বিশ্ব খাদ্য সম্মেলনে মার্কিন প্রস্তাবে তীব্র বিরােধিতা
রােম: জাতিসংঘ বিশ্ব খাদ্য সম্মেলনে বর্তমানে বিশ্ব খাদ্য পরিস্থিতি সমস্যা, কৃষি উন্নয়ন এবং খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির বিষয়সমূহ আলােচিত হয়েছে। বর্তমানে জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংস্থার উদ্যোগে রােমে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সাধারণ সম্পাদক তার রিপাের্ট পেশ করেছেন। রিপাের্ট পেয়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে সৃষ্ট বিভিন্ন দেশের দুর্ভিক্ষ ব্যবস্থাকে প্রতিরােধ করার ওপর গুরুত্ব আরােপ করা হয়। এতে বলা হয় পৌনঃপৌনিক দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়ার ফলে এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার এক বিপুল জনসমষ্টি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। বিতর্কে উন্নয়নশীল দেশসমূহের দুর্ভিক্ষ ব্যবস্থা প্রতিরােধের জন্য খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর জোর দেয়া হয়। একই সময়ে উন্নয়নশীল দেশসমূহে সহযােগিতা সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে পুঁজি বিনিয়ােগ এবং খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ভূমি চাষ ও সার উৎপাদনের ব্যাপারে বিভিন্নমুখী সমস্যা রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মি. হেনরি কিসিঞ্জার বিশ্বে খাদ্য মজুত ও তার ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা গঠনের পরিকল্পনা পেশ করেন। এ ব্যাপারে তেল উৎপাদনকারী দেশসমূহ প্রয়ােজনীয় অর্থ জোগাতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা মার্কিন নীতির সমালােচনা করেন। ব্রিটেন, ফ্রান্স, ইতালি এবং অন্যান্য দেশের কতিপয় প্রতিনিধি খাদ্যসংক্রান্ত কোন নতুন আন্তর্জাতিক সংস্থা গঠনে বিরােধিতা করেন। উন্নয়নশীল দেশসমূহের প্রতিনিধিবর্গ দৃঢ়তার সাথে বলেন যে, যুগ যুগ ধরে সাম্রাজ্যবাদ ও উপনিবেশবাদী চক্র তাদের যে বিপুল পরিমাণ জাতীয় সম্পদ হরণ করে নিয়েছে পুঁজিবাদী দেশসমূহকে অবশ্যই তার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সমাজতান্ত্রিক দেশসমূহের প্রতিনিধিরা সমসাময়িক কৃষি বিশেষ করে উন্নয়নশীল বিশ্বে কৃষি সমস্যা সংস্কার, কৃষি ও উৎপাদনে অন্যান্য সেক্টরের সাথে সম্পর্কের ওপর আলােচনা করেন।২৪
রেফারেন্স:
৯ নভেম্বর ১৯৭৪, বাংলার বাণী
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত