You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.08.05 | ৫ আগস্ট বৃহস্পতিবার ১৯৭১ - সংগ্রামের নোটবুক

৫ আগস্ট বৃহস্পতিবার ১৯৭১

মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ পাকিস্তানে সামরিক সাহায্য প্রদান বন্ধ সংক্রান্ত প্রস্তাব। পাস করায় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়।  মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে পাকিস্তানে সামরিক ও অর্থনৈতিক সাহায্য স্থগিতের একটি বৈদেশিক বিল পাস হয়। | মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী টুঙ্কু আব্দুর রহমান বাংলাদেশ বিষয়ে পাকিস্তানের সঙ্কট সম্পর্কে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী শরণ সিংয়ের সাথে এক বৈঠকে মিলিত হন। | পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশ সঙ্কট সম্পর্কে এক শ্বেতপত্র প্রকাশ করে। এ শ্বেতপত্রে বলা হয় পূর্ব পাকিস্তানে আওয়ামী লীগের ২৫ দিনের অসহযােগ আন্দোলনের ফলে গুরুতরভাবে বিনষ্ট সরকারি কর্তৃত্ব পুনরুদ্ধারে সামরিক বাহিনীকে আদেশ দেওয়া হয়েছিল। এতে আরও বলা হয় আওয়ামী লীগ ভারতীয়দের যােগসাজশে প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের অনুকূলে দেওয়া নির্বাচকমণ্ডলীর রায়কে বিচ্ছিন্নতার প্রচেষ্টায় সম্প্রসারিত করার পরিকল্পনা করেছিল। সাধারণ নির্বাচনের পর শেখ মুজিবুর রহমান ফেডারেল ধরনের শাসনতন্ত্র প্রণয়ন সম্পর্কে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে পৌঁছানাের ব্যাপারে বাধা সৃষ্টি করেছেন। তিনি এ সময় অচলাবস্থার সৃষ্টি করে সরকারের কর্তৃত্ব অস্বীকার করতে শুরু করেন এবং শেষ পর্যায়ে কনফেডারেশন গঠন ও অবিলম্বে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলেন।

শ্বেতপত্রে বলা হয় : ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট, ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস এবং আওয়ামী লীগের কর্মী বাহিনীর বিদ্রোহীরা সংগঠিত হয়ে সন্ত্রাসবাদী কায়দায় পাকিস্তানিদের নিধন করে। সশস্ত্র ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীদের সক্রিয় সাহায্যে আওয়ামী লীগ ২৬ মার্চ ভােরে সশস্ত্র বিদ্রোহের পরিকল্পনা করে। ইতােমধ্যে তারা প্রদেশের প্রতিটি শহরে আক্রমণাত্মক তৎপরতা শুরু করে। সর্বশেষে জিরাে আওয়ারের চূড়ান্ত প্রস্তুতি হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমান সাবেক কর্নেল এম, এ. জি, ওসমানীকে বিদ্রোহী বাহিনীর অধিনায়ক নির্বাচিত করেন। মেজর জেনারেল (অব.) মজিদ ও লে. কমান্ডার (অব.) মােয়াজ্জেমকে প্রাক্তন সৈনিকদের সমর্থন আদায়ের দায়িত্ব প্রদান করেন। তাদের পরিকল্পনা ছিল বিমান বা সমুদ্র পথে পাকবাহিনীর অবতরণ বন্ধ করার জন্য ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিকরা ঢাকা ও চট্টগ্রাম দখল করে নেবে। ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা আওয়ামী লীগের সশস্ত্র কর্মী বাহিনীর সহযােগিতায় ক্যান্টনমেন্টসমূহ দখল করবে। প্রথম সাফল্যের পর ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসবে। কিন্তু ২৫-২৬ মার্চ আঘাত হানার নির্ধারিত সময়ের কয়েক ঘণ্টা আগেই পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পদক্ষেপ গ্রহণ করে বিচ্ছিন্নতাবাদী উদ্যোগ ব্যর্থ করে দেয়।

সূত্র : দিনপঞ্জি একাত্তর – মাহমুদ হাসান