You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.11.02 | ২ নভেম্বর মঙ্গলবার ১৯৭১ - সংগ্রামের নোটবুক

২ নভেম্বর মঙ্গলবার ১৯৭১

প্রেসিডেন্ট ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক তিন জন সাবেক কেন্দ্রীয় সচিবসহ। ৩২ জন উচ্চপদস্থ বাঙালি সরকারি অফিসারের খেতাব প্রত্যাহার করেন। লন্ডনে ভারতীয়দের এক সমাবেশে শ্ৰীমতী ইন্দিরা গান্ধী বলেন, তিনি ব্রিটেনকে তার প্রভাব বিস্তার করে বাংলাদেশ প্রশ্নের একটি রাজনৈতিক মীমাংসা ও উদ্বাস্তু সমস্যার একটি সুষ্ঠু সমাধানের জন্য পাকিস্তানের ওপর চাপ সৃষ্টির অনুরােধ জানিয়েছেন। যুদ্ধ বাধুক ভারত তা কখনাে চায় না। কিন্তু এ জন্য ভারত তার জাতীয় স্বার্থকে কখনাে ক্ষুন্ন হতে দিতে পারে না। তিনি বলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ নেতৃবৃন্দের সাথে আলােচনার মাধ্যমে সঙ্কটের দ্রুত একটি নিষ্পত্তি  করতে হবে। সীমান্ত পরিস্থিতি দেখে মনে হতে পারে বাংলাদেশ থেকে দলে দলে লােক আসার ফলেই এটা হয়েছে কিন্তু বাংলাদেশ সমস্যা এর চেয়েও জটিল। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান নিউইয়র্ক টাইমস-এর সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, জাতি চাইলে বেআইনি আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির প্রশ্নটি তিনি বিবেচনা করে দেখতে পারেন। তিনি বলেন, বর্তমানের বিস্ফোরণােন্মুখ পরিস্থিতিকে তিনি আর বিস্তৃত করতে চান না, তবে ভারত যদি পাকিস্তানের এলাকা দখলে দুষ্কৃতিকারীদের (মুক্তিযােদ্ধা) অস্ত্রশস্ত্র ও মদদদান অব্যাহত রাখে এবং ক্রীড়নক বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায় তবে যুদ্ধ বাধবে। সেক্ষেত্রে চীন পাকিস্তানকে প্রয়ােজনীয় অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ করবে। পাকিস্তানের অকৃত্রিম বন্ধু চীন পাকিস্তানের ওপর কোনাে বৈদেশিক আক্রমণ সহ্য করবে না। জেনারেল ইয়াহিয়া খান বলেন, একটা খেয়ালের বশে আমি রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে বিচারাধীন বাঙালি নেতাকে ছেড়ে দিতে পারি না। তবে শেখ মুজিব যদি এখন পূর্ব পাকিস্তানে ফিরে যান সেখানে তার নিজের লােকেরাই তাকে হত্যা করবে।

সূত্র : দিনপঞ্জি একাত্তর – মাহমুদ হাসান