You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.07.21 | ২১ জুলাই বুধবার ১৯৭১ - সংগ্রামের নোটবুক

২১ জুলাই বুধবার ১৯৭১

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রী এম, মনসুর আলী স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। ভাষণে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সাহায্য সংস্থা পাকিস্তানকে অর্থনৈতিক সাহায্য বন্ধ করায় তাদের অভিনন্দন   জানান। তিনি বলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ আজ দুটি সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র রাষ্ট্র। সুতরাং বাংলাদেশের জন্য অর্থনৈতিক সাহায্য চাওয়ার কোনাে অধিকার। ইসলামাবাদ সরকারের নেই। তিনি বলেন, একমাত্র সাড়ে সাত কোটি বাঙালির নির্বাচিত প্রতিনিধিদের গঠিত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ সরকারের মাধ্যমেই বাংলাদেশে বৈদেশিক সাহায্য আসতে পারে। | অর্থমন্ত্রী বলেন, ইয়াহিয়া সরকারকে সাহায্য করার অর্থই হচ্ছে বাংলাদেশে গণহত্যায় সক্রিয় অংশ নেওয়া। তিনি বলেন, যেহেতু বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র সেহেতু ২৫ মার্চের পর থেকে বাংলাদেশের যাবতীয় খাজনা ও ট্যাক্স একমাত্র বাংলাদেশ সরকারেরই প্রাপ্য। কোনাে বিদেশি সরকারের এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার অধিকার নেই। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ফাইনানসিয়াল টাইমসের সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ভারত যদি পূর্ব পাকিস্তানের যে-কোনাে অংশে আক্রমণ চালায় বা এর যে-কোনাে অংশ দখল করতে চেষ্টা করে তাহলে পাকিস্তান। ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘােষণা করবে এবং সে পরিস্থিতিতে পাকিস্তান একা থাকবে। । চীন ও যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য বন্ধু রাষ্ট্র পাকিস্তানের পক্ষ অবলম্বন করবে। পাকিস্তান ডেমােক্রেটিক পার্টির নেতা নওয়াবজাদা নসরুল্লাহ খান বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের অধিকাংশ জাতীয় পরিষদ সদস্য দেশত্যাগ করায় এই পরিষদের গুরুত্ব ও প্রয়ােজন শেষ হয়ে গেছে। বর্তমানে জাতীয় পরিষদ আঞ্চলিক পরিষদে পরিণত হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শরণ সিং পার্লামেন্টে বলেন, পাকিস্তান যদি আক্রমণাত্মক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে তাহলে ভারত নিজেকে রক্ষার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। ইসলামি সেক্রেটারিয়েট মহাসচিব টুকু আবদুর রহমান ঢাকায় আসেন। কুমিল্লা শহরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অবস্থানের ওপর মুক্তিবাহিনীর গােলাবর্ষণে সাত জন হতাহত হয়। ঢাকায় গেরিলাদের গােপন আস্তানায় হামলা চালিয়ে সেনাবাহিনী ৬ জনকে গ্রেফতার করে এবং এন্টি পার্সোনাল মাইনসহ বিস্ফোরক দ্রব্য আটক করে।

সূত্র : দিনপঞ্জি একাত্তর – মাহমুদ হাসান