১১ জুলাই রবিবার ১৯৭১
বাংলাদেশ বাহিনীর সদর দফতরে সেনাবাহিনীর সেক্টর কমান্ডারদের আনুষ্ঠানিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রথম অধিবেশনে লে. কর্নেল এম. এ. রব ও গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ. কে. খন্দকারকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যথাক্রমে চিফ অব স্টাফ ও ডেপুটি চিফ অব স্টাফ নিযুক্ত করা হয়। সভায় সারা বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে বিভক্ত করা হয়। সে সব সেক্টরের বিবরণ হচ্ছে নিমরূপ সেক্টর নম্বর-১: সেক্টর কমান্ডার ১. মেজর জিয়াউর রহমান পি এস সি-জুন ১৯৭১ পর্যন্ত । ২. ক্যাপ্টেন রফিক-জুলাই ১৯৭১ থেকে পরবর্তীকাল পর্যন্ত। সেক্টর নম্বর-২: সেক্টর কমান্ডার। ১. মেজর খালেদ মােশাররফ পি এস সি-১৯৭১ সালের অক্টোবর মাসের | তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত। ২. মেজর এটিএম হায়দার-১৯৭১ সালের অক্টোবর মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে পরবর্তীকাল পর্যন্ত। সেক্টর নম্বর-৩: সেক্টর কমান্ডার ১. মেজর কে এম সফিউল্লাহ পি এস সি-সেপ্টেম্বর ১৯৭১ পর্যন্ত । ২. ক্যাপ্টেন এ এন এম নূরুজ্জামান-অক্টোবর ১৯৭১ থেকে পরবর্তীকাল পর্যন্ত । সেক্টর নম্বর-৪ : সেক্টর কমান্ডার ১. মেজর সি, আর, দত্ত। সেক্টর নম্বর-৫: সেক্টর কমান্ডার ১, মেজর মীর শওকত আলী পিএসসি। সেক্টর নম্বর-৬ : সেক্টর কমান্ডার। ১. উইং কমান্ডার এম কে বাশার। সেক্টর নম্বর-৭ : সেক্টর কমান্ডার ১, মেজর নাজমুল হক-জুলাই ১৯৭১ পর্যন্ত। ২. মেজর কাজী নূরুজ্জামান, পিএসসি-আগস্ট ১৯৭১ থেকে পরবর্তীকাল পর্যন্ত ।
সেক্টর নম্বর-৮: সেক্টর কমান্ডার ১. মেজর আবু ওসমান চৌধুরী (আগস্ট ১৯৭১ পর্যন্ত) ২. মেজর আবুল মঞ্জুর, পিএসসি (সেপ্টেম্বর ১৯৭১ থেকে পরবর্তীকাল পর্যন্ত।) সেক্টর নম্বর-৯ : সেক্টর কমান্ডার ১. মেজর এম এ জলিল। সেক্টর নম্বর-১০ সেক্টরটিকে স্পেশাল নেভার কমান্ডাে অপারেশন এলাকা হিসাবে ঘােষণা করা হয়। সেক্টর নম্বর-১১: সেক্টর কমান্ডার ১. মেজর এম এ তাহের। (শেষ-আগস্ট থেকে নভেম্বর ১৯৭১ পর্যন্ত ।)। ২. উইং কমান্ডার হামিদুল্লাহ খান (নভেম্বর ১৯৭১ পরবর্তীকাল পর্যন্ত। পূর্ব পাকিস্তান রেডক্রসের চেয়ারম্যান বিচারপতি এ. কে. এম. নূরুল ইসলাম জেনেভা সফর শেষে ঢাকায় প্রত্যাবর্তন করেন। পশ্চিম পাকিস্তান পিপিপি-র সভাপতি নওয়াবজাদা নসরুল্লাহ খান লাহােরে এক বিবৃতিতে বলেন, একটি ইরানি দৈনিকের সাথে সাক্ষাৎকারে পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো বেআইনি ঘােষিত আওয়ামী লীগ ও তার নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে বর্তমান সরকারের একটি মীমাংসাভিত্তিক ফর্মুলার ব্যাপারে আলাপ-আলােচনা করা উচিত বলে যে পরামর্শ দিয়েছেন তা দুঃখজনক। জনাব খান বলেন, বেআইনি আওয়ামী লীগের সাথে পাকিস্তানের যে কেউই আলােচনা করতে যাবেন তিনিই জাতীয় স্বার্থবিরােধী কাজ করবেন। জনাব ভুট্টো সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সেনাবাহিনী পূর্ব পাকিস্তানের বর্তমান সমস্যা সমাধান করতে পারে না, সেখানে যথাশীঘ্র সম্ভব বেসামরিক শাসন কায়েম করা উচিত। নসরুল্লাহ খান ভুট্টোর এ মন্তব্যের সাথে দ্বিমত প্রকাশ করে বলেন, ভুট্টোর এ উক্তি পাকিস্তানের শত্রুদের মনােবলকে দৃঢ় করবে। | ড. কিসিঞ্জার চীন থেকে পাকিস্তান প্রত্যাবর্তন করেন এবং প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সাথে একান্ত বৈঠকে মিলিত হন। পরে তিনি প্যারিসের পথে। তেহরান রওয়ানা হন।
সূত্র : দিনপঞ্জি একাত্তর – মাহমুদ হাসান