অবশেষে তাজউদ্দীন পদত্যাগ করলেন
ঢাকা: অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমেদ শনিবার মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন। সরকারিভাবে একথা ঘােষণা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সকালে জনাব তাজউদ্দীন আহমেদকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করার জন্য নির্দেশ দেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে রাষ্ট্রপতি জনাব মােহাম্মদ উল্লা জনাব তাজউদ্দীন আহমদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন। জাতির বৃহত্তর স্বার্থে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জনাব তাজউদ্দীন আহমেদকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দেন বলে ওয়াকেফহাল মহল থেকে জানা গেছে।
জনাব তাজউদ্দীন আহমেদ পদত্যাগের পর সরাসরি তার সরকারি বাসভবনে ফিরে আসেন, বিকালে সাংবাদিকদের সাথে তিনি ঘরােয়াভাবে আলাপ-আলােচনা করেন। জনাব তাজউদ্দীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। তিনি এই শতাব্দীর ৪০ দশক থেকে রাজনীতির সাথে জড়িত আছেন। ১৯৪০ সাল থেকেই তিনি নিখিল বঙ্গ মুসলিম ছাত্রলীগের অন্যতম ছাত্র নেতা ছিলেন। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। জনাব তাজউদ্দীন ৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের অন্যতম ছাত্রনেতা। ১৯৭১ সালে মুজিবনগরে যে অস্থায়ী বিপ্লবী সরকার গঠন করা হয়, জনাব তাজউদ্দীন ছিলেন তার প্রধান। মুজিবনগর গঠিত সরকার ও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় তিনি সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। দেশ শত্রুমুক্ত হবার পরও তিনি ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান থেকে মুক্তি পেয়ে ফিরে এলে জনাব তাজউদ্দীন অর্থ পরিকল্পনা ও পাট দফতরের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পদত্যাগ করার পূর্ব পর্যন্ত তিনি অর্থ এবং বন, মৎস্য ও পশুপালন দফতরের দায়িত্বে নিযুক্ত ছিলেন।৭৭
রেফারেন্স:
২৬ অক্টোবর ১৯৭৪, বাংলার বাণী
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত