চট্টগ্রাম নৌ-ঘাঁটি উদ্বোধনে বঙ্গবন্ধু ঘােষণ
চট্টগ্রাম: বাংলাদেশকে বন্ধক রেখে অথবা বিক্রি করে আমি সাহায্য আনতে চাই না। সবাইকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। নিজেদের যা কিছু আছে তাই দিয়ে চলতে হবে। আমাদের নৌবাহিনী যতদিন স্বনির্ভর হতে পারছে তা ততদিন প্রয়ােজন হলে নৌকায় করে নৌবাহিনী চলবে। নৌবাহিনী দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জোয়ানদের উদ্দেশ্যে আজ উপরােক্ত বক্তব্য দেন।
এই উপলক্ষে বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রধান কমডাের মােশাররফ হােসেন খান তার এক শুভেচ্ছাবাণীর জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেন, স্বল্পকালের মধ্যে আমাদের নৌবাহিনী যেভাবে গড়ে উঠেছে। জাতি সেজন্য গর্বিত। তিনি বলেন, নৌ বাহিনীর জোয়ানদের আমরা আজও অনেক সুযােগসুবিধা করে দিতে পারিনি। এমন কি সময়মতাে শীতের কাপড় চোপড় সরবরাহ করতেও নানাবিধ অভাব অসুবিধা ছিল। তথাপি আমাদের জোয়ানরা যে ত্যাগ-তিতিক্ষা ও সেবার মনােভাব নিয়ে দ ত্ব পালন করে যাচ্ছেন জাতি তাদের কাছে সেজন্য কৃতজ্ঞ। বঙ্গবন্ধু বলেন, পাকিস্তানিরা একটা গানবােট পর্যন্ত আমাদের জন্য রেখে যায়নি। তিনি বলেন, পাকিস্তান আমাদের ন্যায্য প্রাপ্য কোনােদিন দেবে কিনা তাও জানি না। তবে সেজন্য আমাদের বসে থাকলে চলবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আত্মমর্যাদা নিয়ে আমরা বাঁচতে চাই। দেশের সম্পদ রক্ষার জন্য নৌবাহিনীর প্রয়ােজনীয়তা অনস্বীকার্য, এটা কারাে বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য নয়। আমরা শান্তি চাই এবং শান্তিপূর্ণ সহ-বস্থানে বিশ্বাস করি। তবে আত্মরক্ষার জন্য প্রয়ােজন হলে আমাদের প্রয়ােজনীয় সব ব্যবস্থাই নিতে হবে। আমি বাংলাদেশকে বন্ধক রেখে অথবা বিক্রি করে সাহায্য আনতে চাই না। জাতিকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। বঙ্গবন্ধু ১৫ মিনিটকাল ভাষণ দেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী তিন ঘণ্টার জন্য গভীর সমুদ্রে যান। সেখানে নৌসেনাদের কিছু কিছু কলাকৌশল প্রদর্শন করা হয়।৩০
রেফারেন্স:
১০ ডিসেম্বর ১৯৭৪, বাংলার বাণী
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত