You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.06.24 | ২৪ জুন বৃহস্পতিবার ১৯৭১ - সংগ্রামের নোটবুক

২৪ জুন বৃহস্পতিবার ১৯৭১

সােভিয়েত প্রধানমন্ত্রী আলেক্সি কোসিগিন ও ইরানের শাহানশাহ রেজা শাহ্ পাহলভী বাংলাদেশ প্রসঙ্গে নিজ নিজ সরকারের অভিমত ব্যক্ত করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মিসেস ইন্দিরা গান্ধীর কাছে বার্তা পাঠান। পাকিস্তান বাংলাদেশ পরিস্থিতি সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সােভিয়েত ইউনিয়ন ও চীনসহ বিশ্বনেতৃবৃন্দের কাছে জরুরি বার্তা পাঠায়। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের শরণার্থীদের সাহায্যের জন্য ভারতকে অতিরিক্ত ৭ কোটি ডলার মঞ্জুরি প্রদানের কথা ঘােষণা করে। পাকিস্তান মুসলিম লীগের সভাপতি খান আবদুল কাইউম খান লাহােরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ক্ষমতা হস্তান্তরের কোনাে প্রশ্নই ওঠে না। জামায়াতে ইসলামীর প্রাদেশিক নেতা আব্বাস আলী খানের নেতৃত্বে জয়পুরহাট মহকুমা শান্তি কমিটি গঠন করা হয়। মুক্তিবাহিনীর সাথে কুষ্টিয়া, খুলনা, যশাের, সিলেট ও কুমিল্লা সেক্টরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গােলাগুলি বিনিময় হয়।  বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের কাছে পাঠানাে এক তারবার্তায় পাকিস্তানে নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র সরবরাহের সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি পাকিস্তানকে অস্ত্র সরবরাহ করার জন্য প্রেসিডেন্ট নিক্সনের প্রতি আহ্বান জানান। সৈয়দ নজরুল তারবার্তায় বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাংলাদেশের জনগণের ওপর তাদের অস্ত্র ব্যবহার করছে। সরবরাহকৃত অস্ত্র এখানে গণহত্যার কাজেই ব্যবহৃত হবে।  মেক্সিকোর প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ফোর্ট জিল, বিশ্বশান্তি ও মানবাধিকার পরিষদের মহাসচিব ড. রিচার্ডো মলিনা মার্টি পৃথক বিবৃতিতে বাংলাদেশে পাকবাহিনীর গণহত্যা বন্ধের উদ্দেশ্যে পাকিস্তান সরকারের ওপর চাপ প্রয়ােগের জন্য বিশ্বশক্তির প্রতি আহ্বান জানান।  দামেস্কে (সিরিয়া) অনুষ্ঠিত আফ্রো-এশীয় গণসংহতি পরিষদের দশম নির্বাহী কমিটির বৈঠকে বাংলাদেশের জনগণের মুক্তিসংগ্রামের প্রতি সংহতি প্রকাশ করা। হয়। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরদার শরণ সিং ভারতীয় পার্লামেন্টে বলেন, বাংলাদেশের নিরস্ত্র ও অসহায় জনগণের ওপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নিপীড়নের ফলে সেখানে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তাতে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে নতুন করে অস্ত্র সরবরাহ করলে কেবল বাংলাদেশের অবস্থার অবনতি ঘটবে। —সেই সাথে গােটা উপমহাদেশের তথা এ অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তা হুমকির মুখােমুখি হবে।

সূত্র : দিনপঞ্জি একাত্তর – মাহমুদ হাসান