২০ মে বৃহস্পতিবার ১৯৭১
ঢাকায় সামরিক কর্তৃপক্ষ ঘােষণা করেন নগরীর বিভিন্ন এলাকায় হাত বােমা নিক্ষেপের ঘটনার সাথে জড়িত ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সন্ত্রাস সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ভবিষ্যতে যারা এ কাজ করবে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে। অপর এক ঘােষণায় বলা হয় : টাঙ্গাইলের সাবেক প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য এম. খােদাবক্স মােক্তার ও কেরানীগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা আমজাদ হােসেন আওয়ামী লীগের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করেছেন। | সেনা কর্তৃপক্ষ পয়লা জুলাইয়ের মধ্যে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কাজে যােগদান এবং ২ আগস্ট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলাের ক্লাস শুরু করার নির্দেশ দেন। এডভােকেট আফতাবউদ্দিন আহমদ ও প্রাদেশিক পরিষদের সাবেক ডেপুটি স্পিকার এডভােকেট আসগর হােসেনকে আহ্বায়ক করে শান্তি কমিটির যথাক্রমে মানিকগঞ্জ মহকুমা ও ধামরাই থানা কমিটি গঠিত হয়। স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ, এইচ, এম, কামরুজ্জামান ইউ এন আই-এর সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমরা ধর্মের বিরুদ্ধে নয় দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি। আমাদের স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক হিসেবে বেঁচে থাকার আইনগত অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে । তিনি বলেন, ইসলামের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম নয়। আমরা ইসলামসহ সকল ধর্মের মূল্যবােধ ও শিক্ষাকে রক্ষা ও সংরক্ষণ করব। আমরা শােষণমুক্ত, সুষম ও শ্রেণীহীন সমাজব্যবস্থা কায়েমে বদ্ধপরিকর, যেখানে ধর্ম-বর্ণ-গৌত্র নির্বিশেষে মানুষে মানুষে কোনাে ভেদাভেদ থাকবে না। যারা বাংলাদেশকে নিজেদের মাতৃভূমি হিসেবে স্বীকার করেন এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে, তারা যে ধর্মাবলম্বীই হােন না কেন তারা আমাদের ভাই । যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরােধিতা করে বিশ্বাসঘাতক হিসেবে দখলদার বাহিনীর সহযােগিতা করছে, তারা যে ধর্মেরই হােক, আমাদের শত্রু, বাংলাদেশের ।
সূত্র : দিনপঞ্জি একাত্তর – মাহমুদ হাসান