরিকে কোন ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়া যাবেনা ।
(৩) ১৮ বছরের হলে এবং অস্বাভাবিক মানসিকতার না হলে একজন নাগরিক তার ভোটাধীকার প্রোয়োগ করতে পারবেন এবং ২১ বছরের আগে সংসদ হবার যোগ্যতা থাকবে না ।
(৪) সন্দেহের কারনে কাওকে বন্দি করে আনা যাবেনা ।
খ। প্রতিটি নাগরিকের অধিকার থাকবে-
(১) জীবন
(২) আবশ্যকীয় শিক্ষা কার্যক্রম বিনা বেতনে পড়িবার অধিকার ।
(৩) কাজ এবং চাকুরীর সুবিধা ।
(৪)স্বাস্থ্যসেবা।
(৫) আশ্রয় ।
(৬) জীবনধারণের ব্যয় অনুযায়ী পারিশ্রমিক ।
(৭) শ্রমিক সঙ্গঠন এবং শ্রম অধীদপ্তর এবং যুক্তিসঙ্গত অধীকার আদায়ের জন্য আলোচনা ।
গ। রাষ্ট্র অবশ্যই তার নাগরিকদের নিম্নোক্ত সুবিধা দিবেঃ
(১) সামাজিক ,অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতা ,যাতে বাক স্বাধিনতা,সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা চিন্তা ,কার্যক্রম ,সঙ্গঠন, কর্ম ,ধর্মীও বিশ্বাস অন্তর্গত ।
(২)সামাজিক মর্যাদা এবং সুযোগের সমতা ।
(৩)ব্যক্তির মর্যাদা ।
(৪) বয়স্কদের সুজোগ সুবিধা ।
(৫) মাতৃত্ব কালীন সুযোগ সুবিধা ।
(৬) উৎপাদনের গতির সামাজিকিকরন হবে।
(৭) আইন প্রনেতাগন এমন কোন আইন প্রয়োগ করবেন না যাতে শ্রম শ্রমিক এবং সাধারন মানুষের অপব্যবহার সুযোগ থাকে ।