নীলামের সম্পত্তি কিনছে কারা | জয়বাংলা | ৬ আগস্ট ১৯৭১
পাকিস্তানের জঙ্গী সরকার বাংলা দেশের প্রধান মন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমদ, জাতীয় পরিষদ সদস্য আবদুল মান্নান এবং “দি পিপল’ পত্রিকার সম্পাদক জনাব আবিদুর রহমানের স্থাবর ও অস্তাবর সম্পত্তি | নিলামে বিক্রী করেছেন। পাকিস্তানের জঙ্গী সরকার মনে হয় এদের গ্রেপ্তার করতে না পেরে কোন এক বিশেষ জন্তুর মতো একে | বারে পাগল হয়ে গেছে। ভাবটা এই “তােদের না পাই, কিন্তু তাদের ঘরবাড়ী জমিজমা তাে আছে। তারা তাে পালিয়ে যেতে পারবেনা। বাংলাদেশের দখলীকৃত এলাকায় গভর্নর টিক্কা খানকে আমাদের জিজ্ঞাসা-এই সব সম্পত্তি কে কিনছে এবং কার এমন বুকের পাটা?
বিশ্ববাসীর কাছে আজ এটা অজানা নয় যে পঁচিশে মার্চের পর গত চার মাসের মধ্যে পট-পরিবর্তন। হয়েছে হানাদার পাক দস্যুরা আজ মুক্তিবাহিনীর পশু আক্রমণের সামনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। আজ বাংলাদেশের বহু এলাকায় মুক্তিবাহিনীর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। এই অবস্থায় এমন কোন বাপের ব্যাটা রয়েছে যে সাহস করে এই সব স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি কিনবে। | জঙ্গী সরকার নিলামের কথা বলে যতই ধােকা দেয়ার চেস্টা করুক না কেন আমরা ভালােভাবেই জানি। যে ভীতসন্ত্রস্থ অবাঙ্গিলীরা জেনেশুনে মরণকঁদে পা দেবেনা। আর বাঙালীদের তাে কোন প্রশ্ন উঠেই না। তবুও একটা কথা আমরা না বলে পারিনাম যে “অপরিণামদর্শী কোন সাহসী (৫) ব্যক্তি যদি নীলামের সম্পত্তি ক্রয় করে তা হলে তার পরিবার পরিজনদের প্রতি আমাদের সমবেদনা জানানাে ছাড়া আর কিছুই করার থাকবে না। কারণ? মুক্তিবাহিনী তাে আশেপাশেই আছে। বাসায় পেীছুনাের আগেই সেই হতভাগ্যের লাশ পথেই গড়াগড়ি যাবে।” | তাই অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করছেন যে, এই সব সম্পত্তি জঙ্গীশাহী নিজেরাই নিলাম করে নিজেরাই কিনছে। এই তাে চান্স তাদের কিছু বিষয় সম্পত্তি হস্তগত করার। | ‘সেই পথে ধরে’ মানে আইয়ুব খান তাে এ ব্যাপারে পথ প্রদর্শক, সুতরাং টিক্কার ও যে এই ভীমরতি হবে এতে কোন সন্দেহ নেই, কিন্তু কথা হচ্ছে, টিক্কাখান সাহেব কি হবে এতাে লােভের পরিচয় দিয়ে? বাংলাদেশ স্বাধীন হবেই এবং সেদিন যদি জনগণ আপনাকে পায় তাহলে আপনি সেই কাবাবে পরিণত হবেন যার সাথে আপনার নামের মিল রয়েছে।
জয়বাংলা (১)১:১৩ ৬ আগস্ট ১৯৭১