ফারাক্কা প্রশ্নে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল ভারতকে একক সিদ্ধান্ত না নেয়ার আহ্বান
ঢাকা: যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা ফারাক্কা বাঁধ চালুর ব্যাপারে ভারতকে একক সিদ্ধান্ত না নেয়ার অনুরােধ জানিয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, ফারাক্কা বাঁধের ফলে খুলনাসহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার আড়াই কোটি লােকের খাদ্য উৎপাদন বন্ধ হবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তারা অভিমত প্রকাশ করেন যে, ফারাক্কার পানি ছাড়াই কলকাতা বন্দর রক্ষা করা যাবে। পাকিস্তানি আমলে দুই দেশের মধ্যে বিরােধ ছিল বলেই ফারাক্কা বাঁধ তৈরির জন্য ভারত সরকার সিদ্ধান্ত নেয়। এখন বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকায় ফারাক্কা বাঁধ চালু না করাই সুবিবেচনার কাজ হবে বলে বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরা অভিমত প্রকাশ করেন বলে জানা গেছে। প্রস্তাবিত বিশ্ব খাদ্য পরিষদ গঠিত হলে ফারাক্কা বাঁধের বিভীষিকা হতে বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় আড়াই কোটি লােক রেহাই পাবে বলে বিশেষজ্ঞরা অভিমত দেন।
এই পরিষদ ভারতে ৫০ লক্ষ অনাবাদি জমি আবাদ করে ভারতকে খাদ্যশস্য উৎপাদনে সাহায্য করবে। একই সঙ্গে বিশ্ব খাদ্য পরিষদ বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় পর্যাপ্ত পানি সেচের ব্যবস্থা করে আড়াই কোটি লােকের জীবনধারণের মান উন্নত করতে সাহায্য করবে। খাদ্য উৎপাদন এখন আন্তর্জাতিক সমস্যা হিসেবে গৃহীত হওয়ায় পৃথিবীর সকল দেশের খাদ্য উৎপাদন এখন বিশ্ব সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কাজেই বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের খাদ্য উৎপাদন সমস্যাও বিশ্ব সমস্যায় পরিণত হয়েছে। কাজেই পানির অভাবে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলাে মরুভূমিতে পরিণত হবে। এই আশঙ্কা উক্ত জেলাসমূহের আড়াই কোটি লােকের মন থেকে দূর করতে হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মতাে প্রকাশ করেন।৬১
রেফারেন্স:
২০ নভেম্বর ১৯৭৪, বাংলার বাণী
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত