৮ নভেম্বর সােমবার ১৯৭১
মার্কিন সাময়িকী ‘নিউজ উইক’-এর সাথে এক সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান বলেন, ভারত বিদ্রোহীদের পূর্ব পাকিস্তানে অনুপ্রবেশে সাহায্য করে চলেছে। ভারতীয় ট্রেনিংপ্রাপ্ত বিদ্রোহীরা পূর্ব পাকিস্তানে নাশকতামূলক কাজে লিপ্ত । আমি এ ব্যাপারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। আমার সৈন্যরাও অধৈর্য হয়ে পড়েছে। ভারত যদি বাংলাদেশের ধুয়া তুলে পূর্ব পাকিস্তান দখলের চেষ্টা করে তাহলে যুদ্ধ বাধবেই। আমি আপনাদের নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, সে যুদ্ধ কেবল পূর্বাঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকবে না এবং আমি বিশ্বাস করি, সে যুদ্ধে নিশ্চয়ই আমি পরাজিত হব না। যুদ্ধ শুরু হলে সােভিয়েত ইউনিয়ন এ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে কি না তা এ মুহূর্তে বলা কঠিন, তবে ভারত-সােভিয়েত প্রতিরক্ষা চুক্তি রয়েছে। অবশ্য চীনের কথা জানি, চীন কোনাে অবস্থায় ভারতের পাকিস্তান আক্রমণ সহ্য করবে না। যুদ্ধ বাধলে চীন আমাকে অস্ত্র দেবে সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত।
প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খান পাকিস্তান সরকারের অর্থনৈতিক সমন্বয় ও বৈদেশিক সাহায্য বিভাগের যুগ্মসচিব এম. এ. রশীদ, পরিকল্পনা বিভাগের আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক শাখার প্রধান মােহাম্মদ আবদুস সাত্তার, নয়াদিল্লিস্থ পাকিস্তানি দূতাবাসের সহকারী প্রেস এটাচি আমজাদুল হক ও কলকতাস্থ পাকিস্তান ডেপুটি হাইকমিশনের সহকারী প্রেস এটাচি মাকসুদ আলীকে বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য ঘােষণার কারণে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেন। চীন থেকে ফিরে জুলফিকার আলী ভুট্টো প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সাথে সাক্ষাৎ করেন। ঢাকায় হাবিব ব্যাংক রামপুরা শাখা প্রহরারত পুলিশের সঙ্গে গেরিলাদের গুলি | বিনিময়কালে একজন গেরিলা নিহত হন। | নােয়াখালী সীমান্তে দিনব্যাপী মুক্তিবাহিনীর সাথে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ চলে। কলাভবন, ঢাকা কলেজ ও বাওয়ানী একাডেমিতে বােমা বিস্ফোরণে অধ্যাপকসহ ২৫ জন ছাত্রছাত্রী আহত হয়।
সূত্র : দিনপঞ্জি একাত্তর – মাহমুদ হাসান