এটাই কি ইয়াহিয়া খানদের ইসলাম? | জয়বাংলা | ১৮ জুন ১৯৭১
এটাই কি ইয়াহিয়া খানদের ইসলাম? অতি লােভে তাঁতী নষ্ট’ বলে একটা কথা আছে। পশ্চিম পাকিস্তানের একটা বিশেষ এলাকার পুঁজিপতি ও সমর নায়কদের অতি লােভই শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের অপমৃত্যুর কারণ হলাে। কেননা, উক্ত অঞ্চলের পুঁজিপতি ও সমর নায়করা পাকিস্তানের জন্মাবধি দেশের সমস্ত ধন-সম্পদ, ব্যবসা-বানিজ্য, চাকরী বারী সবকিছু কুক্ষগত করার প্রয়াস চালিয়ে যেতে লাগলাে। পাকিস্তানের বেশীরভাগ জনসংখ্যা পূর্ব পাকিস্তানে
দাঁড়াবে তা তারা আগে বুঝতে পারে নাই। বস্তুতঃ পশ্চিম পাকস্তিানের যে পুঁজিবাদী শ্রেণী বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জঙ্গী চক্রের যুদ্ধ ঘােষণায় উৎফুল্ল হয়ে বগল বাজাতে শুরু করে ছিল তাদেরকেই আজ আর্ত চীকার করতে শােনা যাচ্ছে।
প্রকাশ, বাংলাদেশ থেকে খাজনা ট্যাক্স আদায় করতে না পারায় অথবা বাংলাদেশের পাট বন্ধক রেখে বিদেশ থেকে ঋণ আনার সুযােগ না থাকায় ইয়াহিয়া খানের সরকার আজ মহা আর্থিক সংকটে পতিত হয়েছে। তাই উপায়ন্তর না দেখে তারা পশ্চিম পাকিস্তানের শিল্পপতিদের উপর যুদ্ধের চাদা ধরেছ। এ চাঁদার সর্বনিম্ন পরিমাণ দশ কোটি টাকা। পশ্চিম পাকিস্তানের শিল্পপতিদের কেউ কেউ বিশেষ করে করাচীর শিল্পপতিগণ এটাকে পাইকারী জমিরানা’ হিসাবে অভিহিত করে সরকারের কাছে আপত্তি জানিয়েছেন। জবাবে তাদের স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছে যে পশ্চিম পাকিস্তানী পুঁজিপতিদের স্বার্থেই ইয়াহিয়া চক্রকে বাংলাদেশে যুদ্ধ চালাতে হচ্ছে। সুতরাং, ইচ্ছাই হােক আর অনিচ্ছাই হােক তাদেরকে নির্দিষ্ট অঙ্কের চাঁদা দিতে হবেই। করাচীর এইচ, এম সিঙ্ক মিলের উঁদি ধরা হয়েছে ২৫ লাখ টাকা। অথচ তাদের মােট সম্পত্তিরই পরিমাণই নাকি এর দ্বিগুণের বেশী হবে না। তাই তারা তাদের চাঁদার অঙ্কটা হ্রাস করার আবেদন জানায়। কিন্তু তা সামরিক কর্তৃপক্ষ সরাসরি প্রত্যাখান করে।
জয়বাংলা (১) ১ ৬ ১৮ জুন ১৯৭১