মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলাে আমাদের মঙ্গলে গভীর আগ্রহী: বঙ্গবন্ধু
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বৃহস্পতিবার ঢাকায় বলেন যে, তার মধ্যপ্রাচ্য সফর অত্যন্ত সফল হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সকালে ৯দিন ব্যাপী মিসর ও কুয়েত সফরশেষে ঢাকা। প্রত্যাবর্তনের পর বিমানবন্দরে সমবেত সাংবাদিকদের সাথে আলাপ করছিলেন। বঙ্গবন্ধু বলেন, মিসর সফরকালে প্রেসিডেন্ট সাদতের সাথে বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক ও সাহায্যের বিষয় নিয়ে আলাপআলােচনা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট সাদতের সাথে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পদ বিনিময় ও পাকিস্তানি নাগরিকদের বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নেবার ব্যাপারে কোন আলােচনা হয়েছে কিনা। সে ব্যাপারে বঙ্গবন্ধুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন যে, সকল দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়েই আলােচনা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু আরাে বলেন যে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সহযােগিতা সম্প্রসারণের ব্যাপারে মিসর ও কুয়েতি নেতৃবৃন্দের সাথে তার আলােচনা অত্যন্ত সফল হয়েছে। মিসর সফরকালে কিসিঞ্জারের সাথে তার কোনাে বৈঠক হয়েছে কিনা সাংবাদিকরা জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু সরাসরি তা অস্বীকার করে বলেন, কিসিঞ্জার তার নিজস্ব সফরে মিসর যাচ্ছেন। আমিও আমার নিজস্ব সফরে মিসর যাই। সুতরাং সেখানে দেখা-সাক্ষাতের প্রশ্নই ওঠে না। আরেক প্রশ্নের উত্তরে বঙ্গবন্ধু আশা প্রকাশ করেন যে, মধ্যপ্রাচ্যে অদূর ভবিষ্যতে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে এবং বিশ্বের শান্তিকামী মানুষের চাপের ফলে মধ্যপ্রাচ্যে যারা সংঘাত সৃষ্টি করছে। তারা শান্তির পথে এগুবে।
মধ্যপ্রাচ্যে সফরকালে পর্যাপ্ত অর্থনৈতিক সাহায্যের আশ্বাস পাওয়া গেছে কিনা সাংবাদিকরা জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু বলেন, আমরা সাড়ে সাত কোটি মানুষের একটি আত্মমর্যাদাসম্পন্ন জাতি, আমি সেখানে ভিক্ষার জন্য যাইনি। তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস আমাদের এই প্রয়ােজনীয়তার সময়ে আমাদের বন্ধুরা সহযােগিতার হাত নিয়ে এগিয়ে আসবেন। বঙ্গবন্ধু সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন যে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহ বাংলাদেশের জনগণের মঙ্গলের ব্যাপারে অত্যন্ত আগ্রহী। এর আগে বঙ্গবন্ধু বিমান থেকে নেমে আসলে তাকে আন্তরিক অভ্যর্থনা জ্ঞাপন করা হয়। মন্ত্রিসভার সদস্য, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও কূটনৈতিক মিশনের প্রধানগণ বঙ্গবন্ধুকে স্বাগত জানান। সেনাবাহিনীর ৩টি সুসজ্জিত ইউনিট বঙ্গবন্ধুকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন।৪০
রেফারেন্স:
১৪ নভেম্বর ১৯৭৪, বাংলার বাণী
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত