নােয়াখালীখালীতে লঙ্গরখানায় লুটপাটের হিড়িক, বুভুক্ষু মহিলাদের নির্যাতন
চৌমুহনী, নােয়াখালী: বর্তমানে সমগ্র নােয়াখালী জেলায় চরম খাদ্যাভাব বিরাজ করছে। অর্ধাহার অনাহারে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ শহরের দিকে পাড়ি জমাচ্ছে। শহরে ওদের খাদ্য জুটছে না। বাধ্য হয়ে গ্রহণ করছে ভিক্ষাবৃত্তি। ধাবিত হচ্ছে নানা অপরাধজনক কাজের দিকে।
জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে ভিক্ষুকের সংখ্যা বেড়ে গেছে। গ্রাম থেকে আগত মহিলা ভিক্ষুক। ও যুবতীরা ক্ষুধার তাড়নায় বাধ্য হয়ে তাদের শেষ সম্বল ইজ্জত বিক্রি করছে। দারিদ্র্যের নির্মম কশাঘাতে তাদেরকে এ ধরনের অপরাধমূলক কাজে লিপ্ত হতে বাধ্য করছে। খাদ্যসঙ্কট ও দুর্মূল্যের বাজারে পরিবার পরিজন নিয়ে মানুষ অনাহারে ধুকে ধুকে দিন গুনছে। ক্ষুধার জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে আত্মহত্যা করছে।
জেলার বিভিন্ন শহর, বন্দর, হাট, বাজারগুলােতে প্রায় ৫০ হাজার ক্ষুধার্ত মানুষের ভিড় জমেছে। খাদ্যের দাবীতে তারা প্রতিদিন মিছিল বের করছে। এই ভাসমান ৫০ হাজার মানুষ রাস্তার পাশে, গাছতলায়, স্কুল কলেজের বারান্দায়, অফিস আদালতের আঙ্গিনায়, দোকানপাটের সামনে আশ্রয় নিয়েছে। ইতােপূর্বে জেলার বিভিন্ন এলাকায় ১৫টি লঙ্গরখানা খােলা হয়েছে। আর তা থেকে বুভুক্ষুদের মাঝে অতি সামান্য পরিমাণ রুটি বিতরণ করা হচ্ছে। ঐ সকল লঙ্গরখানা তেলেসমাতি কাজ কারবার চলছে এবং গম রুটি আত্মসাতের হিড়িক পড়ে গেছে। সেখান থেকেও কঙ্কালসার বুভুক্ষু নারীদের ওপর দৈহিক নির্যাতন চালানাের দুঃখজনক খবর আসছে। সারাদিন মিছিলে দাঁড়িয়ে এসব বুভুক্ষু মানুষ দু’একটার বেশি রুটি পাচ্ছে না। খাদ্য না পেয়ে ওরা ছেড়ে যাবে লঙ্গরখানা।৫০
রেফারেন্স:
১৬ অক্টোবর ১৯৭৪, বাংলার বাণী
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত