২৪ নভেম্বর বুধবার ১৯৭১
রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তান সরকারের একজন মুখপাত্র বলেন, উপমহাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিকীকরণে পাকিস্তান যে-কোনাে বৃহৎ শক্তির উদ্যোগকে স্বাগত জানাবে। উপমহাদেশের বর্তমান সঙ্কট নিরসনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অথবা সােভিয়েত ইউনিয়ন যদি কোনাে দ্বিপক্ষীয় উদ্যোগ গ্রহণ করে তাহলে তাকে স্বাগত জানানাে হবে। মুক্তিবাহিনী সমস্ত সীমান্তে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ওপর আক্রমণ চালায়। পাকিস্তানের একজন সামরিক মুখপাত্র বলেন, সেনাবাহিনী শক্রর (মুক্তিবাহিনী) আক্রমণ প্রচেষ্টা স্তব্ধ করে দিয়েছে। কিশােরগঞ্জ মহকুমা এখনও পাকিস্তানের দখলে রয়েছে। ভারতীয়রা (মুক্তিযােদ্ধা) নােয়াখালীর লক্ষ্মীপুর ও সিলেটের সীমান্ত ফাড়ি আক্রমণ করেছিল।
ঢাকায় নিপ্রদীপ মহড়া। সন্ধ্যায় বিনা ঘােষণায় সান্ধ্য আইন জারি করা হয়। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অফিসার ও জোয়ানদের অবসরকালীন ছুটি বাতিল, কর্মস্থলে রিপাের্ট করার নির্দেশ। ঢাকায় মুক্তিযােদ্ধাদের সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ ও গ্রেফতারে সহযােগিতার জন্য বিশেষ পুরস্কার ঘােষণা। | ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এক ঘােষণায় বলা হয়, প্রেসিডেন্ট নিক্সন পাকিস্তান ও ভারতকে যুদ্ধ থেকে বিরত থাকার অনুরােধ জানিয়েছেন। পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য কামনা করেছেন। উপমহাদেশে একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ এড়ানাের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও সােভিয়েত ইউনিয়ন একটি সাধারণ সমঝােতায় পৌঁছানাের প্রয়াস চালাচ্ছে। এ লক্ষ্যে উভয় রাষ্ট্র যােগাযােগ রক্ষা করে চলেছে। সিনেটররা পূর্ব পাকিস্তান সীমান্তে মুক্তিবাহিনী ও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর যুদ্ধের কথা উল্লেখ করে ভারত-পাকিস্তান সঙ্কটের প্রেক্ষিতে অবিলম্বে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক ডাকার আহ্বান জানিয়েছেন। ফ্রান্স, ব্রিটেন ও পশ্চিম জার্মানি ভারত-পাকিস্তান সংকটে উদ্বেগ প্রকাশ করে উভয় রাষ্ট্রকে সংযত আচরণ করার জন্য আহ্বান জানায়। | ভারতের প্রধানমন্ত্রী মিসেস ইন্দিরা গান্ধী পার্লামেন্টে বলেন, ভারত সরকার জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘােষণা করবে না। তিনি পাকিস্তানের সাথে ভারতের অঘােষিত যুদ্ধ সম্পর্কিত পাকিস্তানের অভিযােগকে সম্পূর্ণ বানােয়াট বলে অভিহিত করেন। ঢাকার গভর্নর ডা, এ, এম, মালিক রাওয়ালপিন্ডিতে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সাথে সাক্ষাৎ করেন।
সূত্র : দিনপঞ্জি একাত্তর – মাহমুদ হাসান