সমাজতন্ত্রের নামে বাংলাদেশে যা চলছে তা দেখলে কার্ল মার্কসেরও কান্না পেত: তাজউদ্দীন আহমদ
ঢাকা: অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমদ বলেছেন আমাদের দেশে বর্তমানে যে ব্যবস্থা চলছে তা সমাজতন্ত্র নয়। এখানে যা চলছে তা দেখলে কার্ল মার্কসও কেঁদে দেবেন। তিনি বলেন, সমাজতন্ত্র আমাদের শাসনতান্ত্রিক দায়িত্ব। কিন্তু আমাদের পদক্ষেপ বাস্তবধর্মী হতে হবে। আমাদের লক্ষ্য ও আদর্শ সম্পর্কে কোনাে মতান্তর থাকতে পারে না।
জনাব তাজউদ্দীন আহমদ মিসরের সাবেক প্রেসিডেন্ট জামাল আবদেল নাসেরের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়ােজিত সেমিনারে সভাপতির এক ভাষণে উপরােক্ত মন্তব্য করেন। আফ্রো-এশীয় গণসংহতি পরিষদ এ সেমিনার আয়ােজন করেন।★অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ আরাে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দ্রব্যমূল্য অবশ্যই স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে হবে। তেলের দাম বাড়ানাের অজুহাতে আন্তর্জাতিক বাজারে জিনিসপত্রের দাম শতকরা আড়াই শত থেকে ৬শত ভাগ বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। অথচ তেলের দাম সে তুলনায় সামান্যই বাড়ানাে হয়েছে। অবশ্যই তার অর্থ এই নয় যে, তিনি তেলের মূল্য বৃদ্ধি সমর্থন করছেন। কিন্তু তেলের দাম মাত্র এক বছর পূর্বে বাড়ানাে হয়েছে। তাও ব্যারল আট ডলার হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু তেল কোম্পানিগুলাে এ তেল ব্যারল প্রতি ১৭ ডলার করে বিক্রি করছে। এছাড়া তেল কোম্পানিগুলাে গত ২৫ বছর ধরে ৪০ গ্যালনের প্রতি ব্যারল তেল আট আনা মূল্যে ক্রয় করেছে। এ দর পানির দরের চেয়েও কম। সৌদি আরবে পানির দাম তেলের চেয়ে বেশি। যারা তেল রপ্তানি করে তারা শিল্পোন্নত দেশ নয়। অথচ আজ তারা যে অর্থ উপার্জন করছে, তা অন্য জায়গায় খাটানাের ওপর জোর দেয়া হচ্ছে।_ কিন্তু উন্নত দেশগুলাে তাদের দ্রব্যাদি উচ্চ মূল্যে বিক্রি করে যুগ যুগ ধরে যে মুনাফা করেছে। তা অনুন্নত দেশ খাটানাের জন্য কিছুই হচ্ছে না। জনাব তাজউদ্দীন বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊধ্বর্গতি অবশ্যই রােধ করতে হবে। তা না হলে একটা অনাসৃষ্টি হতে যাচ্ছে। তাই আজ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ফ্রাঙ্কের মূল্য অবশ্যই স্থিতাবস্থায় রাখতে হবে।৬১
রেফারেন্স:
২২ অক্টোবর ১৯৭৪, বাংলার বাণী
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত