You dont have javascript enabled! Please enable it!

সফর সম্পূর্ণ সাফল্যমণ্ডিত হয়েছে: ঢাকা বিমান বন্দরে বঙ্গবন্ধু

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সােমবার ঢাকায় বলেন যে, তার পক্ষকাল ব্যাপী জাতিসংঘ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরাক সফর সম্পূর্ণ সফল হয়েছে। তিনি বলেন, তার বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সাথে আলাপ হয়েছে। তারা সকলেই বাংলাদেশের প্রতি সহানুভূতিশীল এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু সােমবার সকালে বাগদাদ থেকে ঢাকা প্রত্যাবর্তনের পর বিমান বন্দরে ভি আই পি লাউঞ্জে সাংবাদিকদের নিকট তার সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করছিলেন। তিনি বলেন, সফরকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ড, ইরাকী প্রেসিডেন্ট জনাব হাসান আল বকর এবং রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব কুর্ট ওয়াল্ডহেইম এর সাথে দ্বিপাক্ষিক এবং আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে আন্তরিক এবং সফল আলােচনা হয়েছে। জাতিসংঘ সফর প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিশ্ব সংস্থায় তার ন্যায্য আসন লাভ করেছে। এটা অত্যন্ত সন্তোষের বিষয়।

তার জাতিসংঘ সফরকালে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিবর্গ বাংলাদেশ সম্পর্কে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে বঙ্গবন্ধু তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি জানান, জাতিসংঘের মহাসচিব কুর্ট ওয়াল্ডহেইমের সাথে বাংলাদেশের বর্তমান খাদ্য সঙ্কটসহ বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে সমঝােতাপূর্ণ আলােচনা হয়েছে। মি. ওয়াল্ডহেইম বাংলাদেশের এই সঙ্কট কাটিয়ে ওঠার ব্যাপারে সম্ভাব্য সকল প্রকার সহযােগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু বলেন, তার এই সফর অনেকাংশেই সফল হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার এ মাসের শেষের দিকে বাংলাদেশ সফরে আসছেন বলে প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান। তিনি বলেন, ড. কিসিঞ্জার তার সাথে আলাপ-আলােচনার জন্য নিউইয়র্ক এবং ওয়াশিংটনে দুইবার সাক্ষাৎ করেছেন। মার্কিন নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশে সম্ভাব্য সকল প্রকার সাহায্যসহ মােট আড়াই লক্ষ টন খাদ্যশস্য প্রদানের অঙ্গীকার করেছেন। এর মধ্যে দেড় লক্ষ টনের ব্যাপারে ইতােমধ্যেই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ইরাক সফর প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু বলেন, ইরাকী নেতৃবৃন্দের সাথে অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে তার আলাপ আলােচনা হয়েছে। ইরাকী বিপ্লবী পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব হাসান আল বকর এবং সহ সভাপতি জনাব সাদ্দাম হােসেনের সাথে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে মতামত বিনিময় হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান। বঙ্গবন্ধু বলেন, এ সময় ইরাক ও বাংলাদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সহযােগিতার ব্যাপারে দুটি চুক্তি হয়েছে। তিনি বলেন, ইরাক বাংলাদেশকে সাহায্য করার ব্যাপারে অত্যন্ত আগ্রহী। বঙ্গবন্ধু আরও জনান ইরাকের সরকার ও জনগণ বাংলাদেশের জনগণের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন। প্রসঙ্গত বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনর্বাসনে ইরাকী সাহায্যের কথা উল্লেখ করেন।২২

রেফারেন্স:

৭ অক্টোবর ১৯৭৪, বাংলার বাণী
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!