You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.11.09 | ৯ নভেম্বর মঙ্গলবার ১৯৭১ দিনপঞ্জি - সংগ্রামের নোটবুক

৯ নভেম্বর মঙ্গলবার ১৯৭১

পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান সিবিএস টেলিভিশনের সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, যদি ভারত পাকিস্তান আক্রমণ করে চীন অবশ্যই হস্তক্ষেপ করবে। প্যারিসে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও ফরাসি প্রধানমন্ত্রী জ্যাকুইস শবন দেণমাসের মধ্যে একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে শ্রীমতী গান্ধী ফরাসি | প্রেসিডেন্ট জর্জ পম্পিদুর সাথে মতবিনিময় করেন। প্যারিসে মিসেস গান্ধী সাংবাদিকদের বলেন, ভারতের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার প্রতি যে হুমকি দেখা দিয়েছে তার নিরসন ঘটাতে হলে অবশ্যই বাংলাদেশ সমস্যার একটি রাজনৈতিক সমাধান বের করতে হবে এবং এই সমাধান কার্যকর করতে হলে তা সেখানকার জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে অবশ্যই গ্রহণযােগ্য হতে হবে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সাথে এক সাক্ষাৎকারে ভারতের সর্বোদয় নেতা জয়প্রকাশ নারায়ণ বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সরকারকে এখন ভারতের রাজনৈতিক স্বীকৃতিদানের সময় এসেছে। তিনি বলেন, আমরা যখন বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনকে নৈতিক ও বৈষয়িকভাবে সাহায্য করছি তখন ভারত সরকারের উচিত তাদের স্বাধীনতা অর্জনে মুক্তিযােদ্ধা ও বাংলাদেশ সরকারকে সর্বতােভাবে সাহায্য করা। পাকিস্তান সরকার ঘােষণা করেন, পূর্ব পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ৭৮টি শূন্য আসনের উপনির্বাচনে ৫৮ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এদের  মধ্যে ১৫ জন জামায়াত, ১২ জন পিডিপি, ২০ জন মুসলিম লীগ, ৬ জন নেজামে ইসলামী ও ৫ জন পিপিপি’র প্রার্থী।

ওয়াশিংটনে মার্কিন সরকারের একজন মুখপাত্র ঘােষণা করেন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের ৩৬ লাখ ডলার মূল্যের সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানির লাইসেন্স বাতিল করে দিয়েছে।  ঢাকায় বিশেষ সামরিক আদালত এক রায়ে ১৩ জন সিএসপি, ৪২ জন ইপিসিএস অফিসার ও ৪ জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের প্রত্যেককে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডসহ অর্ধেক সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন। সাজাপ্রাপ্ত অধ্যাপকরা হচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মােজাফফর আহমদ চৌধুরী (রাষ্ট্রবিজ্ঞান), আবদুর রাজ্জাক (রাষ্ট্রবিজ্ঞান), খান সারওয়ার মুরশিদ (ইংরেজি) ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাযহারুল ইসলাম (বাংলা)।। রাওয়ালপিন্ডিতে ইয়াহিয়া-ভুট্টো বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যায় কমলাপুর-গেণ্ডারিয়া রেল স্টেশনের মাঝে গেরিলাদের পাতা মাইন বিস্ফোরণে রেল ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হলে রেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাতে গেরিলারা গেণ্ডারিয়া রেল স্টেশনে হামলা চালায়। বােমা বিস্ফোরণে নবীগঞ্জ বিদ্যুৎ সাব-স্টেশন বিধ্বস্ত হয়। সকালে নগরীর ভিকারুননিসা নূন গার্লস স্কুল প্রাঙ্গণে বােমা বিস্ফোরণ ঘটে। কুমিল্লা, বরিশাল ও ময়মনসিংহে ইপিসিএএফ ও মুক্তিবাহিনী গুলি বিনিময়।

সূত্র : দিনপঞ্জি একাত্তর – মাহমুদ হাসান