বাল্টিমোর সান, ২৮ নভেম্বর ১৯৭১
সম্পাদকীয়
দক্ষিণ এশিয়া
দক্ষিণ এশিয়ায় তীব্র উত্তেজনা থামানোর জন্য প্রস্তাবিত পদ্ধতিগুলি বেশিরভাগ সন্দেহজনক। যেমন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কিছু প্রস্তাব যুদ্ধকে সাময়িকভাবে প্রতিরোধ করতে পারে কিন্তু যুদ্ধের অবস্থা সৃষ্টির যে কারণ সেই মৌলিক বিষয়গুলির সমাধান তাতে হয়না।
একইভাবে ভারত ও পাকিস্তান সীমান্ত থেকে তাদের সৈন্য ফিরিয়ে আনতে পারে; এটা যুক্তিসঙ্গত মনে হতে পারে, কিন্তু তাদের মধ্যে দীর্ঘ দিন এবং বিভিন্ন সীমান্তের পরিস্থিতিতে এটি গ্রহণ করা হলে কার্যকর হবে না সম্ভবত।
ভারত এর অবস্থান স্পষ্ট – সম্ভবত ভারত বিশ্বাস করে ঘটনা তার অনুকূলে যাচ্ছে।
পাকিস্তান যদিও আন্তর্জাতিক সীমান্তে ভারত দ্বারা আগ্রাসী অভিযানের সম্মুখীন, তবে তার সত্যতার ব্যাপারে অনিশ্চিত, এবং হয়ত সেগুলি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উপস্থাপন করার চেষ্টা নাও করতে পারে যেখানে সংকটের কারণগুলিও পরীক্ষা করা হবে।
দুই দেশের সহযোগী বড় শক্তিগুলো নিরাপত্তা পরিষদে এবিষয়ে আলোচনা করতে পছন্দ না করতে পারে।
সোভিয়েত ইউনিয়ন ভারতকে সমর্থন করে কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ায় এই মুহুর্তে তারা বিশৃঙ্খলা চাচ্ছেনা।
এটি একটি সুস্পষ্ট ধারণা যে, চীন যদিও পাকিস্তানের সমর্থনকারী তবে নিরাপত্তা পরিষদে তাদের প্রথম অংশগ্রহণে এই বিষয় নিয়ে আসতে চায় না যা দীর্ঘ মেয়াদে চীনের পরিকল্পনাকে আপোষ করতে পারে। সেই বিষয়টি নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে বিতর্কের দ্বারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কী লাভ হবে? এতে করে তারা ভারত- পাকিস্তান সম্পর্কে কতটা নগ্নভাবে পরিচালিত করছে তা প্রকাশ হয়ে পড়বে।
ব্যক্তিগত কূটনীতি একটি সমাধান দিতে পারে। তবে এটিকে ভাল প্রতিশ্রুতিশীল বলা যাবে না। উদাহরণস্বরূপ, আমেরিকা সম্ভবত পাকিস্তান রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খানের দ্বারা শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে রাজনৈতিক সমাধানের ব্যাপারে আলোচনার বিষয়ে আহ্বান জানাচ্ছে বা জানাবে বলে ভাবছে। এটি যুক্তিযুক্ত মনে হলেও শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কোন অঞ্চলে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে বন্দি আছেন। সেটি ইয়াহিয়ার জন্য ব্যার্থতা ও নিষ্ঠুরতার দিকনির্দেশ করে।
এটা মানতে হবে হবে যে বিষয়গুলি এমন ভাবে চালিত হয়েছে যে গত মার্চ মাসের আগে যে পাকিস্তান ছিল তা এখন আর নেই। এবং যদি এটি পুনরায় পুনর্গঠন করা হয় তবে পুনর্গঠনকে অবশ্যই এমন একটি ভিত্তিতে গঠন করতে হবে যা পূর্ব পাকিস্তানকে স্বায়ত্তশাসন দেবে। — যা ইয়াহিয়া ভেবেছিলেন। আমরা আশা করি না যে ইয়াহিয়া এখনো “রাজনৈতিক সমাধানের” জন্য আলোচনা করতে প্রস্তুত।